ঢাকা , বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ , ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সবাই মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ হয়েছে-আলী রীয়াজ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বদলিতে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন রাস্তায় অভিনেতাকে সিদ্দিককে গণপিটুনি কারিগরি শিক্ষার্থীরা যা শিখছেন, চাকরির বাজারে তার চাহিদা নেই -সিপিডি আগামী নির্বাচনে সীমিত পরিসরে হলেও প্রবাসীদের ভোটের প্রস্তুতি চলছে : সিইসি জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশকে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে গড়িমসি অপকর্ম বন্ধ করুন, নইলে বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে -নেতাকর্মীদের ফখরুল সভ্য হতে হলে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান বইপ্রেমী এক ডিসির গল্প গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ দুই বোন ই-৮ ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলেন ২৫ কর্মী পুলিশের জন্য ১৭২ কোটি টাকায় কেনা হবে ২০০ জিপ সামাজিক সুরক্ষায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৬ লাখ ২৪ হাজার উপকারভোগী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে লিপ্ত থাকার অভিযোগ গ্যাস খাতে বছরে আর্থিক ক্ষতি বিলিয়ন ডলার নতুন লুকে নজর কাড়লেন ব্লেক লাইভলি

ডেঙ্গুতে পুরুষের চেয়ে নারীদের মৃত্যু বেশি

  • আপলোড সময় : ৩০-১০-২০২৪ ১০:৫৫:১৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ৩০-১০-২০২৪ ১০:৫৫:১৯ পূর্বাহ্ন
ডেঙ্গুতে পুরুষের চেয়ে নারীদের মৃত্যু বেশি
গত বছরের মতো চলতি বছরের এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে পুরুষদের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। তবে সে তুলনায় কম আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর হারে এগিয়ে রয়েছেন নারী রোগীরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর (২৮ অক্টোবর পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৮০ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৮ হাজার ১০৮ জন। পুরুষরা ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হলেও বেশি মারা যাচ্ছেন নারীরা। চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ নারী। তবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৪ শতাংশ নারী ও ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া নারীদের বয়সভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২১ থেকে ৩৫ বছরের নারীর মৃত্যু হয়েছে বেশি। ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত মোট নারীর মৃত্যু ১৪৩ জন। যার মধ্যে ২১ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৪৯ জন। এ ছাড়া ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সী নারী ২০ জন। এছাড়া পুরুষ-নারী মিলিয়ে এবছর ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন। এই বয়সীদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ৮৬৩, আর মৃত্যু ৫৫। তবে ডেঙ্গুতে পুরুষের চেয়ে নারীর মৃত্যু বেশি কেন, সে বিষয়ে কোনো গবেষণা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এর পেছনে চার-পাঁচটি কারণ থাকতে পারে। যেমন- একাধিকবার আক্রান্ত হওয়া, দেরিতে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়া, মাসিক ও গর্ভকালীন আক্রান্ত হওয়া এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা পুরুষের তুলনায় নারীর কম থাকা। এর পেছনে যেসব কারণ থাকতে পারে বলে চিকিৎসকরা মনে করেন সেগুলো হলোÑ মেয়েরা নিজেদের দিকে একটু খেয়াল কম করেন। তারা স্বামী-সন্তানসহ পরিবারের প্রতি বেশি যত্নশীল। ব্যস্ত থাকেন সংসারের বিভিন্ন কাজে। তাদের শারীরিক কোনো সমস্যা হলে তারা সেগুলোর দিকে খুব একটা গুরুত্ব দেন না। বিছানায় পড়ার মতো অসুস্থ না হলে খুব সহজে তারা চিকিৎসকের কাছে আসেন না। পরিবারের অন্যরাও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারীদের বিষয়ে উদাসীন থাকেন। তাদের খুব বেশি সমস্যা না হলে একেবারেই বিছানায় পড়ে যাওয়ার মতো অসুস্থ না হলে আমাদের চোখে পড়ে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারীও সামান্য শারীরিক অসুস্থতায় কারও দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টাও করেন না। সে জন্য তাদের সমস্যার বিষয়টা আমাদের নজরে আসে না। ডেঙ্গুর বিষয়ে যেটা হচ্ছে- দেরিতে ডাক্তারের কাছে আসা। এ ছাড়া, নারীদের অনেকেরই রোগ প্রতিরোধক্ষমতা পুরুষের চেয়ে তুলনামূলক কম। সন্তান প্রসবের পরও নারীদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস পায়। রোগ প্রতিরোধমূলক ক্ষমতা কম থাকায় ডেঙ্গু ভাইরাস খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের দুর্বল করে ফেলে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. তাবিহা বিনতে হান্নান বলেন, গর্ভকালে নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যে কারণে মৃত্যুহার অন্য রোগীর তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি থাকে। এ ছাড়া ঋতুস্রাবকালে কোনো নারী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ এই সময়ে রক্তচাপ অস্বাভাবিক কম থাকে। উল্লেখ্য, কীটতত্ত্ববিদরা আগে থেকেই এবছর অক্টোবরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। সেপ্টেম্বর থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকায় উড়ন্ত মশা মারার দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো কার্যক্রম দেখা মেলেনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে। অন্যদিকে, মৃত্যু বেশি হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। উত্তর ও দক্ষিণে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা কাছাকাছি। এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় ২০২৩ সালে। ওই বছর ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। এদিকে চলতি বছর গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে সবচেয়ে বেশি ১৯ হাজার ২৪১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। ওই মাসেই সবচেয়ে বেশি ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অক্টোবরের প্রথম আট দিনে ৭৮৫১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের। এর আগে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন; যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিল মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। মে মাসে ৬৪৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। জুন মাসে ৭৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। জুলাই মাসে ২৬৬৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন, তাদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়। আগস্টে ৬৫২১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, যাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ