কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মুক্তি পেয়েছেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী ও গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও নওগাঁ জেলা বিএনপির দেড় শত নেতাকর্মী।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে নাশকতার মামলায় গ্রেফতার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ বিএনপি-জামায়াতের এক হাজারের বেশি নেতাকর্মীর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৬টার দিকে তিনি জামিনে মুক্তি পান। এ সময় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তির আগে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত জামিনের আদেশ দেন।
এ সময় উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে নিপুণ বলেন, শেখ হাসিনা নাকি পালিয়ে যান না, ঠিকই তো গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। এর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। আজ আমি কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে সেই মুক্ত বাংলাদেশে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলতে পারছি। এ জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রায়েরবাজারের বাসা থেকে বিটিভি ভবনে হামলার ঘটনায় রামপুরা থানায় দায়ের করা মামলায় অসুস্থ নিপুণকে গ্রেফতার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
এদিকে মুক্তি গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর দুপুরে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। বিষয়টি নিশ্চিত করে সংগঠনটির দফতর সম্পাদক শাকিলউজ্জামান। এর আগে, গত ১ আগস্ট রাজধানীর কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় নুরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। অপরদিকে নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নওগাঁ পৌরসভার মেয়র নজমুল হক ছনিসহ বিএনপি-জামায়াতের ১৫০ নেতাকর্মী কারামুক্ত হয়েছেন। গতকাল দুপুর আড়াইটা থেকে একে একে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন নেতাকর্মীরা।
এসময় কারাগারের বাইরে কয়েক হাজার নেতাকর্মী তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন। এসময় নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজমুল হক ছনি জানান, দীর্ঘদিন
পরে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে আনন্দ র্যালি করে বিএনপি। এরপর দলীয় কার্যালয় মুক্তির মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ জামিন আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনপ্রাপ্ত বিএনপি নেতাদের মধ্যে রয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুর রহমান শিমুল, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন এ্যানি প্রমুখ।
জামিনপ্রাপ্ত জামায়াত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন-দলের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং গাজীপুর জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি ড. মো. সামিউল হক ফারুকী, শিবিরের সাবেক সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীতে নাশকতার অভিযোগে একাধিক মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি (বিজেপি) ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, কর ফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০টিরও বেশি মামলা হয়।
গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আইনজীবী হেলাল উদ্দিন জানান, সবগুলো মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। যে মামলাগুলো সাজা হয়েছিল, তার চেয়ে বেশি সময় ধরে জেলে আছেন। কাশিমপুর কারাগারে যাচ্ছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি কারামুক্ত হবেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

নিপুণ-নুরু-গিয়াস উদ্দিন মামুনসহ শতশত আন্দোলনকারী নেতাকর্মী মুক্তি পেয়েছেন
বিএনপি-জামায়াতের এক হাজারের বেশি নেতাকর্মীর জামিন
- আপলোড সময় : ০৭-০৮-২০২৪ ১২:৪১:৪৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৭-০৮-২০২৪ ১২:৪২:০৩ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ