ঢাকা , বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ , ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সবাই মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ হয়েছে-আলী রীয়াজ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বদলিতে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন রাস্তায় অভিনেতাকে সিদ্দিককে গণপিটুনি কারিগরি শিক্ষার্থীরা যা শিখছেন, চাকরির বাজারে তার চাহিদা নেই -সিপিডি আগামী নির্বাচনে সীমিত পরিসরে হলেও প্রবাসীদের ভোটের প্রস্তুতি চলছে : সিইসি জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশকে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে গড়িমসি অপকর্ম বন্ধ করুন, নইলে বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে -নেতাকর্মীদের ফখরুল সভ্য হতে হলে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান বইপ্রেমী এক ডিসির গল্প গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ দুই বোন ই-৮ ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলেন ২৫ কর্মী পুলিশের জন্য ১৭২ কোটি টাকায় কেনা হবে ২০০ জিপ সামাজিক সুরক্ষায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৬ লাখ ২৪ হাজার উপকারভোগী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে লিপ্ত থাকার অভিযোগ গ্যাস খাতে বছরে আর্থিক ক্ষতি বিলিয়ন ডলার নতুন লুকে নজর কাড়লেন ব্লেক লাইভলি

অবৈধ মোবাইলের দখলে দেশের বাজার

  • আপলোড সময় : ০৯-১১-২০২৪ ০৩:৩৫:০৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-১১-২০২৪ ০৩:৩৫:০৯ অপরাহ্ন
অবৈধ মোবাইলের দখলে দেশের বাজার
* দেশের চাহিদার প্রায় ৯৯ শতাংশ ফোনই এখন দেশে উৎপাদিত হচ্ছে
* স্থানীয় বাজারের প্রায় ৩৫-৪০ শতাংশ এখন চোরাই ফোনের দখলে
* বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেশীয় কারখানাগুলো


দেশে মোবাইল ফোনের বাজার প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার। এ শিল্পে সরাসরি তিন থেকে চার লাখ মানুষ জড়িত। ২০১৮ সালের আগে বাংলাদেশে শতভাগ মোবাইল ফোন বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। কিন্তু সরকারি প্রণোদনায় ২০১৮ সাল থেকে দেশে একের পর এক মোবাইল কারখানা স্থাপিত হতে থাকে। এ পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ১৭টি মোবাইল ফোন কারখানা দেশে স্থাপিত হয়েছে। দেশের চাহিদার প্রায় ৯৯ শতাংশ ফোনই এখন দেশে উৎপাদিত হচ্ছে। কিন্তু অবৈধভাবে ফোন আমদানি বন্ধ না করায় স্থানীয় বাজারের প্রায় ৩৫-৪০ শতাংশ এখন চোরাই ফোনের দখলে। তৈরি ফোন আমদানিতে যেখানে প্রায় ৫৮ শতাংশ কর রয়েছে, সেখানে এসব ফোন বিনা শুল্কে বাজারজাত হচ্ছে। ফলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন শতশত কোটি টাকা ব্যয় করে কারখানা স্থাপন করা ব্যবসায়ীরা। এতে নিজেদের বিনিয়োগ ও ব্যবসা ঝুঁকিতে পড়ার পাশাপাশি সরকারও হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে বলে আশংকার কথা জানিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমআইওবি)। এদিকে, অবৈধ ফোনের দাপটের কারণে কমেছে উৎপাদনও। বর্তমানে দেশে স্মার্ট ফোন তৈরির সক্ষমতা প্রতি মাসে ১৫ লাখ। ফিচার ফোন প্রতিমাসে ২৫ লাখ উৎপাদন সম্ভব। বৈধ ফোনের বাজার কমতে থাকায় দেশে ফোন উৎপাদন কমছে। গত বছর ৩৩ শতাংশ উৎপাদন কমেছে। জানা যায়, দেশে অবৈধ হ্যান্ডসেটের ব্যবহার কমাতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২০২১ সালে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) পদ্ধতি চালু করে। এই সিস্টেমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবৈধ সেট বন্ধ হয়। এই পদ্ধতি চালুর পর দেশে অবৈধ মোবাইল সেটের বাজার ১০-১৫ শতাংশে নেমে আসে। কিন্তু সে বছরই অজ্ঞাত কারণে এ পদ্ধতি শিথিল করা হয়। ফলে দেশে অবৈধ সেটের ব্যবহার আরও বেড়ে যায়। এনইআইআর সিস্টেম শিথিল করে দেওয়ায় ফোন কারখানাগুলোর বিনিয়োগ এখন হুমকির মুখে। কারণ অবৈধভাবে দেশে আসা হ্যান্ডসেটের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা কঠিন, তারা কর ফাঁকি দেয়। বৈধ ফোন তৈরির কারখানাগুলোর জন্য রয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের নানা রকমের নিয়ম-নীতি, বিধি-নিষেধ, উচ্চ লাইসেন্স ফি। অথচ অবৈধ ফোনের ক্ষেত্রে কমিশনের কোনো নিয়ম-নীতিই প্রযোজ্য নয়। এনইআইআর সিস্টেম শিথিল করার ফলে সরকার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। গ্রাহক নিম্নমানের হ্যান্ডসেট কিনে প্রতারিত হচ্ছেন, তা ছাড়া অবৈধ মোবাইলের কোনো ওয়ারেন্টি নেই। অবৈধভাবে আমদানি করা মোবাইল ফোন দিয়ে নানারকম অপরাধ সংগঠিত হয়। এনইআইআর চালু করার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিলো এসব অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করা। বর্তমানে সন্ত্রাসীরা সিমকার্ড ছাড়া ওয়াই-ফাই বা অন্য কোনো প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম। যদি মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বরটি সিমের সঙ্গে রেজিস্ট্রি করা থাকে, তবে আইপি অ্যাড্রেস ও আইএমইআইর মাধ্যমে এ সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা সম্ভব। এনইআইআর পদ্ধতি এ নিরাপত্তা খুব সহজেই প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এদিকে সম্প্রতি অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধ করার সুপারিশ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক। ডাক ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি এ সুপারিশ করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক জানান, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে চতুর্থ বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। স্যামসাং, এলজির মতো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু উচ্চ কর হারের কারণে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার বাস্তবায়নের মাধ্যমে অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধ করার সুপারিশ করেন। বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগেও আগ্রহ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত। প্রতি উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, কর কমানোর বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত। অর্থনৈতিক সংস্কারের সময় কর কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে যাতে অন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, আমরা স্থানীয় প্রস্তুতকারী শিল্পগুলোকে উৎসাহিত করতে চাই। সেজন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবৈধভাবে আমদানি করা হ্যান্ডসেটের মান পরীক্ষা হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভোক্তা সঠিক পণ্য পান না এবং অনেক ক্ষেত্রেই পূর্বব্যবহৃত পণ্য নতুন বলে বিক্রয় করা হয় যা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের নীতিমালা পরিপন্থী। অবৈধভাবে আমদানি করা হ্যান্ডসেটের কোনো পরিসংখ্যান কমিশনের ডাটাবেজে নেই। যদি ভোক্তার এনআইডির অধীনে মুঠোফোন রেজিস্ট্রি করা থাকে, সেক্ষেত্রে অন্য কেউ বেআইনিভাবে তা ব্যবহার করবে না এবং হ্যান্ডসেট চুরি, ছিনতাই অনেকটাই নিরুৎসাহিত হবে। তদুপরি বিভিন্ন হয়রানিমূলক কাজও বন্ধ হবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ