ঢাকা , বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ , ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সবাই মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ হয়েছে-আলী রীয়াজ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বদলিতে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন রাস্তায় অভিনেতাকে সিদ্দিককে গণপিটুনি কারিগরি শিক্ষার্থীরা যা শিখছেন, চাকরির বাজারে তার চাহিদা নেই -সিপিডি আগামী নির্বাচনে সীমিত পরিসরে হলেও প্রবাসীদের ভোটের প্রস্তুতি চলছে : সিইসি জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশকে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে গড়িমসি অপকর্ম বন্ধ করুন, নইলে বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে -নেতাকর্মীদের ফখরুল সভ্য হতে হলে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান বইপ্রেমী এক ডিসির গল্প গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ দুই বোন ই-৮ ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলেন ২৫ কর্মী পুলিশের জন্য ১৭২ কোটি টাকায় কেনা হবে ২০০ জিপ সামাজিক সুরক্ষায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৬ লাখ ২৪ হাজার উপকারভোগী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে লিপ্ত থাকার অভিযোগ গ্যাস খাতে বছরে আর্থিক ক্ষতি বিলিয়ন ডলার নতুন লুকে নজর কাড়লেন ব্লেক লাইভলি

দেশে কোরবানির পশুর জোগান দেবে খামারিরা

  • আপলোড সময় : ১১-০৬-২০২৪ ১২:৩৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৬-২০২৪ ১২:৩৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
দেশে কোরবানির পশুর জোগান দেবে খামারিরা আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় বসছে ১৯টি পশুর হাট। হাটগুলোতে পশুর জোগান দিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসছে গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন পশু। সড়ক পথের পাশাপাশি ট্রলারে করে কোরবানির পশু আনা হচ্ছে হাটে। সোমবার পোস্তগোলা এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকে তোলা ছবি

কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে একসময় ভারতের ওপর নির্ভরশীল ছিল বাংলাদেশগত কয়েক বছর ভারত থেকে গরু আসা কমেছে অনেকটাএতে পাল্টে গেছে চিত্রএখন কোরবানির পশুর চাহিদা মিটছে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পশু দিয়েইচট্টগ্রামে এবার কোরবানি পশুর ৫০ শতাংশের বেশি জোগান দিচ্ছে স্থানীয় খামারগুলোজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে এবার সম্ভাব্য কোরবানির পশুর চাহিদা ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬৫টিএর মধ্যে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৭৫ গরু, ৭১ হাজার ৩৬৫ মহিষ, ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩ ছাগল, ভেড়া ৫৮ হাজার ৬৯২ ও অন্য পশু ৮৮টিএর বিপরীতে কোরবানির জন্য পশুর মজুত রয়েছে ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯টিসব মিলিয়ে ঘাটতি ৩৩ হাজার ৪০৬টি পশুরপ্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো নজরুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার খামার রয়েছেএসব খামার থেকে অন্তত চার লাখ কোরবানির পশু বিক্রি হবে, এর বড় অংশই গরুআমাদের হিসাবে এসব খামার চট্টগ্রামের মোট চাহিদার ৫০-৫৫ শতাংশ পূরণ করবেবাকি ৪৫ শতাংশ স্থানীয় গৃহস্থ ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যাপারীরা জোগান দেবেনতিনি বলেন, আশপাশের জেলাগুলোর চেয়ে চট্টগ্রামের মানুষ বেশি কোরবানি দেনফলে প্রতি মৌসুমে কোরবানির পশুর ঘাটতি থাকেচট্টগ্রামের ঘাটতি পূরণে পার্শ্ববর্তী রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত করা হয়েছেএছাড়া প্রতি বছর দেশের উত্তরাঞ্চলের পাবনা ও কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রামে কোরবানির পশু আসেসব মিলিয়ে আমরা মনে করছি পশু ঘাটতির খুব একটা সমস্যা হবে না
তবে চট্টগ্রাম ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবে চট্টগ্রামের স্থানীয় খামার থেকে সাড়ে তিন লাখের মতো পশু বাজারে আসতে পারেক্ষুদ্র গৃহস্থ ও চট্টগ্রামের বাইরে থেকে নিয়ে আসা গরু দিয়েই চট্টগ্রামের কোরবানির পশুর চাহিদার বড় অংশ পূরণ হবেতারপরও ১৫-২০ শতাংশ পশুর ঘাটতি থাকতে পারে
চট্টগ্রাম ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রামে শুধু কোরবানির গরু প্রস্তুত করে এমন খামারের সংখ্যা সাড়ে তিনশ থেকে চারশএসব খামারে গড়ে ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০টি পর্যন্ত গরু মোটাতাজা করা হয়এর বাইরে ১০ থেকে ৩০টি গরু মোটাতাজা করে এমন খামারের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজারখামারভিত্তিক পশু লালপালনকারীদের কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখের মতো কোরবানির পশু বাজারে আসবেএছাড়া জেলার ক্ষুদ্র গৃহস্থ ও কৃষকরা প্রয়োজনীয় পশুর একটি বড় অংশ জোগান দেবেনএর সঙ্গে যোগ হবে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের গৃহস্থদের গরুসব মিলিয়ে এ সংখ্যা আনুমানিক আরও তিন লাখচট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় অ্যাগ্রো ফার্ম নাহার অ্যাগ্রোপ্রতি বছর প্রতিষ্ঠানটি কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত করেনগরের বড় ক্রেতাদের নজরও থাকে এ ফার্মের ওপর
নাহার অ্যাগ্রোর কর্মকর্তা মনোজ কুমার বলেন, আমরা এবার কোরবানি উপলক্ষে ৫০০ গরু প্রস্তুত করেছিএর মধ্যে আশা করছি সাড়ে তিনশ থেকে চারশ গরু বিক্রি হবে
চট্টগ্রামের শিকলবাহা এলাকার শাহ আমানত অ্যাগ্রো ফার্মের ম্যানেজার মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, চলতি বছর আমরা ১০০টি বড় জাতের গরু তৈরি করেছিএর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা দামের গরু রয়েছেআমাদের অধিকাংশ গরুর ক্রেতা নগরের শীর্ষ ব্যক্তিরাএরই মধ্যে অনেকে গরু পছন্দ করে কিনে রেখেছেনগবাদিপশু সমৃদ্ধ পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে প্রতি বছরই চট্টগ্রামের জন্য আলাদাভাবে কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনিচট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পশুর হাট সাগরিকা ও বিবিরহাটে এসব গরুর জন্য থাকে আলাদা সারিমূলত চট্টগ্রামের বড় গরুর চাহিদার অনেকাংশই পূরণ হয় দেশে পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের গরু দিয়ে
ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রামে বাজারে বিক্রির জন্য পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে গরু লালন-পালন করা হয়এসব জেলা থেকে মূলত বড় গরু চট্টগ্রামের বাজারে আসেতা দিয়ে চট্টগ্রামের বাজারে যেটুকু ঘটতি তা পূরণ হবে
বিবিরহাটের পশু ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, কোরবানির প্রায় পাঁচমাস আগে থেকে ব্যবসায়ীরা পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়াসহ উত্তরাঞ্চল ঘুরে কোরবানির পশু কিনছেনআবার সেখানকার ব্যাপারীরাও গরু নিয়ে চট্টগ্রামের বাজারে আসেনএরই মধ্যে সেসব পশু চট্টগ্রামে আশা শুরু হয়েছেএর মধ্যে বর্ডার ক্রস ব্রাহমা, ক্রস ব্রাহমা, শাহিওয়াল, ইন্ডিয়ান গীর ষাঁড় অন্যতম
চট্টগ্রাম ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবে স্থানীয় খামার, গৃহস্থ ও আশপাশের চার জেলা থেকে চট্টগ্রামের মোট চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব হবেবাকি ২০ শতাংশ পশুর জোগান কোথা থেকে আসবে সে জবাব দিতে গিয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক অনেকটাই কৌশলী ভূমিকা নেনতিনি বলেন, ২০ শতাংশ গরুর ঘাটতি প্রায় প্রতি বছর থাকেতবে কোরবানির আগে সেসব পূরণ হয়ে যাবে, ঘাটতি থাকবে নাস্থানীয় বেশ কয়েকজন পশু ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যদিও দীর্ঘ সময় ধরে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধতারপরও বিভিন্নভাবে দেশের বাজারে প্রতি বছর ভারতের গরু আসছে
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গরু ব্যবসায়ী বলেন, মে মাসের শুরু থেকে বান্দরবানের আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছ?ড়ি সীমান্ত দিয়ে অবৈধ গরু ও মহিষ আসছেএছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চল ও সিলেট সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করা গরুর একটি বড় অংশ চট্টগ্রামের বাজারে আসছে নানাভাবে
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নরুল আবছার ইমন বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বাম হাতিরছড়া, ভালুখাইল্লা, কালাচাইন্দা, চাকঢালা, জামছড়ি, জারুলিয়াছড়ি, আশারতলী, ফুলতলী, দোছড়ির সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা দিয়ে চোরাকারবারিরা চোরাই গরু দেশে নিয়ে আসছেনগভীর রাতে এসব গরু ট্রাকে কক্সবাজারের চকরিয়া, মালুমঘাট, ঈদগাহ ও রামু হয়ে চট্টগ্রামের বাজারে পৌঁছায়
চট্টগ্রামের হাটগুলোতে পশু বিক্রি শুরু না হলেও খামারে পশু বিক্রি শুরু হয়েছে আরও আগ থেকেতবে অন্যবারের চেয়ে এবার বিক্রি একেবারেই কম বলছেন খামারিরামূলত শহরের বাসিন্দাদের পশু রাখার সুবিধা না থাকায় কোরবানির দু-একদিন আগে ছাড়া তারা পশু কেনেন নাএছাড়া স্বল্পসংখ্যক যারা কিনছেন তারা খামারেই রেখে যাচ্ছেনকর্ণফুলী উপজেলার ওজি অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী তানভীর কালাম বলেন, কোরবানি আর সপ্তাহখানেক বাকি থাকলেও খামারে এখনো গরু বিক্রি জমে ওঠেনিচলতি বছর ৪০টি গরু কোরবানির জন্য মোটাতাজা করেছিকিন্তু এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে মাত্র তিনটি
শুধু আমার খামার নয়কর্ণফুলী উপজেলায় সাড়ে নয়শ রেজিস্টার্ড খামার রয়েছেসব খামারেই একই অবস্থা বিরাজ করছেমূলত দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় মানুষ তাড়াতাড়ি পশু কিনতে আগ্রহী হচ্ছে নাসবাই ভাবছে শেষ দিকে দাম কমবেকিন্তু এত উচ্চমূল্যে লালন-পালন করা পশু আমরা কম দামে কীভাবে বিক্রি করবো
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো নজরুল ইসলাম বলেন, পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় খামারিদের পশু লালনপালনেও বেশি খরচ হয়েছেএ কারণে এবার বাজারে কোরবানির পশুর দাম বেশি থাকবেআশঙ্কা করছি, পশুর দাম বেশি হলে কোরবানিও কম হতে পারেএতে খামারিরা লোকসানে পড়বেন

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ