ঢাকা , রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এস এইচ কে এস সি শিক্ষার্থীদের ‘হ্যাপি ওরিয়েন্টেশন’ অনুষ্ঠিত করদাতার ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টির শঙ্কা নারায়ণগঞ্জে গুলি করে কুপিয়ে ছিনতাই ভিডিও ভাইরাল গণতন্ত্রের উত্তরণের জন্য নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ নেই- দুদু কানাডা প্রবাসীদের জন্য ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চালু অর্থনীতিতে অশনি সংকেত শত শত কারখানা বন্ধ এপিবিএন অধিনায়কের প্রত্যাহারচাওয়া নিয়ে তোলপাড় নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন সুশীলা কার্কি শাহজাহানপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ২ গণপরিবহনে সংরক্ষিত হচ্ছে না যাত্রীদের অধিকার জাবি শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের দাফন সম্পন্ন জাকসুর ফল প্রকাশে বিলম্ব ক্ষোভ বাড়ছে শিক্ষার্থীদের ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যেই নির্বাচন হবে-প্রেস সচিব বিচারপতি ড. আখতারুজ্জামানের পদত্যাগ গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি তিনজন কারাগারে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রবেশ পদ ৯ম গ্রেডে উন্নীতকরণের দাবি রোড বেল্ট ইনিশিয়েটিভ এক্সিবিশনে যৌথ সক্ষমতা তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে-বাণিজ্য উপদেষ্টা স্বস্তি নেই সবজির দামে নিত্যপণ্যের দাম চড়া রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ বিশ্বকাপের টিকেট না পাওয়ায় বরখাস্ত হলো ভেনেজুয়েলা ও পেরুর কোচ

৬০ শতাংশ বন উজাড় ৫০ শতাংশ নদী দখল

  • আপলোড সময় : ১৬-১১-২০২৪ ১১:৫৬:০০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৬-১১-২০২৪ ১১:৫৬:০০ অপরাহ্ন
৬০ শতাংশ বন উজাড় ৫০ শতাংশ নদী দখল
দুই দশকে গাজীপুরে ৬০ শতাংশ বন উজাড় এবং ৫০ শতাংশ জলাধার দখল করে অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে বলে এক গবেষণায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে

গত দুই দশকে অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের কারণে গাজীপুর বাংলাদেশের পরিবেশগত অবক্ষয়ের উদাহরণে পরিণত হয়েছে। এসময় এ এলাকার ৬০ শতাংশ বন উজাড় এবং ৫০ শতাংশ জলাধার দখল করে অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
২০০০ সালের গাজীপুরের বনাঞ্চলের আয়তন ছিল ৩৯ হাজার ৯৪৩ হেক্টর। ২০২৩ সালে তা কমে ১৬ হাজার ১৭৪ হেক্টরে নেমে এসেছে। অর্থাৎ ২৩ বছরে বনাঞ্চল কমেছে ৫৯.৫১ শতাংশ।
একই সময় জলাশয়ের আয়তন কমেছে ৫১ দশমিক ৪২ শতাংশ। ২০০০ সালে জলাশয় ছিল ১১ হাজার ৪৬২ হেক্টর। ২০২৩ সালে সেখান থেকে কমে ৫ হাজার ৫৬৮ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সহযোগিতায় রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে ‘গাজীপুর জেলার পরিবেশগত অবস্থা: পরিণতি ও ভ্রমণ’ শীর্ষক এই গবেষণা পরিচালিত হয়।
মানদণ্ড অনুযায়ী ২০-২৫ শতাংশ বনাঞ্চল এবং ৭-১৪ শতাংশ জলাশয় রাখতে হবে। কিন্তু গাজীপুরে এখন মাত্র ৯.৪৯ শতাংশ বনভূমি এবং ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ জলাশয় রয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজীপুরে বিপুল সংখ্যক মানুষ গ্রাম থেকে শহরাঞ্চলে এসে বসবাস করছে। এ কারণে শহুরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১০ দশমিক ৫১ শতাংশ, যেখানে গ্রামীণ জনসংখ্যা ২ দশমিক ০৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
মূলত শিল্পভিত্তিক কর্মসংস্থানের কারণে মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরমুখী হয়েছে। এখন কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যার ৬১ দশমিক ৫২ শতাংশ বিভিন্ন শিল্প কারখানায় কর্মরত।
২০০০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে শিল্পাঞ্চলের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
শিল্প কারখানার এই বৃদ্ধি বন ও জলাশয় দখলের অন্যতম কারণ। একই সঙ্গে দূষণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
২০০০ সালে জেলার জমির ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ বনাঞ্চল, ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ জলাশয়, ৫০ দশমিক ২১ শতাংশ বসতি, ৫ দশমিক ২১ শতাংশ শিল্প এলাকা, ১০ দশমিক ২১ শতাংশ কৃষি এলাকা এবং ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ খোলা জায়গা ছিল।
২০২৩ সালের মধ্যে এসব পরিসংখ্যানে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন দেখা যায়। এসময় বসতি এলাকা ৬৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং শিল্প অঞ্চলগুলো ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। এর বিপরীতে বনাঞ্চলের পরিমাণ কমেছে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ, জলাশয় ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ, কৃষি এলাকা ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং উন্মুক্ত স্থান ০ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
গত দুই দশকে গাজীপুরে অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়নের কারণে প্রায় ২৩ হাজার ৭৬৯ একর বা ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ বনাঞ্চল বিলীন হয়ে গেছে।
গাজীপুরের বাস্তুতন্ত্র ও অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য নদ-নদী, খাল, জলাভূমি দূষণ ও দখলের কারণে মারাত্মক হুমকির মুখে।
গবেষণায় তুরাগ, লবনদহ, টঙ্গী, মোগর ও চিলাই নদীসহ প্রধান জলাশয়গুলোতে ২৪৭টি প্রধান স্থান দখল এবং ১৬১টি সক্রিয় দূষণ পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে।
তুরাগ নদী মার্কাস বিল থেকে আসা শিল্পবর্জ্যের কারণে মারাত্মকভাবে দূষিত হয়েছে। আর লবনদহ নদী প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, ১৫টি পৌরসভার বর্জ্য লাইন এবং ৩৯টি দৃশ্যমান শিল্প বর্জ্য লাইনের কারণে বর্জ্যে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
জবরদখলের কারণে মোগর খালেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। প্রাথমিকভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং মাটি ভরাটসহ ৩৪টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
তুরাগ নদীর তীরে অবৈধ ইটভাটার কারণে দূষণ ও দখল বেড়েছে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।
এদিকে, কৃষিকাজ ও মাছ ধরার মতো ঐতিহ্যবাহী জীবিকা ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখোমুখি।
গবেষণায় গাজীপুরের পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় পৌর ও জাতীয় কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
আরও অবক্ষয় রোধ করতে এবং জেলার প্রাকৃতিক ভারসাম্য পুনরুদ্ধারের জন্য শক্তিশালী পরিবেশগত নীতি এবং তার কার্যকরী প্রয়োগ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স