গাইবান্ধা থেকে মিলন খন্দকার
গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম রফিকুল হাসান টেন পার্সেন্ট টাকা অগ্রীম ঘুষ নেয়ার পর টেন্ডার ছাড়াই প্রভাবশালী ঠিকাদারদের কাজ দেন বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কিছু বঞ্চিত সাধারণ ঠিকাদার। এ নিয়ে সরকার পতনের পর থেকে ভয়ে অফিস করছেন না ওই নির্বাহী প্রকৌশলী। সব কাজ সারছেন বাংলোতে।
গাইবান্ধা গণপূর্ত দফতর জানায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা জজকোর্ট, দায়রা জজ এর বাসভবন, জেলা সদর হাসপাতাল, জেলা কারাগার, গণপূর্ত অফিসের বাউন্ডারি, পুলিশ লাইন চারশ ব্যারাকসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের সংস্কার ও মেরামত (সিভিল এন্ড ইলেকট্রিক) কাজ চলমান ।
বঞ্চিত সাধারণ ঠিকাদারেরা অভিযোগ করেন, নিয়মানুযায়ী এলটিএম-এর মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচিত করে কাজ বাস্তবায়ন করবে প্রতিষ্ঠানটি। তা না করে বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম রফিকুল হাসান প্রভাবশালী ঠিকাদারদের কাছে থেকে টেন পার্সেন্ট টাকা অগ্রীম ঘুষ নিয়ে কাজের দায়িত্ব দেন। কাজে যা বরাদ্দ ধরা হয়, তা বর্তমান বাজারে দ্বিগুণ টাকা। তারা আরও বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী ও তার পছন্দের কয়েকজন ঠিকাদার মিলে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। যেসব সাধারণ ঠিকাদারেরা অগ্রীম ঘুষের টাকা দিতে পারে না, তারা কাজও পাননা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, এই সিন্ডিকেট এর ভয়ে একদিকে যেমন সাধারণ ঠিকাদারেরা প্রতিবাদ করার সাহস পায় না, অন্যদিকে কর্মকর্তারাও থাকে আতঙ্কে। কাজ শুরু করার আগেই বিল ছাড়ের জন্য চাপও থাকে সবসময়। এমনকি অর্ধেক কাজ করার পরে চূড়ান্ত বিল ছাড় করতে বাধ্য করেন নির্বাহী প্রকৌশলী। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, দিনবদলের সাথে সাথে পাল্টে যায় চিত্র। সাধারণ ঠিকাদারেরা শুরু করে প্রতিবাদ। এর পর থেকে প্রায় মাস খানেক হয় ভয়ে অফিসে আসেন না নির্বাহী প্রকৌশলী। সব ফাইলে সই করেন রাতে তার বাংলোয়। এতে করে কর্মচারী -কর্মকর্তারাও পড়েন বিপাকে।
সূত্রটি জানায়, প্রায় এক কোটি টাকা তিনি ঠিকাদারদের কাছে থেকে অগ্রীম নিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে সাধারণ ঠিকাদারেরা প্রতিবাদী হয়ে যে পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি করেছে, এতে তিনি ভয়ে আছেন। তাই সচিবালয়ে তদবির করে অন্যত্র বদলি হওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রফিকুল হাসানের কাছে থাকা সরকারি ০১৮৮২-১১৫৩৩০ নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
