ঢাকা , সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫ , ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার পদত্যাগ ঈদের লম্বা ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরে শিডিউল বিপর্যয় অবৈধভাবে ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগে টিউলিপকে দুদকের তলব আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিহত দুই কর্মীকে নিয়ে জামায়াত-বিএনপি ঠেলাঠেলি মোসাদের দুই গুপ্তচরকে আটক করেছে ইরান ১০ দিনের ছুটি শেষে খুলেছে সরকারি অফিস খেলাপি ঋণ ছাড়াল ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা যারা খেলে খেলুক আমরা শুধু রেফারি হয়ে কাজ করব-সিইসি এনটিআরসিএতে অবস্থান নিয়েছেন ভাইভায় ফেল করা প্রার্থীরা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ পুলিশের লাঠিচার্জ মানবিক পুলিশ চাচ্ছি আমরা, সবার সঙ্গে যেন ভালো ব্যবহার করে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পাচার অর্থ ফেরাতে সরকার চাইলে এখনই আইনজীবী নিয়োগ সম্ভব-গভর্নর শেষ মুহূর্তে রাজধানীতে মানুষের স্রোত গ্যাস সিলিন্ডারজনিত অগ্নি দুর্ঘটনা বাড়ছে কারাগারে ‘ফাঁস নিলেন’ বিরুলিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান সুজন আজ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার জরুরি বৈঠকের ডাক ইরানের হামলায় তছনছ ইসরায়েল করোনা-ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা নকলমুক্ত রাখতে একগুচ্ছ নির্দেশনা ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য কফিনে শেষ পেরেক-প্রেস সচিব

প্রতিদিনই বিপুল টাকা গচ্চা গুনছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল

  • আপলোড সময় : ০৬-১০-২০২৪ ১০:৪৬:৩১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-১০-২০২৪ ১০:৪৬:৩১ পূর্বাহ্ন
প্রতিদিনই বিপুল টাকা গচ্চা গুনছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল
প্রতিদিনই বিপুল টাকা গচ্চা গুনছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে সাড়ে ১০ হাজার কোটিরও বেশি টাকায় নির্মিত ওই টানেল দিয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী যানবাহন চলাচল করছে না। বিগত ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচল উন্মুক্ত রয়েছে। নির্মাণের আগে করা সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছিল, টানেল চালুর প্রথম বছরে দিনে গড়ে ১৭ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করবে। কিন্তু বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, যানবাহন চলাচল উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকে টানেল দিয়ে চলাচল করছে দৈনিক চার হাজারের মতো যানবাহন।
আর বর্তমানে যে পরিমাণ যানবাহন টানেল দিয়ে চলাচল করছে তা থেকে দৈনিক ১২ লাখ টাকার মতো টোল বাবদ আয় হয়। কিন্তু টোল আদায়ের টাকায় রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের তিন ভাগের এক ভাগ উঠছে। টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণসহ আনুষঙ্গিক কাজে গড়ে প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে একটি অংশ ব্যয় হয় টানেলে কৃত্রিম অক্সিজেন ও আলো সরবরাহ ছাড়াও সামগ্রিক নিরাপত্তা ও জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থায়। অর্থাৎ টানেলে দিনে ২৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হচ্ছে। সেতু কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে,  কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়। তখন ২০১৭ সালকে টানেল চালুর বছর ধরে ওই সমীক্ষা করা হয়েছিল। যদিও ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর টানেল চালু হয়। ওই সমীক্ষায় বলা হয়, টানেল চালুর বছরে প্রতিদিন গড়ে ১৭ হাজারের বেশি গাড়ি চলতে পারে। ২০২০ সালে তা প্রায় ২১ হাজার ও ২০২৫ সালের দিকে প্রতিদিন প্রায় ২৮ হাজারের মতো যানচলাচল করার কথা বলা হয়। অথচ বর্তমানে টানেল দিয়ে গাড়ি পার হচ্ছে দৈনিক সাড়ে চার হাজারের মতো। অর্থাৎ বর্তমানে যে পরিমাণ গাড়ি পার হচ্ছে তা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩০ শতাংশ। যে কারণে টোল আদায়ও হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ কম। টানেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানিকে (সিসিসিসি) পাঁচ বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। ঠিকাদারকে দিতে হবে বছরে ৬৮৪ কোটি টাকা। ওই হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণের দৈনিক ব্যয় দাঁড়ায় সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, টানেল নিয়ে সমীক্ষায় বলা হয়েছিলো, প্রতি পাঁচ বছর পর পর একবার টানেলের বড় ধরনের রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। যাকে বলা হয় রেগুলার মেইনটেনেন্স। একবার এ ধরনের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে প্রায় ১৯ লাখ ডলার ব্যয় হবে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১ কোটি টাকার সমান। টানেল নির্মাণে শুরুতেই ব্যয় ধরা হয় আট হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। ব্যয়ের মধ্যে ছয় হাজার ৭০ কোটি টাকাই চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিয়েছে।
এদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, টানেল ছিল একটি অপ্রয়োজনীয় উচ্চাভিলাষী প্রকল্প। কর্ণফুলী নদীতে কালুরঘাট, রাঙ্গুনিয়া চন্দ্রঘোনাসহ বিভিন্ন স্থানে জনসাধারণের জন্য ব্রিজের প্রয়োজন ছিল। টানেল নির্মাণে ব্যয় হওয়া অর্থ দিয়ে দশটি ব্রিজ নির্মাণ করা যেত। বিগত ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন। ২৯ অক্টোবর থেকে টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচল উন্মুক্ত হয়। প্রথম দিন পাঁচ হাজার ৬৭৮টি গাড়ি পার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১২ লাখ ১৩ হাজার ৩০০ টাকা। দেশের অনেক স্থপতি উচ্চাভিলাষী ওই প্রকল্পের বিরোধিতা করে তা না করার ওপর যুক্তি তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু তারপরও টানেলের মতো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। টানেলে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে, তা দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে দশটি ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভব হতো। যারা সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে তারা ভুল তথ্য দিয়েছে। এ প্রকল্প কখনও লাভের মুখ দেখার সম্ভাবনা নেই। কারণ টানেলে গাড়ি যদি বেশি চলাচল করে, তখন ব্যয়ও বেড়ে যাবে। অথচ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ টানেল নয়, একটি কালুরঘাট ব্রিজের জন্য দীর্ঘকাল আন্দোলন করে আসছে।  অন্যদিকে টানেল টোল ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন জানান, উদ্বোধনের পর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানেল দিয়ে যাতায়াত করেছে ১৩ লাখ ১৬ হাজার ২২৬টি গাড়ি। ওসব গাড়ি বাবদ টোল আদায় হয়েছে ৩৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সবচেয়ে বেশি চলাচল করে প্রাইভেটকার। এরপর রয়েছে জিপ এবং মাইক্রো। এর মধ্যে বেশি হলো পর্যটকদের গাড়ি। গণপরিবহনের সংখ্যা অত্যন্ত কম।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স