ঢাকা , রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নগরে ফিরছে মানুষ পথে পথে ভোগান্তি এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো-আনু মুহাম্মদ প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছেন-জামায়াত ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক দেশে স্বস্তি এনেছে বললেন দুদু মামলার আগেই আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক, বড় পরিবর্তন আসছে আইনে মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা রেমিটেন্সে ধস আয়রন ডোম চুরমার ইসরায়েলি সদর দফতর গুঁড়িয়ে দিল ইরান ইরানের কাছে ধরাশায়ী ইসরায়েল মেসিদের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপ মাঠে ফেরায় তোড়জোড় গগবার অনিশ্চয়তায় ক্যাবরেরার ভবিষ্যৎ ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আয়োজক হওয়ার প্রস্তাবকে আইসিসির ‘না’ বিগব্যাশে ডাক পেলেন বাবর আজম পাকিস্তানের কোচের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন ইউসুফ তারকাবিহীন দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসবে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলি হামলায় নিন্দার ঝড় ইরানের পাল্টা হামলার শঙ্কায় খাবার ও পানি মজুত করছে ইসরায়েলিরা সবকিছু শেষ হওয়ার আগেই চুক্তি করুন ইরানকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

মনোবল হারিয়েছে পুলিশ গতি ফেরেনি কাজে

  • আপলোড সময় : ০৬-১২-২০২৪ ১০:৪১:০২ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-১২-২০২৪ ১০:৪১:০২ অপরাহ্ন
মনোবল হারিয়েছে পুলিশ গতি ফেরেনি কাজে
আতাউর রহমান জুয়েল
দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা মনোবল হারিয়েছেন। এই বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে এখনো বিরাজ করছে প্রত্যাহার, বদলি, মামলা ও গ্রেফতারের ভয়। গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রায় এক মাস অনুপস্থিত ছিল পুলিশ। হ-য-ব-র-ল অবস্থায় ছিল আক্রান্ত থানাগুলো। ধীরে ধীরে ঘৃুরে দাঁড়ালেও প্রতিনিয়ত তাড়া করছে আতঙ্ক। বিভিন্ন পদে ব্যাপক রদবদল হলেও একনো পুরোপুরি গতি ফেরেনি কাজে।
গত দেড় দশকে পুলিশ হয়ে ওঠে কর্তৃত্ববাদী বাহিনী। অনেকের কাছেই পুলিশ পরিচিত ছিল নিপীড়নের প্রতীক হিসেবে। জবাবদিহিতা না থাকায় নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। ফলে তাদের উপর তৈরি হয় প্রচণ্ড জনরোষের। যার বহিপ্রকাশ ঘটে গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর।
শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এ ব্যাপারে পুলিশ সদস্যরা অবগত। তবে এখনো তাদের মাঝে জনরোষের ভয় কাটেনি। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পরে অনেক কর্মকর্তা চলে গেছেন  আত্মগোপনে। অতীতের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়া জনগণের আস্থা অর্জন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপূর্ণ বাহিনী।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছুটি ছাড়া এখনো অনুপস্থিত ৭০০-৮০০ পুলিশ কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে রয়েছেন কিছু ক্যাডার কর্মকর্তা। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ও পরপরই বিক্ষোভকারীদের ওপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার ও মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করে। এর প্রতিবাদে জনগণ পুলিশের স্থাপনা, গাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে। ৬৬৪ থানার মধ্যে ৪৫০ এর বেশি থানায় হামলা হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পুলিশ সদর দফতর বলছে, লুট হয়েছে পাঁচ হাজার ৮২৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ছয় লাখ ছয় হাজার ৭৪২ রাউন্ড গুলি। এর মধ্যে তিন হাজার ৭৬৩টি বন্দুক ও দুই লাখ ৮৬ হাজার ৮২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। বাকিগুলো এখনো পাওয়া যায়নি।
পুলিশের পরিষেবা মূলত অভিযোগ গ্রহণ এবং মামলা নিবন্ধনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ হটলাইন গত ৯ আগস্ট সীমিত আকারে এবং ১২ আগস্ট পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করলেও থানাগুলো থেকে মাঝে মাঝে ভালো রেসপন্স আসে না। এর কারণ হিসেবে জানা যায় থানাগুলোতে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য ও লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় ওই নম্বরে ফোন করেও মানুষ কাক্সিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। এক সময় ৯৯৯-এ পুলিশের সহায়তা চেয়ে যত ফোন কল করা হয়েছে, তার সবগুলোই সশস্ত্র বাহিনীর কাছে পাঠানো হয়েছিল। সেনা সদস্যরা এই পরিস্থিতিতে দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শরীয়তপুরের একজন ওসি প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমাদের সদস্যরা এখনো আতঙ্কে ভুগছে। অভিযানে যেতে ভয় পাচ্ছেন। শুধু একটি সাধারণ ডায়েরি নেয়া ছাড়া এই মুহূর্তে আর কিছু করতে পারব না।
একই রকম কথা বলেন ঢাকার অপর এক থানার ওসি। প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ দিতে গেলে ঐ থানার ডিউটিরত কর্মকর্তা ভুক্তভোগীকে বলেন, “এ বিষয় নিয়ে আপনি সেনাবাহিনীর কাছে যান।”
‘আমার থানায় মামলার নথি, পরোয়ানা, গাড়ি সব কিছু পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। অস্ত্র ও গুলি লুট হয়েছে। আমরা সীমিত আকারে টহল শুরু করেছি, তবে অনেক কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের পক্ষ থেকে দু’টি গাড়ি দেয়া হয়েছে। আমরা এখনো বের হয়ে সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার শুরু করতে পারিনি,’ বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানীর একটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মইনুল ইসলাম এই সংকটের কথা স্বীকার করে গণমাধ্যমকর্মীদের  বলেন, আমরা কখনো পুলিশিং বন্ধ করিনি। কোথাও কোথাও থানা ভাঙচুর করা হয়েছে, আমাদের কোনো পরিবহন ছিল না: প্রায় ৩০০ যানবাহন ধ্বংস হয়ে গেছে বা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেসব থানা মেরামত ও যানবাহন সরবরাহ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, যেসব এলাকায় পুলিশের তৎপরতা ছিল না, সেখানে কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে। ‘নতুন এসপি, রেঞ্জ ডিআইজি ও কমিশনাররা তাদের কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন, আশা করি কাজে গতি বাড়বে খুব দ্রুত।’ জাতীয় জরুরি সেবার প্রধান ডিআইজি মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ বলেন, ন্যাশনাল হেল্পলাইন সার্ভিসের কর্মকর্তারা সীমিত জনবল ও লজিস্টিক নিয়ে মানুষকে সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজধানীতে ৯৪ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ২৭৮টি মামলা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে পুলিশের সাবেক তিন মহাপরিদর্শকও রয়েছেন। কনস্টেবল থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে আটজন অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, সাতজন উপমহাপরিদর্শক, ১২ জন পুলিশ সুপার, ১৪ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ছয়জন সহকারী পুলিশ সুপার, ১২ জন ওসি, আটজন পরিদর্শক, ১০ জন উপপরিদর্শক ও একজন সহকারী উপপরিদর্শক রয়েছেন।
এ পর্যন্ত নয়জন অতিরিক্ত আইজিপি, দুইজন অতিরিক্ত আইজিপি, পাঁচজন ডিআইজি ও একজন অতিরিক্ত ডিআইজিসহ ১৭ জন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফী গ্রেফতার হয়েছেন।
পুলিশের উপমহাপরিদর্শক কাজী জিয়া উদ্দিন জানান, ‘৯৯ শতাংশের বেশি পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছেন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স