ঢাকা , বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫ , ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
টাঙ্গাইলে এনসিপির পদযাত্রা, নিরাপত্তায় ৯ শতাধিক পুলিশ সদস্য সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত মডেল মেঘনার জব্ধকৃত মালামাল ফরেনসিক রিপোর্ট তৈরির আদেশ সারাদেশে নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী মেলিওডোসিস ওয়ারড্রব ম্যালফাংশনের শিকার হলেন জেনিফার লোপেজ এবার প্রাক্তন স্বামীর ৩০ হাজার কোটির সম্পত্তিতে ‘চোখ’ কারিশমার অক্ষয় কুমারের ফিটনেস রহস্য ফাঁস! বিপাকে রাজকুমার! জারি হলো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাগৃহে জয়ার নতুন সিনেমা সবাইকে কেন সতর্ক করলেন অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান? আবারও রায়হান রাফী ও তমা মির্জার প্রেমে ভাঙন বিএনপির ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে আপসহীন খালেদা জিয়া ডেঙ্গু আতঙ্কে নগরবাসী জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র ৫ আগস্টের মধ্যে জারি করতে হবে : নাহিদ ইসলাম বিয়ামে এসি বিস্ফোরণ নয়, নথি পোড়াতে গিয়ে আগুনে পুড়ে ২ জন নিহত ডিএসসিসির পরিবহন ব্যবস্থাপনায় ২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রানওয়েতে স্কুলের পারমিশন যারা দিয়েছে তাদের ধরতে হবে-স্বাস্থ্য উপদেষ্টা একই দিনে শহীদ মিনারে সমাবেশ করতে চায় এনসিপি ও ছাত্রদল দেশকে পুনরায় গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন তারেক রহমান-ফখরুল রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির

মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে জেলে নিহত

  • আপলোড সময় : ১১-১০-২০২৪ ০১:১৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-১০-২০২৪ ০১:১৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে জেলে নিহত
৬০ মাঝি-মাল্লা আটক
* সেন্টমার্টিনের অদূরে ফিশিং ট্রলারে হামলা, স্থানীয়দের উদ্বেগ
* বাংলাদেশের জলসীমায় নৌবাহিনীর গুলিবর্ষণ, নিহত ও আহত জেলে উদ্ধার
* ট্রলার ফিরে এসে নিহত ও আহতদের উদ্ধার, বাকিরা এখনো মিয়ানমারে আটক
কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছে বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর গুলিতে এক বাংলাদেশি জেলে নিহত হয়েছেন এবং আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এ ঘটনায় অন্তত ৬০ মাঝি-মাল্লাসহ ছয়টি ফিশিং ট্রলার অপহরণ করে মিয়ানমারের নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছেন ট্রলার মালিকেরা। তার মধ্যে নিহত-আহত জেলেসহ একটি ট্রলার ফেরত এসছে।
ট্রলার মালিকেরা জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মিয়ানমারের নৌ-বাহিনী এই গুলি চালিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত জেলের নাম মোহাম্মদ ওসমান (৩২)। তিনি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের কোনাপাড়া এলাকার মৃত বাচু মিয়ার ছেলে। নিহত ওসমান শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকানাধীন একটি ফিশিং ট্রলারের জেলে ছিলেন। আহত জেলেদের মধ্যে সুলতান আহমেদের ছেলে মোহাম্মদ রাজু এবং শফি উল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ রফিক রয়েছেন।
জেলেরা জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে বঙ্গোপসাগরের মৌলভীর শিল নামক এলাকায় বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলারগুলো মাছ ধরছিল। হঠাৎ মিয়ানমারের নৌবাহিনী তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে ওসমান ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং রাজু ও রফিক গুলিবিদ্ধ হন।
মিয়ানমারের নৌবাহিনী শুধু গুলি চালিয়েই থেমে থাকেনি, তারা সাইফুল কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারসহ আরও পাঁচটি ফিশিং ট্রলার আটক করে। এসব ট্রলারে থাকা মোট ৫০-৬০ জন মাঝি-মাল্লাকেও তারা ধরে নিয়ে যায় বলেও তারা জানান।
ট্রলার মালিক সাইফুল বলেন, আমার ট্রলার সাগরে মাছ ধরছিল, তখন হঠাৎ করে মিয়ানমার নৌবাহিনী গুলি চালায়। আমার ট্রলারের চারজন গুলিবিদ্ধ হয়, যার মধ্যে একজন মারা যায়। এরপর তারা পাঁচটি ট্রলার ধরে নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে নিহত ও আহত জেলেদের নিয়ে একটি ট্রলার শাহপরীর দ্বীপে ফিরে আসে।
ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার নৌবাহিনী একটি ট্রলার এবং ১১ জন জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে। তবে আটক হওয়া বাকি পাঁচটি ট্রলার ও ৫০-৬০ জন জেলে এখনো তাদের হেফাজতে রয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
কোস্টগার্ডের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, একটি ট্রলার ফিরে এসেছে এবং এতে ১১ জন জেলে রয়েছে, তবে অন্য পাঁচটি ট্রলার এখনও মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণে। আটক মাঝি-মাল্লাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি, তবে আশা করা হচ্ছে তাদের মুক্তি দেওয়া হবে।
শাহপরীর দ্বীপের অন্য পাঁচটি ট্রলারের মালিকরা জানিয়েছেন, তাদের ট্রলার ও মাঝি-মাল্লাদের সঙ্গে এখনো কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এই পাঁচ ট্রলারের মধ্যে মতিউর রহমানের দুটি ট্রলার, আবদুল্লাহ ও তার ভাই আতা উল্লাহর একটি ট্রলার, এবং মো. আছেমের ট্রলার রয়েছে। তারা সবাই শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা।
ট্রলার মালিক মতিউর রহমান বলেন, আমাদের ট্রলার ও জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি। আমরা ভীষণ উদ্বিগ্ন।
টেকনাফের ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য কোস্টগার্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় প্রশাসনও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী জানান, বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে এবং দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
এর আগেও মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশের জেলেরা অপহরণের শিকার হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের মোহনা থেকে পাঁচ বাংলাদেশি জেলেকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে যায়। তবে পরদিন, ৮ অক্টোবর, বিজিবির হস্তক্ষেপে ওই জেলেদের মুক্তি দেওয়া হয়।
মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে জেলে নিহত হওয়ার ঘটনা এবং প্রায় ৬০ জন মাঝি-মাল্লার আটকের পর স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। জেলে পরিবার এবং স্থানীয় জেলে সমিতির সদস্যরা দ্রুত আটককৃত জেলেদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে স্থানীয়রা এবং জেলেদের মধ্যে নিরাপত্তার অভাববোধ বাড়ছে।
তারা দাবি করছেন, মাছ ধরার কাজে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বঙ্গোপসাগরে কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানো উচিত।
বঙ্গোপসাগরের এই অংশে মিয়ানমারের নৌবাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশের জেলেদের দ্বন্দ্ব আগেও হয়েছে। তবে সম্প্রতি এমন ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স