ঢাকা , বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫ , ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ইশরাক-কায়কোবাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর অভিযোগ করেছে আসিফ প্রতীকী মূল্যে সরকারি সম্পত্তি কাউকে দেওয়া হবে না-অর্থ উপদেষ্টা আমরা সংস্কারকে ভয় পাই না স্বাগত জানাই-মির্জা ফখরুল মবতন্ত্র দেশকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে-গণসংহতি প্রেস কাউন্সিলে নতুন কমিটি, ১২ জনকে অন্তর্ভুক্ত বাস-ট্রাক চালকদের ভালো স্বাস্থ্য আমাদের সবার জন্য জরুরি ডানপন্থী রাজনীতিতে বেড়েছে দৃশ্যমানতা জুলাই শুধু স্বৈরাচার মুক্তির মাস নয়, এটা পুনর্জন্মের মাস : প্রধান উপদেষ্টা পুঁজিবাজারে কোটি টাকা হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েছে জলবায়ু পরিবর্তন-খাদ্য সংকটে হুমকিতে সুন্দরবনের বাঘ জুলাই সনদের খসড়ায় আপত্তি জানিয়েছে এনসিপি-জামায়াত বিচার নিয়ে আমাদের আন্তরিকতায় সন্দেহ রাখবেন না -আইন উপদেষ্টা নৈরাজ্যের শঙ্কা দেশজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি ১৬০ দিন পর কুয়েটে ক্লাস শুরু বাড়ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি, ডুবছে ঝুলন্ত সেতু ৯ জন উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ ৬ ‘খোলা জানালা’ সেবা চালু করেছে ‘ডিআরইউ’ বগুড়ায় কার্গো সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের অফিসে ডাকাতি সাড়ে ১৭ লাখ টাকা লুট ৩৯৩ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি মৃত্যু একজনের ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজ নারীর লাশ ৩৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার

ডেঙ্গুর তীব্র ঢেউয়ের শঙ্কাতেও প্রতিরোধ প্রস্তুতিতে নজর নেই

  • আপলোড সময় : ০৬-০৪-২০২৫ ১১:৫৯:১৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০৪-২০২৫ ১১:৫৯:১৯ অপরাহ্ন
ডেঙ্গুর তীব্র ঢেউয়ের শঙ্কাতেও প্রতিরোধ প্রস্তুতিতে নজর নেই
দেশে এবার ঢেঙ্গুর ঢেউ আসার শঙ্কা রয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজর নেই। দুই দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে ধারাবাহিকভাবে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৯-এর পর থেকে এর প্রাদুর্ভাবের পরিমাণ অনেক বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যুহার ছিল, শূন্য দশমিক ৫২। বর্তমানে বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার বিশ্বে সর্বোচ্চ। চার বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এই বাড়তি হার লক্ষ করা যাচ্ছে। আর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি থেকে ২৯ মার্চ) আগের যেকোনো সময়ের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি। মূলত কয়েকটি কারণে এ বছর মশাবাহিত ডেঙ্গুসহ নানা রোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু তা প্রতিরোধে যথাযথ প্রস্তুতিতে নজর নেই। স্বাস্থ্য খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে এতোদিন ডেঙ্গুর যে ধরন বেশি সক্রিয় ছিল, তার পরিবর্তে নতুন একটি ধরনে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ফলে এবার ডেঙ্গু রোগীদের অবস্থা জটিল হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে। এরই মধ্যে নতুন ভীতি হিসেবে এসেছে চিকুনগুনিয়া। এ বছর ওই রোগের সংক্রমণও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে চলতি বছরে মার্চের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত দেশে যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে, অতীতে এই সময়ে তা কখনো হয়নি। এবার রাজধানীর চেয়ে অন্যান্য জেলায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সংক্রমণ কমাতে সরকারি তৎপরতা তেমন নেই।
সূত্র জানায়, সাধারণত বর্ষাকালে ডেঙ্গু বেশি হয়। বাংলাদেশেও বর্ষায় প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে এবং আগামী অক্টোবর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। শীতকালে সাধারণত ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসে। কিন্তু এবার শীত তেমন জেঁকে নামেনি। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। আর ফেব্রুয়ারিতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ফলে এবারের শীত অনেকটাই এডিস মশার অনুকূলে ছিল। কিন্তু মশার বিস্তার রোধে যথাযথ উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় সরকার অগোছালো অবস্থায় থাকায় উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে জনস্বাস্থ্যের জরুরি এই বিষয়টি। এবার যদি বর্ষা দীর্ঘায়িত হয় এবং মশা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা রোধ না করা যায়, তবে ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত যত ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন, তার মাত্র ৩১ শতাংশ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের। বাকিরা ঢাকার বাইরের। এখন পর্যন্ত বরিশালে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, চলতি বছরের শুরু থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৪৯ জন। দেশে ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২ লাখ ৪৪ হাজার ২৪৬ জন। ওই সময় ৮৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আর ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলো ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আগের ২২ বছরের তুলনায় ওই বছর সংক্রমণও অনেক বেশি ছিল। আর ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮২৫ জন। পরের বছরের (২০২৪) জানুয়ারি থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত রোগী ছিল ১ হাজার ৬৪৫ জন। বর্তমানে বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে গড় হারের চেয়ে গত তিন মাসে হার বেড়ে গেছে। এখন ওই হার শূন্য দশমিক ৬২৫। গত তিন মাসে ডেঙ্গুতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবার চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে যত আক্রান্ত হয়েছে, তা দেশে আর কোনো সময় হয়নি।
এদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু বিস্তারের বড় কারণ মশার নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগ নেই। মশা আপন মনে বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া অপরিকল্পিতভাবে নতুন নতুন শহর গড়ে উঠছে। সেখানে নতুন নতুন প্রজননক্ষেত্র বাড়ছে।  তাছাড়া রাজধানীর বাইরে সিটি করপোরেশনগুলোতে মশা নিধনে তৎপরতা কম। রাজধানীর উত্তর সিটিতে একজন কীটতত্ত্ববিদ আছেন। দক্ষিণে বাইরের কীটতত্ত্ববিদের কাছ থেকে সহায়তা নেয়া হয়। এর বাইরের সিটি করপোরেশনগুলোতে কীটতত্ত্ববিদের কোনো বালাই নেই। ডেঙ্গুকেন্দ্রিক পরিকল্পনা ও তৎপরতা-দুইয়েরই ঘাটতি যথেষ্ট। আর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আলাদা করে বাজেট নেই। তবে মশক ওষুধ ক্রয় খাতে চলতি অর্থবছরে চার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চসিকে কোনো কীটতত্ত্ববিদও নেই।  ডেঙ্গু সাথে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নগরকেন্দ্রিক পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগও জড়িত। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক মো. হালিমুর রশীদ জানান, রোগী বাড়ার অর্থ হলো মশা বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রোগীর চিকিৎসার বিষয় দেখে। মশা নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু মশা তো নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। এবারের শীত এডিস মশার অনুকূলে ছিল অনেকটাই। আর মশার বিস্তার রোধে যথাযথ উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় সরকার অগোছালো অবস্থায় আছে। ফলে জরুরি এই জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি উপেক্ষিতই থাকছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স