ঢাকা , রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নগরে ফিরছে মানুষ পথে পথে ভোগান্তি এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো-আনু মুহাম্মদ প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছেন-জামায়াত ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক দেশে স্বস্তি এনেছে বললেন দুদু মামলার আগেই আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক, বড় পরিবর্তন আসছে আইনে মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা রেমিটেন্সে ধস আয়রন ডোম চুরমার ইসরায়েলি সদর দফতর গুঁড়িয়ে দিল ইরান ইরানের কাছে ধরাশায়ী ইসরায়েল মেসিদের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপ মাঠে ফেরায় তোড়জোড় গগবার অনিশ্চয়তায় ক্যাবরেরার ভবিষ্যৎ ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আয়োজক হওয়ার প্রস্তাবকে আইসিসির ‘না’ বিগব্যাশে ডাক পেলেন বাবর আজম পাকিস্তানের কোচের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন ইউসুফ তারকাবিহীন দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসবে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলি হামলায় নিন্দার ঝড় ইরানের পাল্টা হামলার শঙ্কায় খাবার ও পানি মজুত করছে ইসরায়েলিরা সবকিছু শেষ হওয়ার আগেই চুক্তি করুন ইরানকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : ভারতীয় মিডিয়ায় অপপ্রচার, হাসিনা-মোদির ষড়যন্ত্র

  • আপলোড সময় : ১৫-০৯-২০২৪ ১২:১৬:৫৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-০৯-২০২৪ ১২:১৬:৫৬ পূর্বাহ্ন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : ভারতীয় মিডিয়ায় অপপ্রচার, হাসিনা-মোদির ষড়যন্ত্র
মো. হায়দার আলী
কি নিয়ে লিখব ভাবছিলাম, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, নতুন কারিকুলাম ও এর ত্রুটিপূর্ণ মূল্যায়ন পদ্ধতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট কুচক্রী মহল, এলাকার কিছু লোক ও কমলমতি শিক্ষার্থীগণকে ভুল বুঝিয়ে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা, পরে   ভুল বুঝতে পেরে  এলাকার অভিভাবক, শিক্ষার্থীরা ওইসব  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহঃ প্রধান, শিক্ষকদের হাতে পায়ে ধরে, কান্না করে,  ফুল দিয়ে প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনছে। কিন্তু শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক সম্পর্ক, শিক্ষার পরিবেশ যা নষ্ট হওয়ার তা তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সুন্দর পরিবেশ ফিরাতে অনেক সময় লেগে যাবে। বিগত  সরকারের এমপি, মন্ত্রী, মেয়র, কাউন্সিলর, উপজেলা  চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, কিছু শিক্ষা কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের নেতা পাতিনেতারা অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহঃ প্রধান শিক্ষক, সুপার, সহঃ সুপার শিক্ষকগণকে বাধ্য করে দলীয় কাজে ব্যবহার করেছেন। এদের মধ্যে কিছু কিছু  ব্যক্তি অতি উৎসাহিত হয়ে শিক্ষকগণ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের পদ-পদবি দখল করে নিয়োগবাণিজ্য  নানা অপকর্মের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন, অনেকে ১৫ বছরে অটো চয়েন্স হিসেবে প্রিজাইডিং,  সহকারী প্রিজাইডিং,  পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের আওয়ামী সরকার আমূলে অনুষ্ঠিত  একটি নির্বাচনেও দায়িত্ব দেননি অন্য মতের কারণে কিংবা অনৈতিক কাজ করতে রাজি হবে না বলে। সে যাই হোক,  নির্বাচনী দায়িত্ব পেয়ে  লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে রাতের আঁধারে কিংবা প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মেরেছে, ভোট কেন্দ্রে ভোটার না থাকলেও বিশাল ভোটের ব্যবধানে সরকার দলীয়  প্রার্থীদের  জয়লাভ করিয়েছেন। ওই সব কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারাও জড়িত ছিল। ক্ষোভ সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে,  যারা এ কাজের সাথে সরাসরি জড়িত ছিল তারা জামায়াত বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে এখন মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। তাদের দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন। আবার সামনের চিয়ারে আসন পাচ্ছে এদের কোনো দল নেই এরা সুবিধাবাদী, এরাই সকল নষ্টের মূল। এব্যপারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। তবে দেশে সমাজে শান্তি আসবেই। তবে শিক্ষক, শিক্ষার্থী অভিভাবক, শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে নয়। পদত্যাগে বাধ্যকরা  সংক্রান্ত ছবি, ভিডিও পত্রিকায়, ইলেকট্রনিক মিডিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। অনেকে জেনে না  জেনে নানা নেগেটিভ,  পজেটিভ মন্তব্য করছেন এব্যপারে লিখার জন্য তথ্য উপাত্ত নিয়ে ল্যাপটপ ওপেন করলাম, কিন্তু চারদিকে দেখি বর্তমান সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র,  ভারতীয় মিডিয়াগুলো প্রধান ভূমিকা পালন করেছে তাই লেখার থিম পরিবর্তন করে আল্লাহর নাম নিয়ে  এ সম্পর্কে লেখার চেষ্টা করছি, ৫ সেপ্টেম্বর দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের শিরোনামে বলা হয়েছে ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব পড়বে’, ইউনূসের দাবি, ভারতে বসে হাসিনার বিবৃতি বন্ধ করতে হবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের মতে, আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি সকলে ইসলামপন্থি এবং শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে, এমন ভাবনা ছাড়তে হবে। ভারতের মাটিতে বসে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই সঙ্গে পিটিআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্য, ‘হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের সমস্তটাই ইসলামি রাজনৈতিক শক্তি, এমন ভাবনা ছাড়তে হবে ভারতকে।’ এর পরেই দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য নয়াদিল্লি এবং হাসিনার ‘করণীয়’ সম্পর্কেও বার্তা দিয়েছেন ইউনূস। তিনি বলেন, ‘যদি বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ না করা পর্যন্ত ভারত তাকে (হাসিনা) রাখতে চায়, তবে প্রথম শর্ত হলো তাকে চুপ থাকতে হবে।’ এর পরেই তার মন্তব্য, ‘বাংলাদেশ যখন ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ককে মূল্য দেয়, তখন নয়াদিল্লিকে অবশ্যই চিরাচরিত ধারণার বাইরে বেরোতে হবে।
জনবিক্ষোভের জেরে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে বিমানে ঢাকা থেকে উত্তর প্রদেশের হিন্দন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে চলে এসেছিলেন হাসিনা। সেই থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তরফেও সরকারিভাবে তাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানানো হয়নি নয়াদিল্লির কাছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বর্ষপূর্তির আগে গত ১৩ অগস্ট প্রথম বিবৃতিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশে অস্থিরতা এবং ক্ষমতার পালাবদলের ঘটনার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন হাসিনা। সাম্প্রতিক হিংসাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তির দাবিও তুলেছিলেন তিনি। ওই বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘গত জুলাই মাস থেকে আন্দোলনের নামে নাশকতা, অগ্নি, সন্ত্রাস ও সহিংসতার কারণে অনেকগুলো তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে।
 ছাত্র, শিক্ষক, পুলিশ, এমনকি অন্তঃসত্ত্বা, নারী পুলিশ, সাংবাদিক, সংস্কৃতিসেবী, কর্মজীবী মানুষ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী, পথচারী এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যারা সন্ত্রাসী আগ্রাসনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের প্রতি শোকজ্ঞাপন করছি এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’ ইউনূসের অভিযোগ, ভারতের মাটি থেকে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনার এমন বিবৃতি নয়াদিল্লি-ঢাকা সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে। ইউনূসের মন্তব্য, ‘সে কারণেই আমরা হাসিনার বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ চাইছি।’ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট ছিল। ভারত-বাংলাদেশ সমঝোতা অনুযায়ী কূটনৈতিক (ডিপ্লোম্যাটিক) বা সরকারি (অফিশিয়াল) পাসপোর্ট থাকলে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক অন্তত ৪৫ দিন কোনো ভিসা ছাড়াই ভারতে অবস্থান করতে পারেন। কিন্তু ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করায় তার ভারতে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। ঠিক কোনো ‘ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসে’ হাসিনা ভারতে রয়েছেন, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদি সরকার কিছু জানায়নি। এর মধ্যে হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে কয়েকশ খুনের মামলা করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করেছে। প্রধান উপদেষ্টার এমন মন্তব্য নরেন্দ্র মোদিসহ ভারত তেলে-বেগুনে জ¦লে উঠেছে। ভারতীয় দোসর দেশি মিডিয়াগুলো বাংলাদেশ ও অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অপপ্রচার চালাচ্ছে। মনে হচ্ছে হাসিনার পতন হয়নি হয়েছে ভারতের।
গুম, খুন, বিচারহীনতা, বাকস্বাধীনতা হরণ, ভোটাধিকার হরণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, লাগামহীন দুর্নীতি, ইতিহাস বিকৃতি, স্বজনপ্রীতি, একদলীয় শাসন, সংবিধানের দোহাই দিয়ে সংবিধানের অবমাননার নিকৃষ্ট স্বেচ্ছাচারিতা ও উচ্ছৃঙ্খলতার নগ্ন চেহারা দেখতে দেখতে ক্লান্ত, বিরক্ত দেশের মানুষ এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এর পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছে। নিজের জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশের অবৈধ ও অনৈতিক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচারী হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। কুখ্যাত স্বৈরশাসকদের মতো অজ্ঞাত স্থান থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে পলায়ন এবং তার সরকারি বাসভবনে ঢুকে উন্মত্ত জনতার উল্লাস ও বাস ভবনে আগুন বিশ্ববাসীকে হলিউডি সিনেমার দৃশ্যের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো শাসকই যে টিকে থাকতে পারেন না, বাংলাদেশ আবারও তা প্রমাণ করেছে। গণঅভ্যুত্থানে কর্তৃত্ববাদী শাসক স্বৈরাচারিণী মাদার অফ মাফিয়া শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে, এই মধ্যবর্তী সময়ে শুরু হয়েছে ‘ভারত ষড়যন্ত্র’। হিন্দুত্ববাদী ভারত দীর্ঘদিন থেকে শেখ হাসিনাকে ‘পুতুল সরকার’ হিসেবে ক্ষমতায় রেখেছিলেন। জনরোষে শেখ হাসিনা পালানোয় তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে এখন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিত, উসকানিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশের কিছু গণমাধ্যম। ভারতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ এবং জ¦ালাও পেড়াওকে অতিরঞ্জিত প্রচার করছে। ভারতীয় দোসর দেশি গণমাধ্যম থেকে দেশবাসীকে সতর্ক থাকুন।
শেখ হাসিনা পালানোর পর তার মন্ত্রী-এমপি ও দোসররা কেউ গ্রেফতার হয়েছে, কেউ আত্মগোপন করেছেন। এমনকি আওয়ামী লীগের নেতারা শেখ হাসিনাকে বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে অভিযুক্ত করছেন। কিন্তু কিছু ইংরেজি-বাংলা গণমাধ্যম দেশের বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে উদ্বুদ্ধ না করে উল্টো পথে হাঁটছে। নরেন্দ্র মোদির চেলা চামুচ ও ভারতীয় মিডিয়ার সঙ্গে সুর মিলিয়ে দেশীয় গণমাধ্যমগুলো হামলা, অগ্নিসংযোগে জঙ্গি কানেকশন খুঁজছেন এবং মোদিকে খুশি করতে উসকানিমূলক খবর ফলাও করে প্রচার করছেন। শেখ হাসিনার দুঃশাসনের ১৬ বছরে দেশে ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষ খুন হয়েছেন। কয়েকশ মানুষকে গুম করে কাউকে হত্যা আর কাউকে আয়নাঘরে রাখা হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতারা দর্জি বিশ্বজিৎ দাস ও বুয়েটের আবরার ফাহাদকে কি পৈশাচিকভাবে হত্যা করেছে সে লোমহর্ষক দৃশ্য ওই গণমাধ্যমগুলো ভুলে গেছে। বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের পৈশাচিকতা, জুলুম নির্যাতন এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগের খুন-জখম ক্রিয়াকলাপ এইসব মিডিয়ার সাংবাদিকদের আহত করে না। এই মুখচেনা ইংরেজি-বাংলা গণমাধ্যমগুলো ওইসব লোমহর্ষক পৈশাচিকতা চোখে দেখে না।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মাত্র কয়েকদিনে যে এক হাজারের বেশি ছাত্র-জনতা পুলিশ ও ছাত্রলীগের গুলিতে শহীদ হলো সেটাও এদের কাছে বড় ঘটনা নয়। এদের কাছে বড় ঘটনা হলো নতুন সরকার গঠনের আগে বিক্ষুব্ধ মানুষ ১৫ বছরের ক্ষোভ প্রকাশে জ¦ালাও পোড়াও করেছে এটা। বিক্ষুব্ধ মানুষ প্রতিশোধ নিতে কোলাটারাল ড্যামেজ (অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু, আঘাত, ক্ষতি) হয়েছে (এটা অনাখাক্সিক্ষত এবং সমর্থনযোগ্য নয়) সেগুলো ফলাও করে প্রচার করছে। এর সঙ্গে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ জুড়ে দিয়েছে। কারণ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বিষয় ভারত বেশি খায়। শেখ হাসিনা পালানোর পরই গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা প্রথমেই দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা হিন্দুদের মন্দির বাড়িঘর প্রহরা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কারামুক্ত হয়েই ‘প্রতিশোধ নয়, সবাই মিলে দেশ গড়ে তুলতে হবে’ দেশবাসীর উদ্দেশে এই বার্তা দিয়েছেন। তিনি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতা দূর করতে সারাদেশে বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদল, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জামায়াত ইসলামি আন্দোলনসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বিক্ষুব্ধ দেশবাসীর প্রতি একই আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক প্রহরা বসানোর নির্দেশ দেন। গণমাধ্যমে সচিত্র খবর প্রচার হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী সমর্থকরা মন্দির ও সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রহরা দিচ্ছেন। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও প্রতিবেশী হিন্দু ভাইবোনদের প্রতি সুদৃষ্টি রাখছেন। এ অবস্থায় গণমাধ্যম, বুদ্ধিজীবী ও সমাজের দায়িত্বশীল সবার উচিত গণঅভ্যুত্থানের সুফল যাতে ছিনতাই না হয়ে যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা।
নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত মধ্যবর্তী এই সময়টুকুতে দেশকে স্থিতিশীল রাখতে সবার উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে সুনাগরিকের দায়িত্ব পালন করা।  কিন্তু পলাতক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মুরুব্বি ভারতের কিছু গণমাধ্যমে বাংলাদেশের জনতার বিজয়ের চিত্র তুলে ধরার বদলে জ¦ালাও-পোড়াওয়ে উসকানিমূলক খবর প্রচার করছে এবং মানুষকে আরো উষ্কে দিয়ে ধর্মীয় বিভেদের অপচেষ্টা করছে। তাদের কাঁদে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশের কিছু মিডিয়া যারা পতিত শেখ হাসিনার তাঁবেদারি করেছেন এবং দিল্লির নেকনজরে থাকার চেষ্টা করছেন সেগুলো সংখ্যালঘুদের তথাকথিত নির্যাতনের মনগড়া চিত্র প্রকাশ করছে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৫ বছর মানুষের ওপর যে জুলুম নির্যাতন করেছে। সেখানে মুসিলম ধর্মীয় ও হিন্দু ধর্মীয় ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের হয়ে সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম করেছে। সংগতভাবে আওয়ামী লীগের ওই নেতাকর্মীদের ওপর মানুষ বিক্ষুব্ধ। বিক্ষুব্ধ মানুষের কাছে ধর্মীয় কোনো বিষয় নেই, যারা আওয়ামী লীগের হয়ে মানুষকে অত্যাচার করেছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিচ্ছে। অথচ সেটাকে ‘ধর্মীয় ট্যাগ’ দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ভারতকে খুশি করতে দেশীয় গণমাধ্যমের কেন এই উষ্কানি? বাংলাদেশের জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের দাবি কি অন্যায়? দেশের ভোটাররা দীর্ঘ কত বছর থেকে ভোট দিতে পারছেন না? হিন্দুত্ববাদী ভারত কখনোই বাংলাদেশের এবং সাধারণ মানুষের প্রকৃত বন্ধু ছিল না। গত ৬ আগস্ট বাংলাদেশে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার পতন ভারত তার একজন বন্ধুকে হারালো। শেখ হাসিনা ছিলেন ভারতের প্রকৃত বন্ধু’। এর অর্থ কি? ভারত সরকার সিকিমের লেন্দুপ জতির মতো শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের ক্ষমতায় রেখে নিজেদের স্বার্থ আদায় করেছেন।
১৬ বছরে দুই দেশের মধ্যে দেড় শতাধিক চুক্তি করেছেন সবগুলো ভারতের স্বার্থে। এখন সেই হাসিনা উৎখাতের পর মোদি গংদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা সংখ্যালঘু নির্যাতনের মনগড়া অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলছেন। কিন্তু দেশের কিছু ইংরেজি বাংলা গণমাধ্যম দিল্লিকে খুশি করতে অযাচিতভাবে বিপ্লব পরবর্তী হত্যা-ধ্বংস, হিন্দুদের বাড়িতে আগুন ইত্যাদি খবর ফলাও করে প্রচার করে মোদিকে খুশি করার মিশনে নেমে গেছেন।
 শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে সাধারণ মানুষ ভয়ঙ্কর পৈচাসিক পরিবেশে দিন কাটিয়েছে। গোটা দেশটাকে জেলখানায় পরিণত করা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক দেশ অথচ মানুষ ভোটের অধিকার হারিয়েছে। নির্বাচনের নামে ভারতের নীল নকশায় পাতানো খেলার মাধ্যমে বার বার সরকার গঠন করেছে হাসিনা। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে ঐতিহ্যবাদী আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দলের লেবাসে ‘মাফিয়া চক্র’ বানানো হয়েছে। অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগকে খুনি ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বাহিনীতে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নির্দেশে যে কত মানুষ খুন হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই।
রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের আমলা থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসন, র‌্যাব, বিজিবি এমনকি সেনাবাহিনীর ভিতরে সুকৌশলে দিল্লির এজেন্ট ঢুকিয়ে শেখ হাসিনা একদিকে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেন, অন্য দিকে বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষের উপর পুলিশ ও র‌্যাব দিয়ে স্ট্রিম রোলার চালিয়েছেন। শেখ হাসিনা অপরাধ জগতে মাফিয়া এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সিন্ডিকেট তৈরি করে তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। এতে করে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে।
শীর্ষ সন্ত্রাসীর ভাই আজিজ আহমেদ, জিয়া আহসান, বেনজির আহমেদ, আসাদুজ্জামান মিয়া, মনিরুল ইসলাম, হারুনুর রশিদ, বিপ্লব কুমার সরকারের মতো ব্যক্তিদের সেনা ও পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন। তারা একদিনে রাষ্ট্রের সম্পদ লুট করেছে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষকে নির্দয়ভাবে ঠেঙিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ খুন করেছে আওয়ামী লীগের নেতাদের অবৈধ নির্দেশে। বিশ্বজিৎ দাসের খুনের দৃশ্য মনে আছে? ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের পুলিশের সামনে কীভাবে রামদা দিয়ে খুন করেছে ছাত্রলীগ নেতারা। বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবরার ফাহাদ ‘তিস্তার পানি ভারত কেন দেবে না এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেয়ায় ছাত্রলীগের নেতারা কি নিষ্ঠুরভাবে তাকে খুন করেছে। পুলিশের আইজিপির দম্ভোক্তি ‘অস্ত্র হাতে কি আমরা হাডুডু খেলবো। সোজা বুকের মধ্যে গুলি ছুঁড়বো’। আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ইসলাম বিদ্বেষী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘ঘরে ঘরে গিয়ে বিএনপির নেতাদের গুলি করে হত্যা করো’। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে রাতের অন্ধকারে কওমি মাদ্রাসার হাজারো শিক্ষার্থী হত্যার কথা মনে আছে? অপ্রিয় হলেও সত্য যে, শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারত যাওয়ার পর দেশের বিক্ষুব্ধ জনতা কিছু থানায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করেছে। ১৬ বছর যেভাবে মানুষকে জুলুম নির্যাতন, হামলা, মামলা, সম্পত্তি দখল আওয়ামী লীগ নেতারা করেছে, তাকে হাসিনার ক্ষমতাচ্যুততে মানুষ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আত্মগোপন করার পর পুলিশের অনেক কনস্টেবল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, ‘আমরা উপরের নির্দেশে মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছি। আমাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল আন্দোলনকারীদের মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে। চাকরি বাঁচানোর জন্য আমরা এত মানুষকে হত্যা করেছি। আমরা এখন পুলিশ অফিসার যারা হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন তাদের বিচার চাই।’ প্রশ্ন হচ্ছে শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীকেও শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করে আন্দোলন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা তা শোনেননি। কিন্তু পুলিশের সদস্যরা কেন এতোগুলো শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা করলো? অপ্রিয় হলেও সত্য যে, ১৬ বছরে পুলিশের নিষ্ঠুরতা, র‌্যাবের ক্রস ফায়ার, জুলুম-নির্যাতনের কথা কে না জানে? গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালানোর পর পুলিশের কয়েকজন কনস্টেবলের এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাসছে। প্রধানমন্ত্রীর ওপর মানুষ চরম বিক্ষুব্ধ হয়ে গণভবনে হাসিনার ব্যবহৃত যা যা পেয়েছে তা নিয়ে জনতা নিজেদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। পুলিশি নির্যাতনের ছাত্র আন্দোলনে ১ হাজারেরও  মানুষ খুন হয়েছে। পুলিশ প্রকাশে গুলি করে মানুষ মেরেছে। বাধ্য হয়েই বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের ধাওয়া দিয়েছে। এতে সব পুলিশ সদস্য কার্যত পলাতক ছিল। দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় শক্তিশালী পুলিশ বাহিনী আবশ্যক।
ভারতের ছাতার নিচে থেকে শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতায় থেকে জনগণকে নিয়ে যেসব ভাষা ও শব্দের ব্যবহার করেছেন সেসব শব্দ প্রিন্ট মিডিয়ায় ছাপানো সম্ভব নয়। শুধু কি তাই, আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি ও নেতারা শেখ হাসিনাকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে অবিহিত করছেন। দলের নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলে শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। ফলে বিক্ষুব্ধ কিছু মানুষ ছাত্র বিপ্লবে সাফল্যের পর শেখ হাসিনা ও তার খুনিদের ওপর নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এটা অনাকাক্সিক্ষত অনভিপ্রেত। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতের ‘র’ এর এজেন্টরা থানায় পুলিশ হত্যা, হিন্দুদের বাসা-মন্দিরে হামলা করে তার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে দিচ্ছে। দেশীয় মুখচেনা ভারতের দোসর কিছু গণমাধ্যম ফলাও করে তা প্রচার করেছে।
দিল্লির পাপেট শেখ হাসিনার পালানোর পর ভারতের গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশের জনগণ ও নতুন সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে এটা স্বাভাবিক। তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে বাংলাদেশ থেকে যে সুবিধা নিয়েছেন তা অন্য সরকারের সময় পাবেন না। হাসিনা ভারতকে সবকিছু দিয়েছেন। ৫ আগস্ট পালানোর পর মংলা বন্দর থেকে ভারতের সব জাহাজ সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে চলাচল করা ট্রেন বন্ধ রাখতে হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে সাধারণ মানুষ হাসিনা পালানোয় খুশি। কিন্তু দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকার, কিছু বুদ্ধিজীবী এবং কিছু গণমাধ্যম বেজায় চটেছেন। তারা হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে অনেক বৈধ-অবৈধ সুবিধা নিয়েছেন। দিল্লি ও কোলকাতার কিছু সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী লাখ লাখ টাকা নিয়ে আওয়ামী লীগের ভাড়াটে হিসেবে ভারত ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার গুণগান গেয়ে প্রবন্ধ নিবন্ধ লিখেছেন। সে কারণে শেখ হাসিনার গণতন্ত্র হত্যা, ১৫ বছর ধরে নির্বাচনের নামে তামাশা, ছাত্রলীগের সিরিয়াল খুন, আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘুষ-দুর্নীতি, বিদেশে টাকা পাচারসহ হাজারো অপকাণ্ড তাদের (ভারতের কিছু সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী) চোখে কোনো অপরাধ মনে হয় না। ফলে তারা শেখ হাসিনামুক্ত বাংলাদেশকে ভালো চোখে দেখবে প্রত্যাশা করা যায় না। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন জেলায় মাদ্রাসার ছাত্ররা হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘর প্রহরা দিচ্ছেন। বিএনপি, জামায়াত, ইসলামি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা দলবদ্ধভাবে মন্দির প্রহরা দিচ্ছেন। পুলিশ ও ট্র্যাফিক পুলিশ আত্মগোপন করায় রাজধানী ঢাকায় মাদ্রাসার ছাত্র ও স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মোড়ে মোড়ে ও সড়কে ট্র্যাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন। এগুলো খবর মুখচেনা ওই গণমাধ্যমগুলোতে প্রচার হয় না। শুধু দিল্লির দাদাদের খুশি করতে এবং পতিত হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালানোর যন্ত্রণা থেকে এসব অপপ্রচারের মাধ্যমে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের ক্ষেত্র তৈরি অপচেষ্টা করছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনে ভারত যে অত্যন্ত হতাশ, মর্মাহত এবং শোকেকাতর, তা বাংলাদেশের প্রতি তার আচার-আচরণে স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতন হয়নি, ভারতের পতন হয়েছে। ছাত্র-জনতার বিপুল সমর্থনের মধ্য দিয়ে গঠিত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাতে কোনোভাবে স্থির, কার্যকর ও সফল হতে না পারে, ব্যর্থ হয়, এজন্য শুরু থেকেই মোদি এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনা মিলে নানা ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করে চলেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই প্রতিবিপ্লব, গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা, জুডিশিয়ারি ক্যু, সচিবালয়ে স্বৈরাচারের দোসরদের দিয়ে আন্দোলন, ভারতের ডম্বু বাঁধ খুলে দিয়ে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি, শাহবাগে বিভিন্ন দাবিতে হিন্দু সম্প্রদায়কে দিয়ে বিক্ষোভ, ১৫ আগস্ট ঢাকায় লাখ লাখ লোক জড়ো করা, ২১ আগস্ট একই ধরনের অপচেষ্টা, তার তিন-চার দিন পর আনসারদের আন্দোলন, গার্মেন্ট শ্রমিকদের দিয়ে আন্দোলন, গত শুক্রবার সনাতন অধিকার মঞ্চের ব্যানারে পুনরায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা বন্ধ ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন এবং ৫ অক্টোবর লংমার্চ করে ঢাকা অবরোধের ঘোষণা, সীমান্তে বিএসএফকে দিয়ে পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে। এসবই যে মোদি ও তার আশ্রয়ে থাকা পলাতক হাসিনার যৌথ প্রযোজনার ষড়যন্ত্র তা দেশের মানুষের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না। এসব আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা আওয়ামী লীগেরই নেতাকর্মী ও সন্ত্রাসী।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য