ঢাকা , রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নগরে ফিরছে মানুষ পথে পথে ভোগান্তি এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো-আনু মুহাম্মদ প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছেন-জামায়াত ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক দেশে স্বস্তি এনেছে বললেন দুদু মামলার আগেই আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক, বড় পরিবর্তন আসছে আইনে মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা রেমিটেন্সে ধস আয়রন ডোম চুরমার ইসরায়েলি সদর দফতর গুঁড়িয়ে দিল ইরান ইরানের কাছে ধরাশায়ী ইসরায়েল মেসিদের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপ মাঠে ফেরায় তোড়জোড় গগবার অনিশ্চয়তায় ক্যাবরেরার ভবিষ্যৎ ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আয়োজক হওয়ার প্রস্তাবকে আইসিসির ‘না’ বিগব্যাশে ডাক পেলেন বাবর আজম পাকিস্তানের কোচের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন ইউসুফ তারকাবিহীন দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসবে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলি হামলায় নিন্দার ঝড় ইরানের পাল্টা হামলার শঙ্কায় খাবার ও পানি মজুত করছে ইসরায়েলিরা সবকিছু শেষ হওয়ার আগেই চুক্তি করুন ইরানকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
ফলো আপ : পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে ক্ষোভ শঙ্কা * টেন্ডার বাণিজ্যে দুর্নীতির অভিযোগ * ব্যাংক কার্যক্রমে বাধা এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ * অফিসের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে অনিয়ম

সাবেক এমডির বিদায় : অনিয়মে জড়িত দুই সিস্টেম এনালিস্ট বহাল

  • আপলোড সময় : ২৭-০৮-২০২৪ ০১:০৯:১২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০৮-২০২৪ ০১:০৯:১২ পূর্বাহ্ন
সাবেক এমডির বিদায় : অনিয়মে জড়িত দুই সিস্টেম এনালিস্ট বহাল
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের বিভিন্ন কার্যক্রমে অনিয়ম, দুর্নীতি, এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই উঠছে। বিশেষ করে নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, টেন্ডার বাণিজ্য এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ব্যাংকের অভ্যন্তরে অসন্তোষ বিরাজ করছে। ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ মো. জামিনুর রহমান এবং দুই সিস্টেম এনালিস্ট-আল্লামা মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া তানহার ও সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট শাহেদ আলমগীরকে এসব দুর্নীতির মূল হোতা হিসেবে অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও এমডি জামিনুর রহমানের চুক্তির মেয়াদ বাতিল করা হয়েছে, তবে সিস্টেম এনালিস্টরা এখনও বহাল রয়েছেন, যা নিয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ, শঙ্কা ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে যে, সাবেক এমডি জামিনুর রহমানের সাথে সিস্টেম এনালিস্টরা মিলে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের প্রায় সব খাতে দুর্নীতির বিস্তার ঘটিয়েছেন। টেন্ডার বাণিজ্যে তাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের অভিযোগ অনুযায়ী, ১৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে তারা সর্বনিম্ন বিড করেও টেন্ডার পায়নি। এই টেন্ডার পেয়ে গেছে ১১,৯৩,৫২,৪৩০ টাকায় বিড করা অন্য একটি প্রতিষ্ঠান, যার পরিমাণ স্মার্ট টেকনোলজিসের বিড থেকে প্রায় ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বেশি। এই ঘটনায় সিস্টেম এনালিস্টদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
ইয়াহ্?ইয়া তানহার দীর্ঘদিন ধরে মন্ত্রণালয়ে প্রেষণে থাকার সুবাদে সরকারের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে ব্যাংকে তার প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি এবং শাহেদ আলমগীর মিলে ব্যাংকের প্রতিটি বিভাগে একটি ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছিলেন। তার সুপারিশ বা হুকুম ছাড়া ব্যাংকের কোনো কাজই সম্পন্ন হতো না। বিশেষ করে, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্ক রেখে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের একপ্রকার জিম্মি করে রেখেছিলেন তিনি।
গত ১১ আগস্ট, দুই সিস্টেম এনালিস্ট ব্যাংকের সিবিএস সার্ভার বন্ধ করে ব্যাংকের কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করেন এবং বিভাগের সকল কর্মচারীকে বাড়িতে চলে যেতে নির্দেশ দেন। এর ফলে, ব্যাংকের প্রায় পাঁচশত শাখা ডে ক্লোজ করতে ব্যর্থ হয়। এছাড়াও ১৫ আগস্ট হেড অফিসে হামলার ঘটনায় তাদের ভূমিকা ছিল। শাহেদ আলমগীরের নির্দেশে কিছু উশৃঙ্খল কর্মচারী ও বহিরাগত সন্ত্রাসী মিলে প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর হামলা চালায়, যাতে বেশ কয়েকজন গুরুতরভাবে আহত হন।
অভিযোগ রয়েছে যে, সিস্টেম এনালিস্টরা অফিসের বিভিন্ন ক্রয়, নিয়োগ, বদলি এবং পদোন্নতিতে বড় ধরনের অনিয়ম করে আসছেন। তাদের দ্বারা সংগঠিত দুর্নীতির কারণে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বারবার প্রতিবাদ করেও কোনো ফল পাননি। বরং তাদেরকে হয়রানিমূলক বদলি, সাময়িক বরখাস্তের মত নিপীড়নের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
এমডি জামিনুর রহমানের বিদায়ের পরেও, এই দুই সিস্টেম এনালিস্ট ব্যাংকে বহাল থাকায়, ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের অনিয়মের আশঙ্কা করছেন। তারা মনে করছেন, যদি এই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া না হয়, তবে তারা পরবর্তীতে নিয়োগপ্রাপ্ত এমডিকে সাথে নিয়ে পুনরায় দুর্নীতির সাম্রাজ্য কায়েম করতে পারেন। এজন্য, তারা দেশের স্বার্থে এবং ব্যাংকের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সিস্টেম এনালিস্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি ৪৯২ জন অফিস সহকারী ও ৭২ জন নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগে বাণিজ্য করেছে সাবেক এমডি এবং দুই সিস্টেম এনালিস্ট সিন্ডিকেট। এই নিয়োগে জনপ্রতি ঘুষ নেওয়া হয়েছে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। যেসব জেলা থেকে প্রার্থীরা বেশি টাকা দিয়েছে, সেই সব জেলা থেকে বেশি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুই সিস্টেম এনালিস্ট তাদের এজেন্টদের মাধ্যমে এই টাকা সংগ্রহ করেছে। এছাড়া, যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে, তাদের নিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য আলাদাভাবে পরীক্ষার খাতায় লেখানো হয়েছে এবং তাদের পরীক্ষার খাতা পরবর্তীতে অন্য সাধারণ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্তদের পরীক্ষার খাতা পুনঃপরীক্ষণ করলেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে সিস্টেম এনালিস্ট আল্লামা মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া তানহার ও সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট শাহেদ আলমগীরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক খান ইকবাল হাসানেরও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স