ঢাকা , রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ , ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীদের দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন ৮ পরীক্ষককে আজীবন অব্যাহতি শিশু ও তরুণরা হয়ে উঠুক আগামী দিনের দেশপ্রেমিক-আইজিপি অন্তর্বর্তী সরকার মেরুদণ্ডহীন ও দুর্বল : নুর দগ্ধ আরও দুজনের মৃত্যু বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে ছাড়পত্র পেল দগ্ধ দুই শিক্ষার্থী শ্রীপুরে শ্রমিকদের ১০ দফা দাবিতে ২ ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ মানসিক আঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসার তদারকির জন্য কমিটি গঠন সাধারণ মানুষ জানেই না আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি কী : মির্জা ফখরুল সংস্কারে এগোলেও বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ কাটেনি চলতি সপ্তাহে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা শহর-গ্রামাঞ্চলে বন্যা বিপর্যস্ত জনজীবন আধিপত্যে রক্তাক্ত পাহাড় নারায়ণগঞ্জে বৈধ কারখানায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন শুধু অভিযোজন নয় দরকার বিশ্বব্যাপী নির্গমন হ্রাস-পরিবেশ উপদেষ্টা সংলাপের নামে নাটক করছেন প্রধান উপদেষ্টা- কাজী মামুন খুলনায় ৬০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের ঘোষণা ঢাকায় বসবাসরত সাংবাদিকদের মধ্যে বন্ডিং তৈরি করতে হবে মসজিদ নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত বাড়িঘরে ভাঙচুর-লুটপাট মাউশিতে বদলি বাণিজ্য ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে চাকরি কেলেঙ্কারি তদন্ত শুরু সেঁওতি বাগানে টিএসআই রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন

শহর-গ্রামাঞ্চলে বন্যা বিপর্যস্ত জনজীবন

  • আপলোড সময় : ২৭-০৭-২০২৫ ১২:৪১:৪৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০৭-২০২৫ ১২:৪১:৪৬ অপরাহ্ন
শহর-গ্রামাঞ্চলে বন্যা বিপর্যস্ত জনজীবন
* মেঘনার পানি বিপদসীমার ওপরে, উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত * নিম্নচাপের প্রভাবে নিঝুমদ্বীপে বিপর্যস্ত জনজীবন, বসতঘরে হাঁটুপানি * ঝালকাঠির শহর-গ্রামাঞ্চলে ঢুকছে পানি, বন্যার শঙ্কা ভারত থেকে বাংলাদেশে পানি প্রবেশ করার কারণে বেশ কিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরইমধ্যে নিম্নচাপের প্রভাবে নিঝুমদ্বীপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন, বসতঘরে ঢুকেছে হাঁটুপানি। মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত। বিশেষ করে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য মূলত দায়ী ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত। ফেনী নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে, এবং সেখানকার বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ঢল দ্রুত ফেনী জেলায় এসে পৌঁছায়, যার ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এছাড়া, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাভূমি ভরাট এবং নদীর নাব্য হ্রাস পাওয়ায় বন্যার প্রকোপ আরও বাড়ছে। বর্তমানে, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার জেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। বসতঘরের ভেতরে হাঁটুপানি, রান্নাঘর, উঠান সব ডুবে গেছে। স্ত্রী-সন্তান ঠাঁই নিয়েছে খাটের উপর। গবাদিপশুগুলো কোনোভাবে দাঁড়িয়ে আছে বাড়ির পাশের কাঁচা সড়কে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। এককথায় বলতে গেলে শহর-গ্রামাঞ্চলে বন্যার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন। বসতঘরের ভেতরে হাঁটুপানি, রান্নাঘর, উঠান সব ডুবে গেছে। শনিবার সকাল থেকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বিচ্ছিন্ন এলাকা নিঝুমদ্বীপ। হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি ঢুকে পড়েছে দ্বীপের বাড়িঘর, দোকানপাট ও সড়কে। মাছের ঘের ভেসে গেছে, তলিয়ে গেছে শাকসবজি ও ধানের জমি। বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। স্থানীয়রা জানান, জোয়ারের পানি এত দ্রুতগতিতে এসেছে যে, বাসিন্দাদের কিছুই করার সময় মেলেনি। শিশু, বৃদ্ধ ও নারীরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু গাছতলায় বা কারও উঁচু বাড়ির আঙিনায়। দ্বীপের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। মাছের ঘের, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মো. মিলন নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি বলেন, আমাদের জীবন এমনই, সবসময় নদীর সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয়। এবারের বর্ষায় তেমন মাছও নেই। ঋণ করে চলছি, এখন বিপদে পড়ে গেছি। ঘরে চুলা জ্বালানোর মতো কিছু নেই। পুকুরে লবণ পানি ঢুকে মাছ মরছে, ফসল গেছে। আমাদের কষ্ট কেউ বোঝে না। নিঝুমদ্বীপের আরেক বাসিন্দা মো. রাসেল বলেন, সকাল ১০টা থেকে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেড়ে যাওয়ায় নামার বাজার, বন্দর কিল্লা, ইসলামপুর, মোল্লা গ্রামসহ পুরো নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পানির নিচে চলে যায়। মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। গরুর খাবার, মাছের ঘের সব ভেসে গেছে। আমরা অসহায়। নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কেফায়েত হোসেন বলেন, নিঝুমদ্বীপ এখন জলাবদ্ধতার দ্বীপে পরিণত হয়েছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় আমরা প্রতিবারই ডুবে যাই। এবার পুরো ইউনিয়ন পানির নিচে। হাজারো পরিবার এখন পানিবন্দি। তিনি বলেন, প্রতিবছর এমন দুর্যোগে নিঝুমদ্বীপের মানুষ হারায় ঘরবাড়ি, হারায় জীবিকা। অথচ এখনও এখানে নেই পর্যাপ্ত বেড়িবাঁধ, নেই ত্রাণ বা টেকসই ব্যবস্থা। কবে মিলনেরা ঘরে ফিরতে পারবেন? কবে নিঝুমদ্বীপের মানুষ সত্যিকার অর্থে নিরাপদে বাঁচতে পারবে এই প্রশ্নই যেন ভাসছে পানির সাথে। হাতিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় সবার জীবন অনেক সংগ্রামের। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে চলতে হয়। জোয়ারের পানি নামতে শুরু করেছে তবে রাতে আরেকবার জোয়ার হতে পারে। আমরা খোঁজ রাখছি। কোথাও কোনো ক্ষতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঝালকাঠির বিভিন্ন নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার সবগুলো উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদীর পানি প্রবল স্রোতে খালে ঢুকে এবং তীর উপচে গ্রামাঞ্চলে প্রবেশ করায় দেখা দিয়েছে বন্যার শঙ্কা। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সুগন্ধা, বিষখালী, হলতা, বাসন্ডা, ধানসিঁড়ি নদী ও গাবখান চ্যানেলের পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এসব নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে ২-৩ মিটার। ইতোমধ্যে জেলার চার উপজেলার ৪০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিশেষভাবে ঝালকাঠি সদরের কেওড়া, কৃত্তিপাশা, পোনাবালিয়া ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম, রাজাপুরের বড়ইয়া, নিজামিয়া, পালট, বাদুরতলা, নলছিটির নাচনমহল ও ভবানিপুর এবং কাঁঠালিয়ার আমুয়া ও পাটিকালঘাটা এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিষখালীর জোয়ারের পানি সদর উপজেলার বৈদারাপুর, ভাটারাকান্দা, সাচিলাপুর, কিস্তাকাঠি, মানকিসুন্দর, নাপিতেরহাট এবং কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে প্রবেশ করেছে। কাঁঠালিয়ার চিংড়াখালী, জয়খালী, মশাবুনিয়া, ছৈলারচর, কচুয়া, রঘুয়ারদরি চর ও জাঙ্গালিয়া গ্রাম সম্পূর্ণ পানির নিচে। ডুবে গেছে আউরা ও শৌলজালিয়া আশ্রয়ণ এলাকা, কাঁঠালিয়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বর। এতে কৃষিজমি, মাছের ঘের এবং কাঁচা-পাকা সড়কের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া ঝালকাঠি শহরের পুরাতন কলাবাগ, লঞ্চঘাট ও পৌর মিনিপার্ক এলাকা থেকেও সুগন্ধা নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা বলেন, শুধুমাত্র বিষখালী নদীর পানির উচ্চতা গত ২৪ ঘণ্টায় ২ মিটার বেড়েছে। বর্তমানে পানি বিপৎসীমার ৭ থেকে ১০ সেন্টিমিটার ওপরে। তবে জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান বলেন, পানি আরও বাড়লে প্লাবিত এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাতক্ষীরায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকেই উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীতে পানি স্বাভাবিকের তুলনায় এক থেকে দুই ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে আজ ও আগামীকাল থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। নদীতে জোয়ারের সময় পানির উচ্চতা এক থেকে তিন ফুট পর্যন্ত বাড়তে পারে। যেকোনো দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্টরা প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে, জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, উপকূলীয় নদীগুলোর পানির উচ্চতা স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কোথাও বাঁধ ভেঙে না গেলে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। পাউবোর কর্মকর্তারা আরও জানান, এরইমধ্যে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা গোলাম রব্বানী বলেন, নিম্নচাপ মানেই আমাদের জন্য আতঙ্ক। কখন যে আবার কোন জায়গা থেকে বাঁধ ভেঙে যায়, এই ভয় নিয়েই থাকতে হয়। আমাদের এলাকায় এখনো অনেক বাঁধ দুর্বল। ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপ হলেই গ্রামের মানুষজন আতঙ্কে ভোগে। নদীতে মাছ ধরা যায় না, জীবন থমকে যায়। স্থানীয়দের আশঙ্কা, আগের অভিজ্ঞতার আলোকে এই অঞ্চলের ভাঙনপ্রবণ বাঁধগুলো এখনো মেরামত না হওয়ায় আবারও নতুন করে বিপদের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। উপকূলজুড়ে জনমনে উদ্বেগ থাকলেও প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো পরিস্থিতি নজরে রেখেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চাঁদপুরের মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা বেড়েছে প্রায় ৩ ফুট। এতে ওইসব অঞ্চলের সড়ক, পুকুর ও বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপরে গিয়ে সন্ধ্যা ৬টায় ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মেঘনার পানির উচ্চতা বাড়তে থাকে। এ সময় চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার নদী-উপকূলীয় এলাকায় পানি বৃদ্ধি পায়। শহর রক্ষা বাঁধের পুরানবাজার এলাকায় নদীর পানি সড়ক সমান অবস্থানে পৌঁছায়। পুরানবাজার রনাগোয়াল এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, এদিন বিকেল থেকে বাতাসের তীব্রতার সঙ্গে নদীতে ঢেউও বেড়েছে। আমাদের দোকানে পানি উঠে গেছে। তাই মালপত্র সরিয়ে নিয়েছি। সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা মনির শেখ জানান, ফেরিঘাট এলাকায় পানি রাস্তা সমান। আশপাশের নিচু সড়কগুলোতে পানি উঠে গেছে। পাশবর্তী চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ গাজী বলেন, সেচ প্রকল্পের বাইরে সব বাড়ি, রাস্তা ও পুকুরে পানি ঢুকে পড়েছে। আমার পুকুরের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে মাছ চাষে ক্ষতি হবে, পাশাপাশি পাকা সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। হাইমচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফুল হক বলেন, চলতি মাসের সমন্বয় সভায় মৎস্যচাষীদের সতর্ক করা হয়েছে। তাদের জানানো হয়েছে-২৪ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত পানি বাড়তে পারে। এরপরও আমরা জেলেদের সতর্ক করতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা শাহ মো. শোয়েব বলেন, নিম্নচাপের কারণে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ৩ ফুট বাড়তে পারে-এ সতর্কবার্তা আমরা দিয়েছি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহরুল হক বলেন, নদীর পানি বেড়েছে, বিষয়টি আমরা জানি। আমাদের কর্মকর্তারা সতর্ক আছেন। তবে মেঘনার পানির উচ্চতা বাড়লেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আজ বিকেলে জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটারের ওপরে গিয়ে ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ভারী বৃ?ষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি ফের বাড়তে শুরু করেছে। শনিবার থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম কর?তে পা?রে। এতে নদী সংলগ্ন রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এই নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন স্থিতিশীল থাক?তে পা?রে। পাউবো কু?ড়িগ্রা?মের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা অববাহিকায় ১৪৮ মিলিমিটার বৃ?ষ্টিপাত রেকর্ড করা হ?য়ে?ছে। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম কর?তে পারে। এর ফলে রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তবে পানি বাড়লেও রোববার দুপুর পর্যন্ত তিস্তার ভা?টি?তে কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চ?লে বন্যা পরিস্থিতির তেমন লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী চতুরা এলাকার বাসিন্দা মিলন বলেন, পানি কিছুটা বাড়ছে, তবে বন্যা হওয়ার মতো বাড়েনি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
সংস্কারে এগোলেও বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ কাটেনি

সংস্কারে এগোলেও বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ কাটেনি