বরিশাল প্রতিনিধি
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরিশালের মুলাদীতে ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষে প্রায় ১৫ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুলাদী সরকারি কলেজ চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে দুপক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন মান্না (২০), হামিম (২০), বায়েজিদ (২৩), আবদুল্লাহ (২৪) ও রাকিব (২৪)। প্রত্যেকেই মুলাদী উপজেলার বাসিন্দা। শিবির নেতারা জানান, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মুলাদী সরকারি কলেজে নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য নবীনবরণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে কলেজ ছাত্রশিবির সভাপতি আব্দুল্লাহ ইসলাম নেতাকর্মী নিয়ে কলেজ চত্বরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ওই সময় কলেজ ছাত্রদল সভাপতি রিফাত মল্লিক তাদের বাঁধা দেন এবং কলেজ শিবির সভাপতি আব্দুল্লাকে ছাত্রলীগের ছায়াতলে থাকা গুপ্তকর্মী আখ্যা দিয়ে তাদের কর্মসূচি পালন করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে কলেজ শাখা ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। খবর পেয়ে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব জুলফিকার আহমেদ বিল্লালসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কলেজে ঢ়ুকে ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের এলোপাথারি মারধর শুরু করেন। এ সময় কলেজ ছাত্রশিবির সভাপতি আব্দুল্লাহ ইসলাম, সেক্রেটারি জাহিদ হোসেন মান্না, উপজেলা ছাত্রশিবিরের দাওয়া সম্পাদক মো. রাকিব হোসেন, কলেজ ছাত্রশিবির কর্মী শারাফত সরদার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি বায়জিদ হোসেনসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। কলেজের শিক্ষার্থীরা আহতদের উদ্ধার করে মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় আব্দুল্লাহ, মান্না, রাকিব ও শারাফতকে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন চিকিৎসকেরা। ইসলামী ছাত্রশিবিরের বরিশাল জেলা সভাপতি মো. আকবর হোসেন ও জেলা সেক্রেটারি সাইদ আহম্মেদ জানান, হামলায় অন্তত ১২ থেকে ১৫ জন সদস্য আহত হন, যাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর। তারা অভিযোগ করেন, হামলার নেতৃত্ব দেন মুলাদী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন, সেক্রেটারি বেল্লাল, কলেজ শাখা সভাপতি রিফাত মল্লিক ও সেক্রেটারি কাওসার। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা। তবে ছাত্রশিবিরের ওপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপজেলা ছাত্রদল আহ্বায়ক মহিউদ্দিন ঢালী। তার দাবি, ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের ৪/৫ নেতাকর্মীকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়ায় চেষ্টা ও তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করলে দুই পক্ষে হাতাহাতি হয়। পরে বিষয়টি সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রূপ নেয়। এতে ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তাদের মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মুলাদী থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ কলেজ চত্বর ও খাদ্যগুদাম সড়কে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
