ঢাকা , বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫ , ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
টাঙ্গাইলে এনসিপির পদযাত্রা, নিরাপত্তায় ৯ শতাধিক পুলিশ সদস্য সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত মডেল মেঘনার জব্ধকৃত মালামাল ফরেনসিক রিপোর্ট তৈরির আদেশ সারাদেশে নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী মেলিওডোসিস ওয়ারড্রব ম্যালফাংশনের শিকার হলেন জেনিফার লোপেজ এবার প্রাক্তন স্বামীর ৩০ হাজার কোটির সম্পত্তিতে ‘চোখ’ কারিশমার অক্ষয় কুমারের ফিটনেস রহস্য ফাঁস! বিপাকে রাজকুমার! জারি হলো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাগৃহে জয়ার নতুন সিনেমা সবাইকে কেন সতর্ক করলেন অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান? আবারও রায়হান রাফী ও তমা মির্জার প্রেমে ভাঙন বিএনপির ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে আপসহীন খালেদা জিয়া ডেঙ্গু আতঙ্কে নগরবাসী জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র ৫ আগস্টের মধ্যে জারি করতে হবে : নাহিদ ইসলাম বিয়ামে এসি বিস্ফোরণ নয়, নথি পোড়াতে গিয়ে আগুনে পুড়ে ২ জন নিহত ডিএসসিসির পরিবহন ব্যবস্থাপনায় ২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রানওয়েতে স্কুলের পারমিশন যারা দিয়েছে তাদের ধরতে হবে-স্বাস্থ্য উপদেষ্টা একই দিনে শহীদ মিনারে সমাবেশ করতে চায় এনসিপি ও ছাত্রদল দেশকে পুনরায় গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন তারেক রহমান-ফখরুল রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির

মৃত্যুর আগে ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে চান বিশ্বজিতের বাবা-মা

  • আপলোড সময় : ০৯-১১-২০২৪ ০৩:২১:৪৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-১১-২০২৪ ০৩:২১:৪৫ অপরাহ্ন
মৃত্যুর আগে ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে চান বিশ্বজিতের বাবা-মা
ছেলের জন্য দীর্ঘ এক যুগ ধরে নীরবে চোখের জল ফেলে চলছেন বিশ্বজিৎ দাসের মা কল্পনা দাস। সেদিন শত শত মানুষ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আর সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো তাকে। যার নেপথ্যে ছিলো সম্প্রতি নিষিদ্ধ হওয়া সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে ঘটনার এক যুগ পার হলেও বিচার হয়নি এখনো। তাই বাবা-মার আকুতি, অন্তত মৃত্যুর আগে ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে চান নিজেদের চোখে। পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের মশুরা এলাকার অনন্ত দাস ও কল্পনা দাসের ছোট ছেলে বিশ্বজিৎ দাস। ছোটবেলা থেকেই ভীষণ শান্ত স্বভাবের ছিলো। আর্থিক অবস্থা ততোটা ভালো না হওয়ায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ছোটবেলা থেকে ঢাকার শাঁখারী বাজার এলাকায় ভাইয়ের দোকানে দর্জির কাজ শিখেছিলেন। এরপর ভাইয়ের পাশাপাশি নিজেও ধরেছিলেন সংসারের হাল। অধিকাংশ সময় ঢাকায় থাকলেও মা-বাবাকে দেখতে প্রায়ই বাড়ি আসতেন। তবে ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮-দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে শিবির সন্দেহে ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বিশ্বজিৎ দাসকে। এই ঘটনায় নাম উঠে আসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র মাহফুজুর রহমান নাহিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মীর নূরে আলম লিমন, শাকিলসহ বেশ কয়েকজনের নাম। যারা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করার পরে ঢাকার দ্রুত বিচার টাইব্যুনালে রায়ে ২১ আসামির মধ্যে আট জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আট আসামির মধ্যে ৬ জনই সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়। আর দুই জনের ফাঁসির আদেশ হলে তাও কার্যকর হয়নি দীর্ঘ ১২ বছরে। সরেজমিনে বিশ্বজিৎ দাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে থাকা ছেলের ছবির দিকে অপলকভাবে তাকিয়ে আছেন মা কল্পনা দাস। কিছুক্ষণ পর ছেলের একটি ছবি নামিয়ে পরম যত্নে আঁচল দিয়ে পরিষ্কার করছেন। কিছুক্ষণ পর ছেলের কথা মনে পড়তেই ফুপিয়ে কেঁদে উঠছেন। তার কান্নার শব্দ পেয়ে কেঁদে উঠছেন বাবা অনন্ত দাসও। বিশ্বজিৎ দাসের মা কল্পনা দাস বলেন, আমার বিশ্ব (বিশ্বজিৎ) তো কখনো রাজনীতি করেনি। আমার ছেলে কাজ করে সংসার চালাতো। ছেলেকে জগন্নাথের ছাত্রলীগের পোলাপাইন মেরে ফেললো। আজ ১২ বছর হয়ে গেলো অপরাধীদের বিচার হলো না। তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমরা বিচার চাইতে চাইতে ক্লান্ত। আমি আমার বিশ্ব হত্যার বিচার চাই। বিশ্বজিৎ দাসের বাবা অনন্ত দাস বলেন, ছেলে আমাদের ভরণপোষণ দিতো। ছেলেকে প্রকাশ্যে দিন দুপুরে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। আজ ১২ বছর ধরে এখনো বিচার পেলাম না। এই সরকারের আমলে আমার ছেলের হত্যার বিচার দেখে যেতে পারি। তাহলে মরে গেলো অন্তত আত্মা শান্তি পাবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শরীয়তপুরের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান বলেন, ২০১২ সালে বিশ্বজিৎ দাস হত্যা হয়েছে। প্রকাশ্যে তাকে কারা হত্যা করে তা আমরা জানি। তারা সৈরাচার সরকারের দোসর ছিলেন। তাই তারা অতি দ্রুত আইনের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে বের হয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘ এক যুগ ধরে ন্যায় বিচারের আশায় আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বিশ্বজিতের পরিবার। আমরা চাই অতি দ্রুত সব অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করা হোক।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স