ঢাকা , রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫ , ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
করোনা-ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা নকলমুক্ত রাখতে একগুচ্ছ নির্দেশনা ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য কফিনে শেষ পেরেক-প্রেস সচিব ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা প্রাণ গেল ৫ জনের পঞ্চগড়ের দুই সীমান্ত দিয়ে চার ভারতীয়সহ ১৬ জনকে পুশইন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসছে রেকর্ডসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ বাস কম যাত্রী বেশি, বাড়তি টাকা দিয়েও মিলছে না টিকিট বেনাপোলে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি আর লিজ দেয়া হবে না পরিবেশ উপদেষ্টা যৌথ বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধÑ খেলাফত মজলিস ‘ট্যুর এক্সপার্ট’ অ্যাডমিন বর্ষা গ্রেফতার মৌসুমি ফলে ভরপুর বাজার দাম নিয়ে অসন্তোষ ক্রেতাদের সিলেটে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু রোগী ও স্বজনদের মারধর করলেন ওয়ার্ড বয় উত্তরায় র‌্যাবের পোশাক পরে ‘নগদ’ এজেন্টের কোটি টাকা ছিনতাই বাড়ছে করোনা সংক্রমণ মানা হচ্ছে না নির্দেশনা নতুন করে সংকটের মুখে দেশের পোশাক খাত নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নগরে ফিরছে মানুষ পথে পথে ভোগান্তি এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো-আনু মুহাম্মদ

স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই অধিকাংশ কৃষকের

  • আপলোড সময় : ০৯-০২-২০২৫ ১০:৪২:০১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-০২-২০২৫ ১০:৪২:০১ অপরাহ্ন
স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই অধিকাংশ কৃষকের
তারা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কৃষকরা স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই ধানখেতে পোকা-মাকড় আর আগাছা দমনে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক স্প্রে করছেন। প্রতিদিন সকাল হলেই এমন চিত্র দেখা যায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে তারা মানছে না কোন নিয়ম। এতে করে শ্বাসকষ্ট, চামড়ায় ফোসকা, লিভার, কিডনি রোগসহ বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন কৃষকরা। বিশেষ কীটনাশক স্প্রে করায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিয়েছে। তালা উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে এবার ১৯ হাজার ১শ ৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। কৃষকদের অভিযোগ, কীটনাশক স্প্রে আর সার ব্যবহারে কৃষি দফতরের সহযোগিতা পান না তারা। তাই না জেনেই এমন স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। অন্যদিকে কৃষি বিভাগের বলছেন কৃষদের বারবার সচেতন করলে ও কাজে আসছে না কোনো কিছুই। নেই কারও নাকে-মুখে মাস্ক বা কাপড়। হাতে নেই কোনো হাতমোজা বা গ্লাভস। কাঁধে ঝোলানো মেশিনে ভর্তি কীটনাশক। এভাবেই প্রতিদিন রোপা আমন বিস্তৃর্ন ধানখেতে কীটনাশক “বিষ” স্প্রে করছেন কৃৃষকরা। সকাল ৮টার পূর্বে এবং বিকাল ৪টার পর কীটনাশক স্প্রে করার উপযোগী সময় এবং সার ও কীটনাশক স্প্রে করতে হলে বিশেষ পোশাক পরিধান করার নিয়ম রয়েছে। পাটকেলঘাটার কৃষকরা সারাদিন প্রখর রৌদ্রে এভাবেই হাজার হাজার বিঘা ধানক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করছে। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে মানা হচ্ছে না কোন নিয়ম-কানুন বা দিকনির্দেশনা।
অনেক কৃষক টি-শার্ট পরে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন। কেউ আবার জমিতে আগাছানাশক মিশিয়ে হাতমোজা ছাড়াই হাত দিয়ে ছিটাচ্ছেন রাসায়নিক সার। কীটনাশকের প্যাকেট বা বোতলের গায়ে স্পষ্ট অক্ষরে বিষ লেখা থাকলেও তা কেউ মানছেন না। নিয়ম-নীতি না মেনেই কৃষকরা যে যার মতো জমিতে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন। আবার অনেকে মুখে মাস্ক ছাড়াই কীটনাশক স্প্রে করায় অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষক তার ধান ক্ষেতে রোগ বলাই দমনে কীটনাশক স্প্রে করছেন। এ সময় পাটকেলঘাটার আমতলাডাঙ্গা এলাকার কৃষক আজগার ও সিরাজুল গাজীর সাথে কথা হয়। তারা বলেন, কৃষি অফিস থেকে আমাদের এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আমরা যখন সার ও কীটনাশক স্প্রে করি তখন আমাদের মাথা ঘোরে, বমির ভাব হয়। শরীরে বিভিন্ন অসুখ দেখা দেয়। আমরা সাধারণ কৃষক মানুষ। সকাল হলেই ফসলের মাঠে যেতে হয়। এত নীয়ম মেনে কিভাবে চলবো?
আরও এক কৃষক ইনছার মোড়ল জানালেন, আমরা প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক। কৃষিই আমাদের জীবিকার উৎস। বিধি মেনে চলতে গেলে স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের উদ্যেগ নিতে হবে কৃষি বিভাগকে। গ্রামের সাধারণ কৃষকরা এসব বিষয়ে জানেনা। পাটকেলঘাটা এলাকার শরিফুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম জানান, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় জমিতে ছিটানো কীটনাশকের দুগর্ন্ধে নিশ্বাস নিতে পারি না। চলাচল করতে কষ্ট হয়। দুই ভাবে এসব বিষাক্ত পদার্থগুলো শরীরে প্রবেশ করে। এতে করে রক্তে গিয়ে কান-মুখ, চোখ জ্বালাপোড়া করে। চামড়ায় ফোসকা পড়ে ঘা হয়। আবার লাগে গেলে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তালা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজিব সরদার বলেন, ধান ক্ষেতে স্প্রে করা এসব বিষাক্ত পদার্থগুলো শরীরে প্রবেশ করায় অনেকে সময় শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ ও চর্ম রোগে আক্রান্ত হয়। তবে মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস ও পোশাক পরিধান করে কীটনাশক ব্যবহার করলে এসব রোগ থেকে সুরক্ষা সম্ভব।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা বেগম বলেন, ধান সহ বিভিন্ন ফসলে বালাইনাশক স্প্রে করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সচেতনতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন বাতাসের বিপরিতে স্প্রে করা যাবে না। স্প্রে করার সময় মাক্স, গ্লাভস, চশমা ব্যবহার করতে হবে। যাতে শরীরের কোন অংশে এই কীটনাশকের কোন আবরন পৌঁছাতে না পারে। নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রেখে কৃষকরা যাতে ছত্রাক নাশক ও কীটনাশক স্প্রে করে সেজন্য আমরা বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দিয়ে থাকি। বিভিন্ন উঠান বৈঠকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকে, যাতে এই কীটনাশকের ঝুঁকি থেকে তারা রক্ষা পেতে পারে। তবে আমাদের কৃষকরা অনেক সচেতন রয়েছেন। সকাল ৮টার পূর্বে এবং বিকাল ৪টার পর ছত্রাক নাশক ও কীটনাশক স্প্রে করলে ফসলের গুণাগুণ ভালো থাকে। এব্যপারে আমাদের পরামর্শ অব্যাহত আছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য