ঢাকা , বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ , ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সবাই মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ হয়েছে-আলী রীয়াজ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বদলিতে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন রাস্তায় অভিনেতাকে সিদ্দিককে গণপিটুনি কারিগরি শিক্ষার্থীরা যা শিখছেন, চাকরির বাজারে তার চাহিদা নেই -সিপিডি আগামী নির্বাচনে সীমিত পরিসরে হলেও প্রবাসীদের ভোটের প্রস্তুতি চলছে : সিইসি জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশকে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে গড়িমসি অপকর্ম বন্ধ করুন, নইলে বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে -নেতাকর্মীদের ফখরুল সভ্য হতে হলে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান বইপ্রেমী এক ডিসির গল্প গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ দুই বোন ই-৮ ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলেন ২৫ কর্মী পুলিশের জন্য ১৭২ কোটি টাকায় কেনা হবে ২০০ জিপ সামাজিক সুরক্ষায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৬ লাখ ২৪ হাজার উপকারভোগী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে লিপ্ত থাকার অভিযোগ গ্যাস খাতে বছরে আর্থিক ক্ষতি বিলিয়ন ডলার নতুন লুকে নজর কাড়লেন ব্লেক লাইভলি

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ৭৯.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশায় ভুগছেন : আঁচল ফাউন্ডেশন

  • আপলোড সময় : ০৮-০৬-২০২৪ ১২:২৬:৩৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-০৬-২০২৪ ১২:২৬:৩৬ পূর্বাহ্ন
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ৭৯.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশায় ভুগছেন : আঁচল ফাউন্ডেশন
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ খতিয়ে দেখতে একটি জরিপে চালিয়েছে বেসরকারি সংস্থা আচঁল ফাউন্ডেশনচলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ মে পর্যন্ত এ জরিপে সারা দেশের ৮৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫৬ জন পুরুষ ও ৮১৩ জন নারীসহ ১ হাজার ৫৭০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেনএতে উঠে এসেছে, ৭৯ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশায়, ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেনএ ছাড়া ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মহত্যা চিন্তায় এসেছেগতকাল শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণশীর্ষক সমীক্ষা নিয়ে ভার্চ্যুয়ালি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি তানসেন রোজতিনি জানান, জরিপে উঠে এসেছে, ৭৯ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে হতাশার বিভিন্ন উপসর্গ, যেমন: ক্লান্তি, ওজন কমে যাওয়া, কোনো কিছু উপভোগ না করা, ঘুমের ধরনের পরিবর্তন, আত্মহত্যার চিন্তা, কাজে মনোযোগ দিতে না পারা ইত্যাদি অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছেমাত্র ২০ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন যে তাদের এই ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়নিহতাশার উপসর্গ পূর্বের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে জানা যায়, ৬৬ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থীদের আগের তুলনায় বেশি সময় হতাশার উপসর্গ নিজের মাঝে অনুভব করেছেনএর মধ্যে হতাশার উপসর্গে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়েজরিপে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের হতাশার বিভিন্ন কারণ উঠে এসেছে৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেনবিভিন্ন কারণে নিজেকে অন্যান্যের সঙ্গে তুলনা করার কারণে হতাশায় ভুগছেন ১৬ দশমিক ২ শতাংশএ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা নিয়ে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, হল বা আবাসিক পরিবেশ নিয়ে ৯ শতাংশ, সহপাঠী বা শিক্ষক কর্তৃক বুলিংয়ের কারণে ৫ দশমিক ৩ শতাংশওপরের সব কটির জন্য ১ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেনএ ছাড়া আরও ৩ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্যান্য কারণে হতাশায় ভুগছেনতিনি বলেন, আমাদের জরিপে দেখা গিয়েছে, অংশগ্রহণকারী মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন ৩১ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থীযার মাঝে বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ, ?্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হননি ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশজরিপে আরও উঠে এসেছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহপাঠী বা সিনিয়র দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ, শিক্ষক কর্তৃক ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, স্টাফ কর্তৃক ১ দশমিক ২ শতাংশ এবং অন্যান্যের দ্বারা ৫ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হয়েছেনহয়রানির ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ৪২ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর, মোটামুটি প্রভাব পড়েছে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর এবং কোনোরূপ প্রভাব পড়েনি ৮ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থীরজরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে পুরোপুরি অসন্তুষ্ট ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, মোটামুটি সন্তুষ্ট ৫৮ দশমিক ১ শতাংশ এবং পুরোপুরি সন্তুষ্ট মাত্র ৮ দশমিক ৪ শতাংশপড়াশোনার পরিবেশ নিয়ে অসন্তুষ্টি হওয়া পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেনআঁচল ফাউন্ডেশনের জানিয়েছে, ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী তারা মন খুলে কথা বলার মতো কোনো শিক্ষক পান নাএর মাঝে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী নিজ শিক্ষকদের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না এবং ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা খুব সহজে নিজ বিভাগের শিক্ষকদের সামনে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনঅন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৮ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং ৪১ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থী ফ্যাকাল্টির অন্য সদস্যদের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন নাএ জরিপে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের পরিবেশ নিয়ে ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা পুরোপুরি অসন্তুষ্টসন্তুষ্টির কথা বলেছেন মাত্র ১০ দশমিক ০০ শতাংশ শিক্ষার্থীবাকিরা জানিয়েছেন, তারা মোটামুটি সন্তুষ্টঅসন্তুষ্টির কারণ হিসেবে দেখা যায়, ৯ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী থাকার পরিবেশকে দায়ী করেছেনঅনুন্নত খাবারকে দায়ী করেছেন ৭ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থীরিডিং রুম বা গ্রন্থাগারের সংকট মনে করছেন ৩ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং সব কারণকেই দায়ী করছেন ৬৮ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থীএ ছাড়া ১০ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা অন্যান্য কারণকে অসন্তুষ্টির জন্য দায়ী করছেন৭০ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন হলের পরিবেশ তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছেজরিপে ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, ২৯ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যারিয়ার হিসেবে সরকারি চাকরি করতে চান, ৯ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ব্যবসা বা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, মাত্র ৭ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি চাকরি করতে চানএ ছাড়া বাকি শিক্ষার্থীরা এখনও কোনোরূপ ক্যারিয়ার ভাবনা ঠিক করেননি, যা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২২ শতাংশজরিপে অংশগ্রহণকারী মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, আত্মহত্যা চিন্তায় এসেছে কিন্তু করেননি ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ, আত্মহত্যা চিন্তা এসেছে এবং উপকরণও জোগাড় করেছেন ৭ দশমিক ৩ শতাংশ এবং কখনও মাথায় আত্মহত্যার চিন্তা আসেনি ৪৭ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থীরক্যারিয়ার ভাবনা থেকে আত্মহত্যার চিন্তা ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর জানিয়েছেনএসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ শতাংশ ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশায়, ১৬ দশমিক ২ শতাংশ মা-বাবার সঙ্গে অভিমানের ফলে, ৯ দশমিক ৭ শতাংশ প্রেমঘটিত বিষয়ে, ৯ শতাংশ অর্থনৈতিক সমস্যাগ্রস্ত হয়ে, অন্যরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্যান্য কারণে আত্মহত্যা করার চিন্তা এসেছে বলে জানিয়েছেনমানসিক স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুল নিয়ে ৩৮ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী হ্যাঁসূচক এবং ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী নাসূচক উত্তর দিয়েছেনএ ছাড়া ২৬ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা এই সম্পর্কে কোনো কিছু জানেন না
আঁচল ফাউন্ডেশনের কিছু প্রস্তাব: ক্যাম্পাসে কাউন্সেলিং ইউনিটের ব্যবস্থা করা, ক্যাম্পাসে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করা, ক্যাম্পাসে কেউ যেন বুলিংয়ের শিকার না হয়, তা মনিটরিং করা, নিরাপদ বাসস্থান ও উন্নত মানের খাদ্যব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, প্রয়োজনে বৃত্তি ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সম্মান ও আস্থার সম্পর্ক উন্নয়ন, প্রয়োজনে কাউন্সেলিং করানো, মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা, সেমিনার ও মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করা, বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী বা বিশেষজ্ঞদের এসব সেশনে বিভিন্ন সমস্যা ও এগুলোর সমাধান নিয়ে লেকচার দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে এবং দেশের সব স্কুল, কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট (মনোবিদ) এডুকেশনাল কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দিতে হবেসংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক কামাল উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী, অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ আল মারজুক, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশর সিনিয়র লেকচারার আবদুল্লাহ আল হারুন প্রমুখ
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ