ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫ , ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সবাই মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ হয়েছে-আলী রীয়াজ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বদলিতে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন রাস্তায় অভিনেতাকে সিদ্দিককে গণপিটুনি কারিগরি শিক্ষার্থীরা যা শিখছেন, চাকরির বাজারে তার চাহিদা নেই -সিপিডি আগামী নির্বাচনে সীমিত পরিসরে হলেও প্রবাসীদের ভোটের প্রস্তুতি চলছে : সিইসি জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশকে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে গড়িমসি অপকর্ম বন্ধ করুন, নইলে বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে -নেতাকর্মীদের ফখরুল সভ্য হতে হলে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান বইপ্রেমী এক ডিসির গল্প গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ দুই বোন ই-৮ ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলেন ২৫ কর্মী পুলিশের জন্য ১৭২ কোটি টাকায় কেনা হবে ২০০ জিপ সামাজিক সুরক্ষায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৬ লাখ ২৪ হাজার উপকারভোগী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে লিপ্ত থাকার অভিযোগ গ্যাস খাতে বছরে আর্থিক ক্ষতি বিলিয়ন ডলার নতুন লুকে নজর কাড়লেন ব্লেক লাইভলি
দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার

সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান

  • আপলোড সময় : ১০-১০-২০২৪ ০৩:১১:৫৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-১০-২০২৪ ০৩:১১:৫৩ অপরাহ্ন
সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক মুখ্যসচিব  নজিবুর রহমান
দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান। নামে-বেনামে অর্জিত এসব সম্পদের পেছনের কাহিনী মহাকাব্য আরব্য উপন্যাসকেও হার মানাবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান থাকাকালীন ব্যবসায়ী ও কাস্টমস-আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
পূর্বাচলে প্লট, সুস্থ ছেলেকে প্রতিবন্ধী কোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও পরবর্তী সময়ে ওই ছেলে বেকার থাকাবস্থায় রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনে এবং আমেরিকায় বড় ছেলের উচ্চশিক্ষার ব্যয়নির্বাহের নামে বিদেশে অর্থ পাচারও করেছেন। ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের টাকায় সপরিবারে দেশবিদেশ ঘুরেছেন। শুল্ক গোয়েন্দা ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) থেকে সোর্স মানির নামে টাকা লুটেছেন দুহাতে। এ সবকিছু জায়েজ করেছেন পাঠ অযোগ্য বই বিক্রির নামে। স্বনামধন্য লেখকদের বই যেখানে কোটি টাকা বিক্রি হয় না, সেখানে তিনি ৮ কোটি টাকার বই বিক্রির সম্মানি দেখিয়ে অবৈধ আয় বৈধ করেছেন। শুধু তাই নয়, সরকারি অর্থের অপচয়ের ক্ষেত্রে ছিলেন সিদ্ধহস্ত।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পূর্বাচলে (প্লট-১৬, রোড-৪০১/১, সেক্টর-০৯) ঝর্ণাধারা নামে একটি প্লট আছে। মুখ্যসচিব থাকাবস্থায় প্লটটি নেন তিনি। এছাড়া রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বিপরীতে রূপায়ণ স্বপ্ননিলয় কন্ডোমিনিয়াম প্রজেক্টে ৫ কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট (এফ-২) আছে। এই ফ্ল্যাটের মালিক নজিবুর রহমানের ছোট ছেলে ফারাবি এনএ রহমান। ছেলের নামে ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। বাজারদরের চেয়ে কম দামে ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন একসময়ে রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই প্রধান কর্তা। বড় ছেলের অপরাধ ঢাকতে আরও উদার ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেন নজিবুর রহমান। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশনে ইকোনমিক মিনিস্টার হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে ফুয়াদ এন রহমানকে একটি স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করান। পরবর্তী সময়ে ফুয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সংঘবদ্ধ অপরাধীচক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন ছাত্রছাত্রীদের ল্যাপটপ এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে। এ কারণে ফুয়াদকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়।  এছাড়া নজিবুর রহমান তার ছেলে ফুয়াদকে স্থানীয় স্টাফ হিসাবে নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনসুলেটে ২০১৫-১৬ সালে প্রভাব খাটিয়ে চাকরি দেন। মাসে দেড় হাজার ডলার বেতন নিলেও ফুয়াদ মিশনে কোনো কাজ করেননি। ২০১৫ সালে পরিবেশ ও বন সচিব থেকে নজিবুর রহমানকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার পর আরও বেপরোয়া তিনি। এনবিআরে নিয়োগ পাওয়ার পর সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ শুরু করেন। ক্ষমতার দম্ভে ধরাকে সরা জ্ঞান করতেন। প্রকাশ্য মিটিংয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অপমানসূচক আচরণ করতেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নজিবুর রহমান এনবিআর চেয়ারম্যান থাকাকালে ‘প্রটোকল ব্যবস্থাপনা ও আন্তর্জাতিক শিষ্টাচার’ নামে একটি বই লিখেন। মূলত ঘুস গ্রহণের মাধ্যমে অর্জিত আয় বৈধ করতে বই লেখার ফন্দি আঁটেন। মাঠ পর্যায়ে কর অফিস, ভ্যাট অফিস, একাডেমিতে পাঠিয়ে জোরপূর্বক বই কিনতে বাধ্য করেন। এ বই বিনামূল্যে ছাপিয়ে দেন তৎকালীন কাস্টমসের এক কমিশনার।
পুরস্কারস্বরূপ তাকে কাস্টমসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করা হয়। আর বই বিপণনের দায়িত্ব পালন করেন সিআইসির তৎকালীন ডিজি বেলাল উদ্দিন। বই বিক্রির সম্মানি বাবদ তার ট্যাক্স ফাইলে ৮ কোটি টাকা বৈধ করা হয়। একই কায়দায় নিজ স্ত্রী নাজমা রহমানের নামে লেখা বইও জোরপূর্বক মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোকে কেনানো হয়। সেখান থেকেও মোটা অঙ্কের অবৈধ অর্থ বৈধ করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সংস্থার প্রধান হওয়া সত্ত্বেও সোর্স মানি হিসাবে শুল্ক গোয়েন্দা ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) থেকে টাকা নিতেন নজিবুর রহমান। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করতেন তৎকালীন দুই ডিজি। সোর্সের নাম সরকারি দলিলদস্তাবেজে উল্লেখ না করার বাধ্যবাধকতা থাকায় টাকা সরাতে এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হতো। অন্যদিকে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের টাকায় দেশবিদেশ ঘুরেছেন। সফটওয়্যার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক ভিয়েতনামে ১০০ কর্মকর্তাকে বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি করা হয়নি। এর পরিবর্তে আমেরিকায় বিজনেস টাইকুনদের মতো প্রটোকলে সপরিবারে নজিবুর রহমানকে ঘুরিয়ে আনা হয়।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ