ঢাকা , বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ , ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সবাই মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ হয়েছে-আলী রীয়াজ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বদলিতে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন রাস্তায় অভিনেতাকে সিদ্দিককে গণপিটুনি কারিগরি শিক্ষার্থীরা যা শিখছেন, চাকরির বাজারে তার চাহিদা নেই -সিপিডি আগামী নির্বাচনে সীমিত পরিসরে হলেও প্রবাসীদের ভোটের প্রস্তুতি চলছে : সিইসি জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশকে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে গড়িমসি অপকর্ম বন্ধ করুন, নইলে বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে -নেতাকর্মীদের ফখরুল সভ্য হতে হলে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান বইপ্রেমী এক ডিসির গল্প গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ দুই বোন ই-৮ ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলেন ২৫ কর্মী পুলিশের জন্য ১৭২ কোটি টাকায় কেনা হবে ২০০ জিপ সামাজিক সুরক্ষায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৬ লাখ ২৪ হাজার উপকারভোগী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে লিপ্ত থাকার অভিযোগ গ্যাস খাতে বছরে আর্থিক ক্ষতি বিলিয়ন ডলার নতুন লুকে নজর কাড়লেন ব্লেক লাইভলি
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল

চিকিৎসক ও নানা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে

  • আপলোড সময় : ২৩-০১-২০২৫ ০২:৪৭:০৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-০১-২০২৫ ০২:৪৭:০৩ অপরাহ্ন
চিকিৎসক ও নানা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি চিকিৎসক ও শয্যা সংকট, চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত ওষুধ, দালালদের দৌরাত্ম্য, পরীক্ষা-নিরীক্ষার অপ্রতুল ব্যবস্থাসহ নানা সংকটে ঝিনাইদহ জেলার অন্যতম প্রধান সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল। ফলে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। এ হাসপাতালে ধারণক্ষমতার প্রায় চার গুণ রোগী ভর্তি হওয়ার কারণে অনেকের বিছানা হয়েছে মেঝেতে ও বারান্দায়। ডায়রিয়া, পেটব্যাথা, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, মাহামারি, গর্ভকালীন জটিলতা, তীব্র শীতে ঠান্ডা, কাশিসহ নানান রোগে আক্রান্ত রোগীদের চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। ২৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত হলেও আগের ১০০ শয্যার জনবল দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এই হাসপাতাল। আবার ১০০ শয্যার জনবলেরও বেশির ভাগ পদ শূন্য। সরেজমিনে গিয়ে এ রকম অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া যায় চিকিৎসক-নার্স এবং সেবা নিতে আসা একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে। সরেজমিনে ঘুরে চিকিৎসক ও জনবল সংকটের সত্যতা পাওয়া যায়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সারাদিনে মাত্র একবার চিকিৎসকের দেখা মেলে। দুপুর ২টার পর হাসপাতালে কোনো রোগী ভর্তি হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ছাড়া পরের দিন সকালে ডাক্তার ভিজিটের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ওয়ার্ডে কোনো চিকিৎসকের দেখা মেলে না। এমনকি কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলেও তার রিপোর্ট দেখাতে হলে রোগীকে ভর্তির পর ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অন্যদিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জন্য স্বল্প মূল্যে সরকারিভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও জনবল সংকটের কারণে দুপুর ১টার পর হাসপাতালে আর কোনো পরীক্ষা করানো যায় না। তাই বাধ্য হয়ে দু-তিন গুণ বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে পরীক্ষা করতে হয় রোগীদের। ওয়ার্ডের শয্যা সংকট, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও শৌচাগার নিয়েও ক্ষোভ জানান রোগীরা। রোগীর স্বজনদের ভাষ্যমতে, গুরুত্বপূর্ণ দামি কোনো ইনজেকশন, ওষুধ, লিলেন সামগ্রী, গজ, ব্যান্ডেজ রোগীদের দেয়া হয় না। কম দামের দুয়েকটা ওষুধ ছাড়া বাকি সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। এদিকে বাড়তি ভোগান্তি যোগ হয়েছে চিকিৎসকের কক্ষের সামনে বিক্রয় প্রতিনিধিদের জটলা। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার ছুটির দিনের অজুহাতে চিকিৎসকরা ঠিকমতো ভিজিট করেন না। প্রতি রাতে কয়েকজন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করলেও সব ওয়ার্ডে তারা যান না। তাই রাতে রোগীদের ভরসা হিসেবে থাকেন ওয়ার্ডবয় ও নার্সরা। কোনো সমস্যা হলেই নার্সদের দৌঁড়ঝাঁপ শুরু হয়। অপরদিকে জরুরি বিভাগে একজন চিকিৎসক থাকলেও তিনি হিমশিম খান রোগী সামলাতে। সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা মাসুম, অপু, মেহেদী হাসান জানান, হাসপাতালে টিকিট কাটতে হলে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাইনে দাঁড়াতে হয়। এরপর চিকিৎসকের কক্ষের সামনে অপেক্ষায় থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘন্টা। অন্য চিকিৎসকের কাছে রেফার্ড করলে সেখানেও লাইন ধরে অপেক্ষায় থাকতে হয়। আবার রোগ নির্ণয়ে টেস্ট করাতে হলে সেখানেও টাকা জমা দেয়ার লাইনে থাকতে হয় কয়েক ঘণ্টা। টেস্ট স্যাম্পলও দিতে হয় দীর্ঘ সময় লাইনে অপেক্ষায় থেকে। চিকিৎসা নিতে আসা আরাপপুরের রবিন বলেন, ‘এই হাসপাতালে দুর্ভোগের কোনো শেষ নেই। জরুরি বিভাগে ডিপ্লোমা করা ইন্টার্নদের দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। একটু জটিল রোগী হলেই রেফার করা হয় ঢাকা কিংবা ফরিদপুরে। হাসপাতাল অপরিচ্ছন্ন উল্লেখ করে গোলাম সরোয়ার বলেন, হাসপাতালের শৌচাগারে যাওয়া যায় না, একেবারে অপরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধময়। তবে হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, জনবল ও শয্যা সংকটের কারণে সমস্যার সৃষ্টি হলেও তারা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে সাধ্যমতো কাজ করছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে, ২৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে ৬৪ জন চিকিৎসকের পদের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত আছেন ৪১ জন। সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে ১৩টি, মিডওয়াইফ পদে ৬টি, স্টাফ নার্স পদে ২টি এবং অকুপেশনাল থেরাপিস্ট পদে একটিসহ মোট ৭৭টি শূন্যপদ রয়েছে। সূত্রমতে, প্রতিদিন ইনডোরে ৩০০ থেকে ৪০০ রোগীকে সেবা দিতে হয়। এ ছাড়া আউটডোরে প্রতিদিন ৭০০-৮০০ রোগী চিকিৎসা নেন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে কাগজে কলমে হেলথ এডুকেটর আলমগীর হোসেন, ডা. মো. ওহিদুজ্জামান, জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), ডা. মো. আব্দুল কাদের, জুনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওলজি, আইএমও ডা. মো. এ কে এম সুয়াজেত হোসেনের পদায়ন হলেও মূলত তারা যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে সংযুক্ত আছেন। এ কারণে রোগীদের চিকিৎসা সেবার সংকট আরও বেড়েছে। ওই দুটি বিভাগের রোগীরা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে। জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের চিকিৎসক এবং জনবল নির্দিষ্ট পদের থেকে কম। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা দিতে যদিও হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও সাধ্যমতো সেবা দিতে চেষ্টা করছি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ