মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমরা ভারত ও রাশিয়াকে চীনের গভীরতম আঁধারে হারিয়ে ফেলেছি। গতকাল শুক্রবার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে তিনি ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে তিন দেশকেই একটি ‘সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের’ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে উষ্ণ আতিথেয়তা দেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, দেখা যাচ্ছে আমরা ভারত ও রাশিয়াকে চীনের গভীরতম অন্ধকারে হারিয়েছি। তাদের ভবিষ্যৎ দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ হোক। ট্রাম্পের এই মন্তব্য এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে ভারত, রাশিয়া ও চীনের গভীরতর সম্পর্ক নিয়ে তার সবচেয়ে ‘স্পষ্ট মন্তব্য’। এদিকে, এসসিও সম্মেলনে চীন, রাশিয়া ও ভারতের নেতারা জ্বালানি থেকে নিরাপত্তা পর্যন্ত নানা খাতে সহযোগিতার বিষয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করেন। তারা সবাই বিভিন্ন মাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতিসহ নানা বিষয়ে বিরোধে জড়িত। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ভারতকে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের পাল্টা ভারসাম্য হিসেবে দেখে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট- দুই প্রশাসনই নয়াদিল্লিকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে গড়ে তুলতে বিনিয়োগ করেছে। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প নিজেও ভারতকে প্রাধান্য দেন। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে সম্পর্কের শীতলতা স্পষ্ট হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও ভারতের রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি বাণিজ্যকে ঘিরে তার সমালোচনা নয়াদিল্লির ওপর ওয়াশিংটনের প্রভাব অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত এসসিও সম্মেলন ছিল সাত বছরে মোদীর প্রথম চীন সফর। দীর্ঘদিনের সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এটি ছিল একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ, বিশেষ করে ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘটিত প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর। শি ও পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মোদী ইঙ্গিত দিয়েছেন, কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনকে তিনি যেকোনো একক ব্লকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার চেয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। ২৫ শতাংশ পারষ্পারিক শুল্কের সঙ্গে রাশিয়ান তেল আমদানিকে লক্ষ্য করে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ আরোপ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত উচ্চশুল্কের দেশগুলোর মধ্যে ভারত একটি, যা প্রায় চীন ও ব্রাজিলের সমান। ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন যে বাণিজ্য সম্পর্কে ভারত অসমভাবে সুবিধা নিয়েছে। সম্প্রতি তিনি বলেন, আমরা ভারতের সঙ্গে খুব সামান্য ব্যবসা করি, কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে বিপুল ব্যবসা করে। এটি একেবারে একপেশে ও ভয়ানক পরিস্থিতি। আরও বড় কথা হলো, ভারত তার তেল ও সামরিক সরঞ্জামের বেশিরভাগই রাশিয়া থেকে কিনে থাকে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে খুব সামান্যই আমদানি করে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

চীন-রাশিয়া-ভারতের ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধ হোক: ডোনাল্ড ট্রাম্প
- আপলোড সময় : ০৫-০৯-২০২৫ ০৭:৫৯:৪৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৫-০৯-২০২৫ ০৭:৫৯:৪৯ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ