ঢাকা , রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নগরে ফিরছে মানুষ পথে পথে ভোগান্তি এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো-আনু মুহাম্মদ প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছেন-জামায়াত ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক দেশে স্বস্তি এনেছে বললেন দুদু মামলার আগেই আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক, বড় পরিবর্তন আসছে আইনে মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা রেমিটেন্সে ধস আয়রন ডোম চুরমার ইসরায়েলি সদর দফতর গুঁড়িয়ে দিল ইরান ইরানের কাছে ধরাশায়ী ইসরায়েল মেসিদের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপ মাঠে ফেরায় তোড়জোড় গগবার অনিশ্চয়তায় ক্যাবরেরার ভবিষ্যৎ ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আয়োজক হওয়ার প্রস্তাবকে আইসিসির ‘না’ বিগব্যাশে ডাক পেলেন বাবর আজম পাকিস্তানের কোচের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন ইউসুফ তারকাবিহীন দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসবে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলি হামলায় নিন্দার ঝড় ইরানের পাল্টা হামলার শঙ্কায় খাবার ও পানি মজুত করছে ইসরায়েলিরা সবকিছু শেষ হওয়ার আগেই চুক্তি করুন ইরানকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
বিপাকে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো

দ্রুত বর্ধমান ভোগ্যপণ্যের বাজারে মন্দা

  • আপলোড সময় : ০৮-১০-২০২৪ ১০:৪২:৩৮ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-১০-২০২৪ ১১:২৭:৫৭ পূর্বাহ্ন
দ্রুত বর্ধমান ভোগ্যপণ্যের বাজারে মন্দা
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ, কয়েক জেলায় বন্যা, কেনাকাটা-বিনোদনের স্বাভাবিক পরিস্থিতি না ফেরাসহ নানা কারণে  দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
দ্রুত বর্ধমান ভোগ্যপণ্যের বাজার হিসেবে পরিচিত এফএমসিজির (ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস বা দ্রুত বর্ধমান ভোগ্যপণ্য) সম্ভাবনাময় বাজার দেশের ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ বিশাল সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছিল। খাদ্য, পানীয়, প্রসাধন, গৃহ পরিচর্যা, দুধসহ এমন নিত্যব্যবহার্য পণ্যকে এফএমসিজি বলা হয়, যা তুলনামূলক সস্তা কিন্তু দ্রুত বিক্রি হয়। জুলাই আন্দোলনের পর থেকে এখন পর্যন্ত এ ধরনের পণ্যের কেনাবেচা বহুলাংশে কমেছে। যাতে বিপাকে পড়েছে দেশের ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
কোম্পানিগুলো বলছে, দেশব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়। এছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ, কয়েক জেলায় বন্যা, কেনাকাটা-বিনোদনের স্বাভাবিক পরিস্থিতি না ফেরাসহ নানা কারণে এফএমসিজির বাজারে বিক্রি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। এসব নিত্যপণ্যের বাজারে বড় একটি কোম্পানি সিটি গ্রুপ। এ গ্রুপের প্রায় তিন ডজন শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেগুলোর আওতায় আমদানি করা পণ্য প্রক্রিয়াজাতের পর বাজারজাত করা হচ্ছে। কোম্পানিটির পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি উন্নতির দিকে গেলেও ব্যবসায়িক পরিস্থিতি ততটা ভালো হয়নি। বেশ কিছু সময় ধরে আন্দোলনের পর দেশে বড় বন্যা হলো। সবমিলিয়ে ব্যবসায়ীরা এখন কঠিন সময় পার করছেন। পণ্যের বিক্রি ও চাহিদা কমে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘সাধারণ ক্রেতারা পণ্য একদম কম কিনছেন। যে কারণে বিক্রেতারাও কোম্পানিগুলোর কাছে পণ্য কেনা কমিয়েছে। যার যতটুকু দরকার তার চেয়েও কম কিনে চালিয়ে নিচ্ছে। কেউ ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না। এছাড়া ব্যবসায়ীরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন। অনেক এলাকায় এখনো ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন। এসব কারণে সার্বিকভাবে এফএমসিজি বাজারে পণ্যের বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে।’ বাংলাদেশে এফএমসিজির বাজারে বিদেশি ব্র্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে দেশি ব্র্যান্ডগুলো। সিটি গ্রুপ ছাড়াও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এসিআই, স্কয়ার, আবুল খায়ের গ্রুপ, কোহিনূর কেমিক্যালসের পণ্যের ব্র্যান্ড সংখ্যা বেশি। বিদেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে এগিয়ে আছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ।
এছাড়াও ব্র্যান্ডভিত্তিক বেশকিছু দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ড এফএমসিজির বাজারের বড় অংশীদার। যেমন ভোজ্যতেলে বড় ব্র্যান্ড রূপচাঁদা, নেসলের ম্যাগি নুডলস, চায়ে ইস্পাহানি, দুগ্ধপণ্যের মধ্যে ডিপ্লোমা, ডানো, মিল্ক ভিটা, পানীয় শ্রেণিতে কোকাকোলা-সেভেন আপসহ বেশকিছু ব্র্যান্ড। এসব কোম্পানির অধিকাংশই জানিয়েছেন তাদের বেচাকেনা খারাপ যাচ্ছে। এফএমসিজি বাজারে আরেক অন্যতম কোম্পানি মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের জ্যেষ্ঠ সহকারী মহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার বলেন, ‘ব্যবসা অর্থনীতির কারণে থমকে রয়েছে এখনো। ট্যুরিজম-হোটেল-রেস্তোরাঁ কোনো কিছুতে মন্দা কাটেনি। মানুষ এখনো ঘর থেকে বের হচ্ছে না সেভাবে। তারা ঘুরবে, খাবে তারপর না ভালো ব্যবসা হবে। বিদেশিরাও নেই এখন দেশে। এসব পরিস্থিতি আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সবকিছু স্বাভাবিক না হলে ব্যবসা স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব নয়।’ কেনাবেচা নিয়ে কথা হয় বেশ কয়েকজন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার সঙ্গে। তারা বলেন, ‘আগে ক্রেতারা যে পরিমাণে পণ্য কিনতো, এখন তার চেয়ে কম কিনছে। উদাহরণ দিয়ে ফাহিম তানভির নামে একজন বিক্রেতা বলেন, ‘যে ক্রেতা আগে এক কেজি দুধের প্যাকেট কিনতেন, তিনি এখন ২০০/৪০০ গ্রাম নিচ্ছেন। আবার ধরুন আগে মেঝে পরিষ্কারের জন্য ফ্লোর ক্লিনার কিনতো, এখন ডিটারজেন্ট দিয়ে কাজ চালাচ্ছে। অনেকে দুধ চা, হরলিক্স এমন অনেক খাবার কমিয়েছে।’ বিক্রেতারা আরও বলছেন, মানুষ এখনো মানসিকভাবে সাম্প্রতিক অস্থিরতা থেকে পুরোপুরি বের হতে পারেনি। এ কারণে অনেকে কাজ হারিয়েছে, অনেকে হারানোর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অনেকের বাড়তি আয় বন্ধ। যে কারণে খরচ সাশ্রয়ে মনোযোগী হয়েছে বেশিরভাগ পরিবার।
এসব বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপণন বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘যখন একটা রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়, সেটা ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভাব ফেলে- আমরা সেটা প্রায়শ দেখেছি। কারণ এটা একটি বড় অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করে, এটা স্বাভাবিক। নতুনভাবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি হয় এমন পরিস্থিতি। আমরা এখন এমন মধ্যবর্তী অবস্থায় রয়েছি। যে কারণে প্রায় সব ব্যবসা-বাণিজ্য খারাপ যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি দেশের একটি সরকার চলে গেলো, যাদের নানা পরিকল্পনা ছিল, কম-বেশি যা হোক অর্থনীতি একটা গতিতে ছিল। সেটা এখন বন্ধ হয়েছে। এখন নতুন করে সব হচ্ছে, কোম্পানিগুলোর নতুন চুক্তি, নতুন সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়ন। সেটার জন্যও একটু সময় লাগবে। মানুষজনও এখন কিছুটা বিশৃঙ্খল রয়েছে, কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে সব জায়গায়। তারাও একটু গুছিয়ে নিচ্ছে, খরচ দেখে শুনে করছে। যতটুকু না হলে নয়।’
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য