রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা কম। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আদায় করেছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। সংস্থাটির সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ৩৮ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা কম। আর মূল বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ৫৮ হাজার কোটি টাকা। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে গত অর্থবছরে ১২ দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এনবিআরের সাময়িক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটে রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। তবে রাজস্ব আদায়ে কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি না থাকায় সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে সংস্থাটিকে মোট ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয় সরকার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআর ৩ লাখ ১৯ হাজার ৭৩১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সংস্থাটিকে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, গত অর্থবছরের শুরু থেকেই আমদানিকে নিরুৎসাহিত করা হয়। আমদানি ঋণপত্র বা এলসি খোলার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি ছিল। সে কারণে বড় একটা নেতিবাচক প্রভাব ছিল পুরো অর্থবছরে। তারপরও সামগ্রিক রাজস্ব সংগ্রহের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক। যদিও শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি অর্থবছরে যে লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে, সেটা আরও বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে হচ্ছে। তবে লক্ষ্য অর্জনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এনবিআর।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চলমান ঋণ কর্মসূচির শর্ত ছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারে কর-জিডিপির অনুপাত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানো। আইএমএফ গত অর্থবছরে বাংলাদেশকে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা কর-রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। এ কর রাজস্বের মধ্যে এনবিআর-বহির্ভূত করও অন্তর্ভুক্ত।
এনবিআর-বহির্ভূত করের মধ্যে রয়েছে মাদক শুল্ক, যানবাহন কর, ভূমি রাজস্ব, স্ট্যাম্প বিক্রয় (নন-জুডিশিয়াল) ও সারচার্জ। এসব খাত থেকে গত অর্থবছর ১৯ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্ররুয়ারি) এসব খাত থেকে ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়েছে। পরবর্তী চার মাসে এর সমান রাজস্ব এলেও পুরো অর্থবছরে তা হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ আইএমএফের দেয়া লক্ষ্যমাত্রা থেকে কর-রাজস্ব থেকে সরকার পিছিয়ে থাকছে অন্তত ১২ হাজার কোটি টাকা।
আইএমএফ গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে তিন কিস্তিতে প্রায় ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় হয়েছে। গত জুনভিত্তিক শর্ত বাস্তবায়ন সাপেক্ষে চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের কথা রয়েছে। সংস্থাটির দেয়া অন্যান্য শর্ত পূরণ করা সম্ভব হলেও কর রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে থেকেছে সরকার। তবে এ দুটি ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা কয়েক দফা কমিয়ে এখন পর্যন্ত ঋণ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে আইএমএফ। অবশ্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে সরকার। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট সাত কিস্তিতে পুরো অর্থ দেয়ার কথা। এ ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে বেশ কিছু শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় করেছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। সংস্থাটির সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ৩৮ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা কম। মূল বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ৫৮ হাজার কোটি টাকা
রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি এনবিআর
- আপলোড সময় : ২৭-০৭-২০২৪ ১২:০৭:৪৭ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৭-০৭-২০২৪ ১২:০৭:৪৭ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ