ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫ , ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সবাই মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ হয়েছে-আলী রীয়াজ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বদলিতে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন রাস্তায় অভিনেতাকে সিদ্দিককে গণপিটুনি কারিগরি শিক্ষার্থীরা যা শিখছেন, চাকরির বাজারে তার চাহিদা নেই -সিপিডি আগামী নির্বাচনে সীমিত পরিসরে হলেও প্রবাসীদের ভোটের প্রস্তুতি চলছে : সিইসি জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশকে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে গড়িমসি অপকর্ম বন্ধ করুন, নইলে বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে -নেতাকর্মীদের ফখরুল সভ্য হতে হলে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান বইপ্রেমী এক ডিসির গল্প গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ দুই বোন ই-৮ ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলেন ২৫ কর্মী পুলিশের জন্য ১৭২ কোটি টাকায় কেনা হবে ২০০ জিপ সামাজিক সুরক্ষায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৬ লাখ ২৪ হাজার উপকারভোগী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে লিপ্ত থাকার অভিযোগ গ্যাস খাতে বছরে আর্থিক ক্ষতি বিলিয়ন ডলার নতুন লুকে নজর কাড়লেন ব্লেক লাইভলি
রাজবাড়ী

পদ্মার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা-ফসলি জমি

  • আপলোড সময় : ১১-১০-২০২৪ ০১:০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-১০-২০২৪ ০১:০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন
পদ্মার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা-ফসলি জমি
ভাঙতে ভাঙতে এখন বাড়ির কিনারে নদী এসেছে। এতদিন টিকলেও শেষ পর্যন্ত নিজের বাড়ি রক্ষা করতে পারছেন না

হঠাৎ পদ্মার পানি ও স্রোত বেড়ে ভাঙনে নাস্তানাবুদ নদীপাড়ের বাসিন্দারা। গত পাঁচদিনের ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়েছে কাওয়ালজানি গ্রামের অন্তত ১০টি বসতভিটাসহ প্রায় ৩০ একর ফসলি জমি। হুমকিতে নদী তীরবর্তী তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্থাপনা। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের শত শত পরিবার। দেখা গেছে, দেবগ্রাম ইউনিয়নের দেবগ্রাম ও কাওয়ালজানি গ্রামে ভাঙন চলছে। পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে স্রোত দেখা দেওয়ায় থেমে থেমে বসতভিটা ও কৃষিজমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদীর পাড়ে থাকা পরিবারগুলো ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। চোখের সামনে আবাদি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে নানা বয়সী মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন। কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে সহযোগিতা করছেন। নদী থেকে মাত্র ১০ গজ দূরে খবির সরদারের বাড়ি। একসময় নদী থেকে এই বাড়ি ছিল এক মাইল দূরে। ভাঙতে ভাঙতে এখন বাড়ির কিনারে নদী এসেছে। এতদিন টিকলেও শেষ পর্যন্ত নিজের বাড়ি রক্ষা করতে পারছেন না। আকস্মিক ভাঙনে কোথায় যাবেন, এখনো ঠিক করতে পারেননি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন, মেয়ে ও জামাই পরিবারের লোকজন এসে তাকে কাজে সহযোগিতা করছেন। ঘরের জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন খবির সরদারের মেয়ে। তিনি বলেন, পাঁচদিন ধরে ভাঙছে। গত কয়েকদিন ধরে সারারাত আমরা একটুও ঘুমাইনা। চাপের পর চাপ ভেঙে পড়ছে। ভয়ে সারা রাত সবাই নদীর পাড়েই বসেছিলাম। আপাতত ঘরের জিনিসপত্র গ্রামের একজনের বাড়ি রেখেছি, পরে সরিয়ে নেওয়া হবে। কাওয়ালজানির ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ আবদুল মালেক শেখ বলেন, চোখের সামনে বাপ-দাদার ভিটেমাটি, চাষাবাদের জমি, সব গিলে খেয়েছে পদ্মা। পদ্মায় তিন ভাঙা দিয়ে বর্তমানে কাওয়ালজানি গ্রামে বসবাস করছি। গত বুধবার বাড়িঘর সরিয়ে নিতে পারলেও বসতভিটা ভেঙে নদীতে চলে গেছে। পরিবার নিয়ে একজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। কোথায় যাবো কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। স্থানীয় কুশাহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙনের কারণে কুশাহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেথুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে যেকোনো মুহূর্তে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই সরকারের কাছে দাবি জানাই, নদী ভাঙন রোধে দ্রুত কাজ শুরু করা হোক। দেবগ্রামের কুদ্দুস সরদার বলেন, নদী থেকে তাঁর বাড়ি প্রায় ২০০ গজ দূরে থাকলেও আতঙ্কে দিন পার করছেন তিনি। ভাঙন অব্যাহত থাকলে কাওয়ালজানি ও দেবগ্রাম বিলীন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের বাড়ি ছিল ধোপাগাথি এলাকায়। প্রায় ২০ বছর আগে ভাঙনের শিকার হয়ে দেবগ্রাম আসি। এখানেও ভাঙনে গ্রামের কয়েকশ পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। তাদের প্রায় ৯০ বিঘার মতো জমি ছিল। সব নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে স্রোত বেড়ে যাওয়ায় ভাঙনও বেড়েছে। দেবগ্রাম ও কাওয়ালজানি এলাকার অন্তত দুই শতাধিক পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, পাঁচদিন ধরে পানি বাড়ার সঙ্গে দেবগ্রাম ও কাওয়ালজানির প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও জেলা প্রশাসককে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী এম এ শামীম বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙনের বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেবেন আমরা সেভাবে কাজ করবো।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ