ঢাকা , বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ , ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সবাই মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ হয়েছে-আলী রীয়াজ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বদলিতে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন রাস্তায় অভিনেতাকে সিদ্দিককে গণপিটুনি কারিগরি শিক্ষার্থীরা যা শিখছেন, চাকরির বাজারে তার চাহিদা নেই -সিপিডি আগামী নির্বাচনে সীমিত পরিসরে হলেও প্রবাসীদের ভোটের প্রস্তুতি চলছে : সিইসি জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশকে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে গড়িমসি অপকর্ম বন্ধ করুন, নইলে বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে -নেতাকর্মীদের ফখরুল সভ্য হতে হলে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান বইপ্রেমী এক ডিসির গল্প গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ দুই বোন ই-৮ ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলেন ২৫ কর্মী পুলিশের জন্য ১৭২ কোটি টাকায় কেনা হবে ২০০ জিপ সামাজিক সুরক্ষায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৬ লাখ ২৪ হাজার উপকারভোগী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে লিপ্ত থাকার অভিযোগ গ্যাস খাতে বছরে আর্থিক ক্ষতি বিলিয়ন ডলার নতুন লুকে নজর কাড়লেন ব্লেক লাইভলি

হাকালুকি হাওরে পরিযায়ী পাখি কমছে

  • আপলোড সময় : ২৮-০১-২০২৫ ১২:২২:১৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৮-০১-২০২৫ ১২:২২:১৫ অপরাহ্ন
হাকালুকি হাওরে পরিযায়ী পাখি কমছে
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি একদিকে বিষটোপ ও জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে পরিযায়ী পাখি শিকার করা হচ্ছে, অন্যদিকে পাখির আবাসস্থল হিজল, করচ, বরান ও মুর্তা গাছ কমে গেছে। এ ছাড়াও সম্প্রতি প্রলম্বিত বন্যা ও বৃষ্টির কারণে পরিযায়ী পাখিদের জন্যে সহায়ক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিটি জলাশয়ে মৎস্য আহরণ চলছে এবং কিছু কিছু জলাশয় প্রায় পানিশূন্য করে মাছ শিকার করা হচ্ছে। ব্যাপকভাবে কীটনাশকের ব্যবহারও বেড়েছে হাওর এলাকায়। নানা কারণে বিগত বছরের তুলনায় এবার মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা তুলনামূলক কম দেখা গেছে। গত ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি হাকালুকি হাওরে দু’দিনব্যাপী জলচর পাখিশুমারি শেষে এসব তথ্য জানা গেছে। এবার পাখিশুমারিতে ৩৫ হাজার ২৬৮টি পাখি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে বলে জানান জরিপে অংশগ্রহণকারী পাখি বিশেষজ্ঞরা। জরিপে অংশ নেন ওমর শাহাদাত, খালেক মিলা, সুলতান আহমেদ, সাব্বির আহমেদ, উজ্জ্বল দাস, আবু মুসা রাজু, মাহফুজ হিমেল ও খোরশেদ আলম। জানা যায়, ২০২৪ সালে হাকালুকি হাওরে পাখিশুমারি হয়নি। এর আগের বছর ২০২৩ সালে পাখিশুমারিতে হাওরে ৫২ প্রজাতির ৩৭ হাজার ৭৭৮টি, ২০২২ সালে ৫১ প্রজাতির ৩৬ হাজার ৫০১টি পাখি দেখা গিয়েছিল। এ ছাড়া ২০২০ সালে ৫৩ প্রজাতির ৪০ হাজার ১২৬টি এবং এর আগের বছর ২০১৯ সালে ৫১ প্রজাতির ৩৭ হাজার ৯৩১টি পাখির দেখা মিলেছিল। চলতি বছরে হাকালুকি হাওরে ৩৫ হাজার ২৬৮টি পাখি জরিপে দেখা গেছে। ১৮ হাজার ১১৫ হেক্টর আয়তনের হাকালুকি হাওরের বিস্তার মৌলভীবাজার এবং সিলেট জেলার ছয়টি উপজেলা জুড়ে। ১৯৯৯ সালে পরিবেশ অধিদফতর হাকালুকি হাওরকে পরিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে। কেননা, অতিথি পাখিদের বিশ্রামস্থল হিসেবে পরিচিত হিজল ও করচ গাছ ধ্বংস করে ফেলায় অতিথি পাখির সংখ্যা কমে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিনিধি দল এ শুমারি করছে। এ কাজে সহযোগিতা করেছে বেসরকারি সংস্থা সিএনআরএস ও বাংলাদেশ বন অধিদফতর। পাখিশুমারি দল জানায়, চলতি মৌসুমে হাকালুকি হাওরের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ৪৫টি বিলে চালানো গণনায় ৩৫ হাজার ২৬৮টি পাখি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পিংলা বিলে বিশ্বব্যাপী বিপন্ন বেয়ারের ভূতি হাঁস দুটি, নাগুয়া-লরিবাই বিলে বাংলাদেশের বিরল প্রজাতির বৈকাল তিলিহাঁস একটি, প্রায় সংকটাপন্ন ফুলুরি হাঁস তিনটি, মরচে রঙা ভূতিহাঁস ১ হাজার ৫৮৮টি, উত্তুরে টিটি ৬টি, সংকটাপন্ন কালো মাথা কাস্তেচরা ৩৯৩টি এবং বিশ্বব্যাপী বিপন্ন পাতি ভূতিহাঁস ৯০৯টি। এ ছাড়াও পিয়ং হাঁস ৫ হাজার ৫৫২টি, উত্তুরে ল্যাঞ্জ্যা হাঁস ৪ হাজার ২৭২টি এবং এশীয় শামুকখোল ৪ হাজার ২২৮টি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। নাগুয়া বিলে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে পাখি শিকার, পিংলা বিলের পাশে বিষটোপ (কার্বোটাফ) দিয়ে পাখি শিকারের নমুনা স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। হাতেনাতে ধরে জালও নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি পরিত্যক্ত মাছ ধরার ফাঁদ হাওরে ব্যাপকভাবে দৃশ্যমান, যা অতিথি পাখির জন্য হুমকি। স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা জানান, হাকালুকি হাওরের প্রতিবেশ প্রতিনিয়ত সংকটাপন্ন হচ্ছে। যার ফলে বর্ষার সময় দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতা, শুষ্ক মৌসুমে পানিশূন্যতার প্রধান কারণ হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে নদীনালা ও বিল খনন না করা। পাহাড়ি পলিতে বিলগুলো ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়েছে। এ ছাড়াও ফাঁদ পেতে অতিথি পাখি শিকার চলছে বিলগুলোতে। এতে হাওরের প্রতিবেশ বিভিন্ন প্রজাতি পাখির জন্য সংকটাপন্ন হয়েছে। মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। পাখি শিকার বন্ধে বিভিন্ন এলাকায় আমাদের অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।’ তিনি জানান, লোকবল সংকট থাকায় পাখি শিকার বন্ধ করা যাচ্ছে না। জুড়ি উপজেলার বাসিন্দা জালাল আহমদ জানান, হাওরে অতিথি পাখিদের খাদ্য জলজ উদ্ভিদগুলো না থাকার কারণে এবারের শীতে অতিথি পাখির সংখ্যা কম দেখা গিয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ