ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫ , ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
জুনে ৩২৪টি রাজনৈতিক মিথ্যা তথ্য শনাক্ত : সিজিএস অন্তর্বর্তী সরকারের বিদায়ের সময় এসেছে-দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য গাজীপুরে আসন বাড়ছে কমছে বাগেরহাটে : ইসি ৩৯টি সংসদীয় আসনে আসছে পরিবর্তন : ইসি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে ১৫ সদস্যের কমিটি শান্তি মিশনে মানের দিক থেকে শীর্ষস্থানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী-মার্কিন রাষ্ট্রদূত রাশিয়ায় ভূমিকম্পের পর আঘাত হেনেছে সুনামি কুড়িগ্রামের উলিপুরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যায় ৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড জুলাইয়ের আহত-নিহতদের তালিকায় অসঙ্গতি পাওয়া গেছে-মুক্তিযোদ্ধা উপদেষ্টা সবুজায়ন স্বপ্নে খরা ডেঙ্গুতে আরও ২ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৮৬ সড়কে আলু ফেলে নওগাঁর কৃষকদের মানববন্ধন রাজধানীতে মাসে ২০টিরও বেশি হত্যা ও ৫টি ডাকাতি হচ্ছে রিয়াদের বাসা থেকে আড়াই কোটির চেক-এফডিআর নথি উদ্ধার এনসিপির সমাবেশে হামলায় আরেক মামলা আসামি সাড়ে ৫ হাজার তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে হচ্ছে কমিটি : ধর্ম উপদেষ্টা ভয়াবহতার মূলে এডিস মশার অস্বাভাবিক প্রজনন পোরশায় কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রেস্ট ও সম্মানানা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আমতলীতে মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে
প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় ১৪ দল

চলমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধান না করে জিইয়ে রাখবে

  • আপলোড সময় : ০৯-০৬-২০২৪ ১০:২০:৫৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-০৬-২০২৪ ১০:২০:৫৪ পূর্বাহ্ন
চলমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধান না করে জিইয়ে রাখবে চলমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধান না করে জিইয়ে রাখবে
সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকারপ্রতিপাদ্য নিয়ে জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত ৫৩তম বাজেট পেস করেন নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও স্মার্ট দেশ গড়তে লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন তিনি।
এই বাজেটকেগণমুখী, উন্নয়নমুখী জনবান্ধবউল্লেখ করে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠনগুলো। তবে  ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেসন্তুষ্ট নয়আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট শরিক দলগুলো। জোটসঙ্গী শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, এই বাজেট দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের পরিবর্তে জিইয়ে রাখবে। মানুষের মধ্যে কোনো স্বস্তি আসবে না।
জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৪টি বিশেষ বিষয়ে প্রাধান্যের মধ্যেদুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সনীতি অন্যতম। একই সঙ্গে বাজেটে রাখা হয়েছে কালো টাকা সাদা করার সুযোগও। টিআইবি, সিপিডিসহ বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা এটিকেসাংঘর্ষিকসিদ্ধান্ত বলে মনে করেন। এর মধ্য দিয়ে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন তারা। এবারের বাজেটে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা, বিজ্ঞান শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা উদ্ভাবন সহায়ক শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করা, কৃষিখাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা উন্নত সম্প্রসারিত করা,তরুণদের প্রশিক্ষণ আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ ১৪ কার্যক্রম। উচ্চাভিলাস বা হাঁকডাক না দিলেও সাদামাটাভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কৌশল নেয়া হয়েছে বাজেটে। করজালে আটকানো, কালো টাকা সাদা টাকা করার সুযোগ এবং সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানো হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল অর্থনৈতিক সংগঠনগুলোর মতো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন খোদ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শীর্ষ নেতারাও। আসন বণ্টন, ক্ষমতার ভাগাভাগিসহ নানা কারণে ১৪ দলে অসন্তোষ বেশ কয়েক মাস ধরেই। জোট নেতারা বলছেন, বাজেটে ব্যাংক ঋণ নির্ভরতার কারণে ব্যাংকগুলোও মুখ থুবড়ে পড়বে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে সৃষ্ট দুর্বিষহ অবস্থা থেকে সাধারণ মানুষের মুক্তি মিলবে না।
বাজেট প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, চলমান যে সংকট অর্থনীতিতে, নিত্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, ব্যাংকখাতের বিভিন্ন রকম সংকট, কর সংগ্রহের স্থবিরতাসহ বিভিন্ন সমস্যাগুলো সমাধানের একটি বাজেট আশা করেছিলাম। কিন্তু এটা সংকট সমাধানের বাজেট মনে হচ্ছে না। এটা চলমান সংকটের সঙ্গে সহবাস করার বাজেট বলে মনে হয়েছে। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির কষাঘাতে জর্জরিত দরিদ্র জনগণ স্বস্তি পাবে কি না, বাজেটে তার সুনির্দিষ্ট পথনকশা নেই। মূল প্রয়োজন ছিল, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে গরিব, শ্রমিক, নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তকে রেহাই দেয়ার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরা। ব্যাংক খাতের নৈরাজ্য সমাধানেও প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপের কোনো কথা নেই। চলমান অর্থনৈতিক ধাক্কা মোকাবিলায় প্রস্তাবিত বাজেট কোনো প্রকার সহযোগিতা করবে না। বরং চলমান সংকটকে জিইয়ে রাখবে। প্রস্তাবিত বাজেটে আশাবাদী নন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননও। তিনি বলেন, এমন কোনো সাহসী পদক্ষেপ আমরা দেখিনি, যার মধ্য দিয়ে অর্থপাচার, ব্যাংকিং খাতে নৈরাজ্য থামানো হবে। দুর্নীতির প্রশ্নে আলোচনাই এর মধ্যে আসেনি। দায়টা জনগণের ওপর রেখে দেওয়া হয়েছে। জনগণ নিজেরা সমাধান করুক, ধরনের একটা জায়গায় রয়ে গেছে বাজেট। তিনি বলেন, বর্তমান যে বাস্তবতা, সেই বাস্তবতায় সংকট নিরসনে, জনজীবনে যে সংকটগুলো রয়েছে, সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত বিবরণীতে কী আছে আমি জানি না। কারণ আমরা সংক্ষিপ্ত বিবরণী দেখেছি। সেখানে কিছু নেই। তাতে যা দেখেছি, অতীতের ধারাবাহিকতার সঙ্গে খুব একটা পার্থক্য নেই। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রেসক্রিপশনে, তাদের শর্ত পূরণেই দেয়া হয়েছে বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট চলমান সংকট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে না। তিনি বলেন, প্রথমত এটি ঘাটতির বাজেট। তার ওপর ব্যাংক ঋণনির্ভর। যার কারণে ব্যাংকগুলো মুখ থুবড়ে পড়বে। আমরা যেটা আশা করেছিলাম, বাজেটে সাধারণ মানুষের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে যে দুর্বিষহ অবস্থা, সেটির মুক্তি হবে। কিন্তু সেটি মনে হয় হচ্ছে না। বাজেটে কমার খাত খুবই কম। কিন্তু বাড়ার খাত বেশি। অর্থা এই বাজেটের ফলে দ্রব্যমূল্যের দাম কমবে না। অধিকন্তু করের জাল বাড়ানো হয়েছে। চাপটা তো পুরোটাই জনগণের ওপর পড়লো। যা দেখেছি, অতীতের ধারাবাহিকতার সঙ্গে খুব একটা পার্থক্য নেই। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রেসক্রিপশনে, তাদের শর্ত পূরণেই দেয়া হয়েছে বাজেট। 
গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার বলেন, আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট অন্যান্য দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আমাদের দেশের অর্থ লুট হয়ে যায়। অন্য দেশে চলে যায়। বেগমপাড়া বানায়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাজেটটি সময়োপযোগী। ভালো কিছু করতে পারবে বলে মনে হয়। বিশটি পণ্যে এক শতাংশ কাস্টমস কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এটি অর্থনীতির সঙ্গে বাস্তবমুখী সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ায় এর আগে এনবিআরের বিশাল অংকের আয় হয়েছে। কালো টাকার আয় তো করের মধ্যে ছিল না। অনেকে মনে করছেন, সুযোগ দেয়া ঠিক হয়নি। এখন দেখার বিষয়, কী পরিমাণ আয় করে এনবিআর। তাতে বুঝা যাবে এটি ফলপ্রসূ হলো কি না।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স