অপচয় বন্ধ করতে রমজান মাসে সরকারিভাবে বড় ধরনের কোনো ইফতার পার্টি না করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এ ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করেছেন তিনি। ইফতারের টাকাটা দান করে দেয়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। গতকাল বুধবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে অফিসের সময়সূচিও নির্ধারণ করা হয়। এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে এই বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কারও এ ধরনের অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা থাকলে খাদ্য কিনে গরিবদের মধ্যে বিতরণ করতে পারে। এর মূল বার্তা হচ্ছে অপচয় যেন না করি। লোক দেখানো কার্যক্রমে যেন নিজেদের নিবেদিত না করি। খাদ্য ও অর্থের অপচয় হলে ধর্মীয় দিক থেকে কোনও যৌক্তিকতা থাকে না। তিনি জানান, রমজানে সরকারি-আধা সরকারি অফিস চলবে সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। নামাজের জন্য ১টা থেকে দেড়টা বিরতি থাকবে। ব্যাংক ও আদালত নিজ নিজ অফিস সময় নিজের মতো করে ঠিক করবে।
ব্যাংকিং আইন-২০২৪ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন : মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন জানান, বিদেশি বিনিয়োগ ও প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে অফশোর ব্যাংকিং আইন-২০২৪ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তিনি বলেন, এখন থেকে তফসিলি ব্যাংক থেকে অফশোর ব্যাংকের লাইসেন্স নিতে পারবে। যারা এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অফশোর ব্যাংকিং এর অনুমোদন নিয়েছেন তাদের নতুন করে লাইসেন্স নিতে হবে না। তিনি বলেন, এই ব্যংকিং এ বিনিয়োগে থেকে যে মুনাফা হবে তাতে সরকার কোন শুল্ক আরোপ করবে না। অনাবাসি বা বিদেশিরা সরাসরি বিনিয়োগ বা টাকা রাখতে পারবে, তবে প্রবাসীরা দেশে অবস্থানরতদের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারবে।
সরকারি অর্থের অপচয় রোধে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর : পবিত্র রমজান মাসে সরকারিভাবে বড় আকারে কোন ইফতার পার্টি না করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, রমজানে সরকারিভাবে বড় আকারে কোন ইফতার পার্টি না করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া বেসরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অপচয় না করে দুস্থ দরিদ্রদের সহায়তা এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সংকলন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন : জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেয়া ভাষণগুলো সংকলন দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের শুরুতে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এবং ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘে দেয়া ভাষণ ‘সকলের তরে সকলে আমরা’ ও জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণ সঙ্কলন ‘আহ্বান’ বই দুইটির মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬-২০০১ এবং ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ১৯ বার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়ে সাধারণ বিতর্ক পর্বে অংশগ্রহণ করে ভাষণ দিয়েছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিতর্ক পর্বে বাংলায় ভাষণ প্রদানের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও প্রতিবারই মাতৃভাষায় বাংলায় বক্তব্য দিয়েছেন। ভাষণ প্রদানকালে তার বক্তব্য ইংরেজিসহ জাতিসংঘের অন্যান্য অফিসিয়াল ভাষায় একসঙ্গে ভাষান্তর করা হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিতর্ক পর্বের ভাষণে সমসাময়িক অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক নানা বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে। তার ভাষণে স্থান পেয়েছে : এমডিজি, এসডিজি, জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, বিশ্বশান্তি, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা, অভিবাসন, ইত্যাদি। প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিতর্ক পর্বে প্রদত্ত ১৯টি ভাষণ এবং সেগুলোর ইংরেজি অনুবাদের সমন্বয়ে ‘সকলের তরে সকলে আমরা’ সংকলন গ্রন্থ। প্রদত্ত ভাষণগুলো বিষয়বস্তু ও প্রাঞ্জল উপস্থাপনার দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে পরিগণিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০০৯ থেকে ২০২৩-এর অক্টোবর পর্যন্ত জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণগুলোর সংকলন গ্রন্থ ‘আহ্বান’। ভাষণগুলোর বেশিরভাগই সরকারের বর্ষপূর্তিতে দেয়া। কয়েকটি ভাষণ তিনি দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে। বিডিআর বিদ্রোহ, গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে এবং সহযোগিতা চেয়ে তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। এছাড়া বাংলা নববর্ষ, ঈদ, স্বাধীনতা এবং বিজয় দিবস উপলক্ষেও তিনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কয়েকটি ভাষণ দিয়েছেন। বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রদত্ত ভাষণগুলোতে প্রধানমন্ত্রী সাধারণত সরকারের উন্নয়ন অর্জনসমূহ তুলে ধরার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরেছেন। এছাড়া দেশ গঠনে বিরোধীদলসমূহের গঠনমূলক ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন। সমসাময়িক ঘটনাবলি, উন্নয়ন অর্জন, দেশগঠনে প্রধানমন্ত্রীর দর্শন ও ভাবনা এবং সর্বোপরি জনগণের সেবক হিসেবে তার ভূমিকার বিষয়টি এসব ভাষণে উঠে এসেছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- আপলোড সময় : ২৯-০২-২০২৪ ০৭:৪৫:৫৬ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৯-০২-২০২৪ ০৭:৪৫:৫৬ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ