ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫ , ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মেসির জোড়া গোলে ফাইনালে ইন্টার মায়ামি টাইব্রেকারে গ্রিমসবির কাছে হেরে বিদায় নিলো ম্যানইউ নতুন মাইলফলক স্পর্শ করলেন হামজা ‘মুসলিম হওয়ার কারণে অনেকে আমাকে টার্গেট করেন’ ভারতের ২৬ বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ দেখছেন না শ্রীকান্ত নতুন ক্যাটাগোরিতে বেতন কত কমল বাবর-রিজওয়ানের? বড় ব্যবধানে হারলো সাকিবের ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স বাংলাদেশকে হারানো সহজ হবে না: স্কট এডওয়ার্ডস রাকসু নির্বাচনের তফসিল ৩য় বারের মতো পুনর্বিন্যস্ত পিছিয়েছে ভোট জকসু নির্বাচনে বয়সসীমা থাকছে না দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চন্দ্রনাথ পাহাড় ঘিরে উসকানির চিহ্ন দেখামাত্র ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে-মির্জা ফখরুল শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়-বুয়েট ভিসি প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাইয়ে কমিটি ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জায় কাবু মানুষ হিজাব বিতর্কে শিক্ষক বরখাস্ত উত্তাল ভিকারুননিসা আজ জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ মোট ভোটার ১২ কোটি ৬১ লাখ ডাকসু নির্বাচনে প্রচারণায় উৎসবমুখর ঢাবি ক্যাম্পাস প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের উপর সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ
* রেললাইনের ৫০ ফিটের মধ্যে কোনো ইজারা হয় না * রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগে রয়েছে লোকবল সংকট

রেলের জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ

  • আপলোড সময় : ২৫-০৮-২০২৫ ১০:১৮:৫০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৫-০৮-২০২৫ ১০:১৮:৫০ পূর্বাহ্ন
রেলের জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ
তুরাগ থেকে মনির হোসেন জীবন রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ রেলওয়ের বিপুল পরিমাণ সরকারি সম্পত্তি (পরিত্যক্ত জমি) দখলের মহোৎসব ও হরিলুট চলছে। সরকারি জমিতে দিনকে দিন ঝুঁকি নিয়েই শতশত অবৈধ স্থাপনা ইতিমধ্যে গড়ে উঠেছে। বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর কোর্টবাড়ী রেলক্রসিং পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ সরকারি রেলের জমি অবৈধ ভাবে স্থানীয় ভূমিদস্যু ও দখলকারীদের জবর দখলে চলে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও বদলায়নি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের। ইতিপূর্বে এসব এলাকার জায়গা জমিগুলো ভাওয়াল এ্যাটেষ্টমেন্টের আওতাধীন ছিল। কালের পরিবর্তনের কারণে বিপুল পরিমান সম্পত্তি বেহাত ও হাতছাড়া হয়ে গেছে। সরকারি এসব খাস জমি, পরিত্যক্ত ও জবর দখলকৃত জমিগুলো উদ্ধারের ব্যাপারে বর্তমান সরকারের কোন তৎপরতা নেই বললেই চলে। সেই সাথে রয়েছে-সুষ্ঠু তদারকিরও অভাব। এক কথায় বলতে গেলে বিমানবন্দর ও উত্তরায় অনেকটাই রেলের জমি দখলের মহোৎসব ও হরিলুট চলছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও এলাকাবাসীরা যে যেভাবে পারছে জোর জুলুম করে খাচ্ছে সরকারি এসব জমি। সচেতন মহল ও এলাকার সর্বস্তরের মানুষের প্রশ্ন? তাহলে এসব জমি তুমি কার। সরকারের নাকি কোনো ব্যক্তি মালিকানার। সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলো বলছে, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আব্দুল্লাহপুর মাত্র এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরত্ব। তার মাঝে কসাইবাড়ী, জয়নাল মার্কেট, ৮নং রেললাইন, কোর্টবাড়ী হয়ে আব্দুল্লাহপুর টঙ্গী রেডব্রিজের দক্ষিণ পাড় রেলক্রসিং পর্যন্ত রেললাইনের দু’পাশ জুড়ে কয়েকশ বিঘা সরকারি জায়গা দখল-বেদখলে রয়েছে। কতিপয় অল্প কিছু ব্যক্তি সরকারি থেকে নামমাত্র জমি লীজ নিয়েছেন। কেউ কেউ লীজকৃত জমির পরিমাণের চেয়ে দখলকৃত জমির পরিমাণ অনেক বেশি। এসব জমির ওপর স্থাবর/ অস্থাবর, বহুতল ভবন, পাঁকা, আঁধাপাকা বসতিও ঘরবাড়িসহ রেললাইনের উভয় পাশে এবং মাঝখানে ফাঁকা জায়গায় শত শত অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। সেই সাথে দিব্যি পাল্লা দিয়ে বিপুল পরিমাণ রেলের জমি দখলের মহোৎসব ও হরিলুট চলছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ও গাজীপুরের ভাওয়াল এ্যাস্ট্রের এসব জমি দখল করে দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা তুলে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। সচেতন মহলের প্রশ্ন-জোর যার মুল্লুক তার, সরকারি রেলওয়ের বিপুল পরিমাণ জমি তুমি কার! তারা এসব দোকান দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিমানবন্দর থেকে আব্দুল্লাহপুর রেলক্রসিং পর্যন্ত রেলের দু’পাশের বিপুল পরিমাণ জমি দখল করে ছোট ছোট টং দোকান, খাবার হোটেল, চটপটি, ফুসকা, কাঁচা বাজার, মাছের বাজার, ভ্যান ও বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিদিন ১০০-২০০-২৫০ টাকা করে চাঁদা তোলা হচ্ছে। সেখানে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ দোকান ও বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। এ সব অবৈধ দোকানপাটকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট। কতিপয় কয়েকটি চক্র এখানে যৌথ ভাবে কাজ করে। এসব জায়গা থেকে একটি প্রভাবশালী মহল ও এক শ্রেণির চাঁদাবাজ সুকৌশলে ভাড়া আদায় করছে। একাধিক সূত্র বলছে, রেলওয়ের জায়গায় অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ একটি গুরুতর সমস্যা। এই স্থাপনাগুলো রেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে। অনেক ক্ষেত্রে, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রেলওয়ের জমি দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরি করে ভাড়া দিয়ে থাকে। এতে করে রেল চলাচল বিঘ্নিত কিংবা নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। অবৈধ স্থাপনাগুলো রেললাইনের কাছাকাছি থাকার কারণে ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে এবং দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। সেই সাথে যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকিও থাকে। রেললাইনের আশেপাশে অবৈধভাবে বসবাসকারী বা ব্যবসা করা মানুষের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের ফলে রেলওয়ের মূল্যবান স্থান ও অবকাঠামোর ক্ষতি হয়। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। এসব সমস্যা সমাধানে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এবিষয়ে বিমানবন্দরের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, বিমানবন্দর স্টেশন থেকে আব্দুল্লাহপুর রেলক্রসিং পর্যন্ত রেললাইনের দু’পাশে প্রায় কয়েক কিলোমিটার জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। আমার জানা মতে, রেললাইনের ৫০ ফিটের মধ্যে কোনো ইজারা দেওয়া হয় না। রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, এখানে কয়েকটা জমি হয়তো ইজারা দেওয়া আছে। আর বাকিগুলো প্রভাবশালীরা দখল করে খাচ্ছে। কার কার নামে বৈধ ইজারা আছে আমাদের কাছে তাদের তালিকা লিপিবদ্ধ আছে। রেলওয়ের জমি দখলমুক্ত করতে প্রায় সময়ই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় জানিয়ে তিনি আরও জানান, আমাদের সেক্টরে লোকবলের সংকট রয়েছে। এছাড়া জনবলের অভাবে অনেক সময় তা কার্যকর করা যায় না। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর পুনরায় দখল হওয়ার প্রবণতাও দেখা যায়। এব্যাপারে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল ও উত্তরার সর্বস্তরের জনগণ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য