রাশিয়ার জলসীমায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশের পর দেখা দিয়েছে মস্কো-ওয়াশিংটন উত্তেজনা। এরইমধ্যে সাগরের তলদেশে কার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি তা নিয়েও চলছে নানা আলোচনা। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক কূটনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে জটিল প্রশ্ন তুলছে। একইসঙ্গে বাড়ছে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা।
বাণিজ্য ও শুল্ক নিয়ে উত্তেজনা তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই শীতল যুদ্ধ যুগের কৌশলে ফিরে যাচ্ছে বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের জবাবে শুক্রবার দেশটির জলসীমার কাছে পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই নির্দেশকে বিশ্ব পরিস্থিতির নাটকীয় মোড় বলে মনে করছেন অনেকে। সাবমেরিন মোতায়েন নিয়ে সমালোচনা বৃদ্ধির মুখে ট্রাম্প তার সিদ্ধান্তকে আক্রমণ নয়, বরং প্রয়োজনীয় সতর্কতা বলে যুক্তি দেখিয়েছেন। বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাত শুরু করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে একজন উচ্চপদস্থ সাবেক রুশ কর্মকর্তার ‘বেপরোয়া হুমকির’ পর নীরবে বসে থাকা সম্ভব নয় বলেও স্পষ্ট বার্তা দেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের এ পদক্ষেপের পর মস্কো-ওয়াশিংটনের মধ্যে সাগরের তলদেশে কার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি তা নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। মার্কিন নৌবাহিনীর ওহাইও-ক্লাস ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিনগুলোর গোপনে চলাচল ও নির্ভুল নিশানায় পারমাণবিক অস্ত্র ছোড়ার সক্ষমতা রয়েছে। এসব সাবমেরিন ‘বুমার’ নামে পরিচিত এবং বর্তমানে মার্কিন বাহিনীর বহরে অন্তত ১৪টি সক্রিয় বুমার রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা টহলের জন্য তৈরি এসব সাবমেরিন বড় ধরনের মেরামত ছাড়াই ১৫ বছর পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। এছাড়া দেশটি তিন ধরনের পরমাণু চালিত ফাস্ট অ্যাটাক সাবমেরিন পরিচালনা করে। এরমধ্যে ভার্জিনিয়া-ক্লাস, সিউলফ-ক্লাস, এবং লস অ্যাঞ্জেলেস-ক্লাস উল্লেখযোগ্য। এসব সাবমেরিন শত্রু জাহাজ খুঁজে ধ্বংস করতে সক্ষম বলে জানা গেছে। অন্যদিকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাবমেরিন বহর রয়েছে রাশিয়ার। যার সংখ্যা প্রায় ৬৪টি। এর মধ্যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন প্রায় ১৪টি। রয়েছে বোরেই-ক্লাস ও ডেল্টা আইভি-ক্লাস সাবমেরিনও। এসব ডুবোজাহাজ সমুদ্রের নিচে রাশিয়ার পারমাণবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে। দেশটির নৌবাহিনীতে চারটি ইয়াসেন-ক্লাস পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন রয়েছে। এসব সাবমেরিন আকারে ছোট এবং কমসংখ্যক ক্রু নিয়ে পরিচালিত হয়। যার মাধ্যমে স্থলভাগে ও সমুদ্রে যুদ্ধজাহাজের বিরুদ্ধে দূরপাল্লার হামলা চালানো যায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক কূটনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে জটিল প্রশ্ন তুলছে। সামনের দিনগুলোতে আবার পারমাণবিক কূটনীতির সূচনা ঘটাবে, নাকি পরমাণু উত্তেজনার এক নতুন যুগের সূচনা করবে-তা এখনো অনিশ্চিত। পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন কূটনীতির পুনরুজ্জীবন, কৌশলগত সংযম এবং পারমাণবিক উত্তেজনা প্রশমন বেশি প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

মস্কো-ওয়াশিংটন উত্তেজনা
বাড়ছে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা
- আপলোড সময় : ০৪-০৮-২০২৫ ১০:০৬:৩১ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৪-০৮-২০২৫ ১০:০৬:৩১ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ