ঢাকা , সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫ , ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার পদত্যাগ ঈদের লম্বা ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরে শিডিউল বিপর্যয় অবৈধভাবে ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগে টিউলিপকে দুদকের তলব আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিহত দুই কর্মীকে নিয়ে জামায়াত-বিএনপি ঠেলাঠেলি মোসাদের দুই গুপ্তচরকে আটক করেছে ইরান ১০ দিনের ছুটি শেষে খুলেছে সরকারি অফিস খেলাপি ঋণ ছাড়াল ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা যারা খেলে খেলুক আমরা শুধু রেফারি হয়ে কাজ করব-সিইসি এনটিআরসিএতে অবস্থান নিয়েছেন ভাইভায় ফেল করা প্রার্থীরা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ পুলিশের লাঠিচার্জ মানবিক পুলিশ চাচ্ছি আমরা, সবার সঙ্গে যেন ভালো ব্যবহার করে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পাচার অর্থ ফেরাতে সরকার চাইলে এখনই আইনজীবী নিয়োগ সম্ভব-গভর্নর শেষ মুহূর্তে রাজধানীতে মানুষের স্রোত গ্যাস সিলিন্ডারজনিত অগ্নি দুর্ঘটনা বাড়ছে কারাগারে ‘ফাঁস নিলেন’ বিরুলিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান সুজন আজ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার জরুরি বৈঠকের ডাক ইরানের হামলায় তছনছ ইসরায়েল করোনা-ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা নকলমুক্ত রাখতে একগুচ্ছ নির্দেশনা ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য কফিনে শেষ পেরেক-প্রেস সচিব

২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল

  • আপলোড সময় : ১৭-০৩-২০২৫ ১২:২৭:৩০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০৩-২০২৫ ১২:২৭:৩০ পূর্বাহ্ন
২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), জেল আপিল ও আপিলের ওপর রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। রায়ে বিচারিক আদালতের রায় অনুযায়ী ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন উচ্চ আদালত। আসামিদের (ডেথ রেফারেন্স) মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন এবং আপিল খারিজ করে গতকাল রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে বি রুমি, জহিরুল ইসলাম সুমন, নূর মোহাম্মদ আজমী, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ। আর আসামিপক্ষে উপস্থিত ছিলেন, আইনজীবী মাসুদ হাসান চৌধুরী, আজিজুর রহমান দুলু। এছাড়া আদালত কক্ষে আসামিদের পরিবারের সদস্য এবং ভিকটিম আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজ ও বাবা বরকত উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াই আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, রায়ে তারা আপাতত সন্তুষ্ট। তবে, এই রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয় সেটিও প্রত্যাশা তার। রায়ের পর এক সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় আবরার ফাইয়াজ বলেন, রায় বহাল রয়েছে। আমরা অবশ্যই সন্তুষ্ট। আমরা আশা করবো অতি দ্রুত যে প্রক্রিয়াগুলো আছে সেগুলো সম্পন্ন করে রায় কার্যকর করা।
বরকত উল্লাহ বলেন, নিম্ন আদালতের রায় বহাল রয়েছে। এ রায়টা যেন অতিদ্রুত কার্যকর হয়। আমরা আপাতত সন্তুষ্ট। এ রায় দ্রুত কার্যকরের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই। একজন আসামির জেল থেকে পলাতকের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমরা ছয় মাস পরে জানলাম। এটা আমাদের কাছে প্রশ্ন না করে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন করাই ভালো। এটা আমরা কিছু বলতে পারবো না।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ করে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আবরারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।’ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ওই মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়, যেটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। ফৌজদারি কোনো মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কারও মৃত্যুদণ্ড হলে, তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যেটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করতে পারেন। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও এসব আপিলের ওপর একসঙ্গে হাইকোর্টে শুনানি হয়ে থাকে।
ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেল আপিল ও আপিল করেন। পৃথক জেল আপিল গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে ওঠে। সেদিন আদালত তা শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। পাশাপাশি আপিল করেন কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা। আসামিদের এই ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে একসঙ্গে শুনানি হয়।
গত বছরের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করে। এরপর পেপারবুক থেকে উপস্থাপনের মাধ্যমে গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে পুনরায় শুনানি হয়। সেদিন থেকে মধ্যে এক দিন ছাড়া প্রতি কার্যদিবসে শুনানি হয়। সর্বশেষ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি নিয়ে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, খন্দকার বাহার রুমি, নূর মুহাম্মদ আজমী ও রাসেল আহম্মেদ এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল জব্বার জুয়েল, লাবনী আক্তার, তানভীর প্রধান ও সুমাইয়া বিনতে আজিজ শুনানিতে ছিলেন। আসামিপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু, মাসুদ হাসান চৌধুরী, মোহাম্মদ শিশির মনির প্রমুখ শুনানিতে অংশ নেন। প্রায় চার বছর আগে এ মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। আসামিরা সবাই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা-কর্মী। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুনতাসির আল জেমি, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান, এস এম মাহমুদ সেতু, মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ। তখন ৩ জন পলাতক ছিলেন। তারা হলেন মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. আকাশ হোসেন, মুয়াজ আবু হুরায়রা, অমিত সাহা ও ইশতিয়াক আহমেদ মুন্নার। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি গত ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের দেওয়াল ভেঙে পালান বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স