ঢাকা , বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫ , ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ইশরাক-কায়কোবাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর অভিযোগ করেছে আসিফ প্রতীকী মূল্যে সরকারি সম্পত্তি কাউকে দেওয়া হবে না-অর্থ উপদেষ্টা আমরা সংস্কারকে ভয় পাই না স্বাগত জানাই-মির্জা ফখরুল মবতন্ত্র দেশকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে-গণসংহতি প্রেস কাউন্সিলে নতুন কমিটি, ১২ জনকে অন্তর্ভুক্ত বাস-ট্রাক চালকদের ভালো স্বাস্থ্য আমাদের সবার জন্য জরুরি ডানপন্থী রাজনীতিতে বেড়েছে দৃশ্যমানতা জুলাই শুধু স্বৈরাচার মুক্তির মাস নয়, এটা পুনর্জন্মের মাস : প্রধান উপদেষ্টা পুঁজিবাজারে কোটি টাকা হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েছে জলবায়ু পরিবর্তন-খাদ্য সংকটে হুমকিতে সুন্দরবনের বাঘ জুলাই সনদের খসড়ায় আপত্তি জানিয়েছে এনসিপি-জামায়াত বিচার নিয়ে আমাদের আন্তরিকতায় সন্দেহ রাখবেন না -আইন উপদেষ্টা নৈরাজ্যের শঙ্কা দেশজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি ১৬০ দিন পর কুয়েটে ক্লাস শুরু বাড়ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি, ডুবছে ঝুলন্ত সেতু ৯ জন উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ ৬ ‘খোলা জানালা’ সেবা চালু করেছে ‘ডিআরইউ’ বগুড়ায় কার্গো সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের অফিসে ডাকাতি সাড়ে ১৭ লাখ টাকা লুট ৩৯৩ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি মৃত্যু একজনের ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজ নারীর লাশ ৩৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার
বাজেট ২০২৫-২৬

কমতে পারে জমি-ফ্ল্যাটের নিবন্ধন কর

  • আপলোড সময় : ০৭-০৪-২০২৫ ০২:৩৯:৫৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৭-০৪-২০২৫ ০২:৩৯:৫৩ অপরাহ্ন
কমতে পারে জমি-ফ্ল্যাটের নিবন্ধন কর
অর্থনৈতিক রিপোর্টার আগামী অর্থবছরের বাজেটে জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনে কর কমাতে পারে সরকার। এ বিষয়ে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বর্তমানে জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ নিবন্ধন খরচ রয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। যার মধ্যে ৭ থেকে ১১ শতাংশ এনবিআর সংশ্লিষ্ট কর। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাত্রাতিরিক্ত নিবন্ধন ব্যয়ের কারণে ক্রেতা-বিক্রেতারা বৈধভাবে স্থাবর সম্পদ কেনাবেচা করেন না। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারায় সরকার। এছাড়া উচ্চ মূল্যের নিবন্ধন খরচের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের আবাসন খাত। আবাসন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে ফ্ল্যাটের আকারভেদে নিবন্ধন ব্যয় সাড়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। যার মধ্যে গেইন ট্যাক্স ৮ শতাংশ, স্ট্যাম্প শুল্ক দেড় শতাংশ, নিবন্ধন ফি ১ শতাংশ, স্থানীয় সরকার ফি ৩ শতাংশ এবং ১ হাজার ৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত ভ্যাট ২ শতাংশ ও ১ হাজার ৬০০ বর্গফুটের ওপরে ভ্যাট সাড়ে ৪ শতাংশ রয়েছে। একইভাবে জমি রেজিস্ট্রেশনে, স্থান ভেদে বা মৌজা রেট অনুযায়ী উৎসে কর, শতাংশ রেজিস্ট্রেশন ফি, স্ট্যাম্প শুল্ক, ২ থেকে ৩ শতাংশ স্থানীয় সরকার কর, ভ্যাট ৩ শতাংশ, এন-ফি, ই-ফি, স্ট্যাম্প হলফনামাসহ অনেক ধরনের ব্যয় রয়েছে। জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের কর বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, জমি বা ফ্ল্যাট কেনাবেচায় আমরা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চাই। গত বছরও আমরা মৌজা ভ্যালুর ওপর কর কমিয়েছি। তারপরেও প্রকৃত মূল্যে বেচাকেনা কম। নিবন্ধন ব্যয় কমাতে এনবিআর একাধিক সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করছে। আগামী বাজেটে এর প্রতিফলন হবে। সবার সঙ্গে বসে আমরা একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্তে যাব। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে মৌজা ভিত্তিতে করহার নির্ধারণ করে সরকার। তখন ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকা ও এর বাইরে অবস্থিত জমিকে মৌজা অনুযায়ী ‘ক’ থেকে ‘ঙ’ পাঁচ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। ওই বছরের ডিসেম্বরে চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ঙ শ্রেণির জমির রেজিস্ট্রেশন ফি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। আগে এসব জমির বিক্রি মূল্যের ৮ শতাংশ কর দেওয়ার বিধান ছিল। কিছু ক্ষেত্রে ন্যূনতম করের টাকার পরিমাণ কমানো হয়। যেমন- ঢাকা জেলার গুলশান, বনানী, মতিঝিল ও তেজগাঁও থানার অন্তর্গত মৌজার মধ্যে ঙ শ্রেণির ভূমির রেজিস্ট্রেশন ফি প্রতি কাঠার বিক্রয় মূল্যের ৮ শতাংশের পরিবর্তে ৬ শতাংশ অথবা পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে যেটা বেশি সেটা পরিশোধ করতে হয়। একইভাবে ঢাকার ধানমন্ডি, ওয়ারী, তেজগাঁও, শিল্পাঞ্চল থানা, শাহবাগ, রমনা পল্টন, বংশাল, নিউ মার্কেট ও কলাবাগান থানার অন্তর্গত সব মৌজার প্রতি কাঠার রেজিস্ট্রেশন ফি ৬ শতাংশ বা ৩ লাখ টাকার মধ্যে যেটা বেশি, সেই হারে পরিশোধ করতে হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার ক থেকে ঘ শ্রেণির মৌজায় ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট বা বাণিজ্যিক জায়গা নিবন্ধনে প্রতি বর্গফুটে ৮০০ টাকা অথবা দলিলে উল্লেখিত মূল্যের ৮ শতাংশের মধ্যে যেটি বেশি হয়, সেটি অতিরিক্ত কর হিসেবে দিতে হয়। আর ঙ শ্রেণির মৌজার ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ৫০০ টাকা বা দলিলে উল্লেখিত মূল্যের ৬ শতাংশের মধ্যে যেটি বেশি হয়, সেটি হবে অতিরিক্ত কর। আর অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে অতিরিক্ত কর ৩০০ টাকা অথবা দলিলে উল্লেখিত মূল্যের ৬ শতাংশের মধ্যে যেটি বেশি হয়। সম্প্রতি প্রাক-বাজেট আলোচনায় ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় কমিয়ে ৯ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয় রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। পুরোনো ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় কমিয়ে সাড়ে ৪ শতাংশ করার দাবি জানায় তারা। অন্যদিকে মৌজার ওপর কর হার কমানো ও জমির মৌজা মূল্য হালনাগাদ করার প্রস্তাব দিয়েছে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। জানতে চাইলে রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, জমি-ফ্ল্যাটে সব মিলিয়ে নিবন্ধন খরচ ১৮ থেকে ২০ শতাংশ। যার মধ্যে এনবিআর কর আছে ৭ থেকে ১১ শতাংশ। যদি কর হার কমানো হয় তাহলে ক্রেতারাই লাভবান হবে। তিনি বলেন, এত বেশি নিবন্ধন ব্যয় এই উপমহাদেশের কোথাও নেই। বিগত কয়েক বছর ধরে জমি, ফ্ল্যাট বেচাকেনায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। সারা পৃথিবীতে সেকেন্ড হ্যান্ড ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয় আছে। এটাকে সেকেন্ডারি মার্কেট বলে। আমাদের এখানে কেনার পর বিক্রি করলে সেইম ট্যাক্স। সেকেন্ডারি মার্কেট এখানে নেই বললেই চলে। গাড়ি দ্বিতীয় বার বিক্রি করলে কর অনেক কম। এজন্য গাড়ির সেকেন্ডারি মার্কেট আছে। রিহ্যাব বলছে, উচ্চ উপকরণ ও নিবন্ধন ব্যয়, ড্যাপসহ নানান কারণে ফ্ল্যাটের বিক্রি আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। ২০২০ সালের জুলাই-২০২২ সালের জুন পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৫ হাজার ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট। চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় চার হাজার ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয়েছে। জানতে চাইলে করবিদ ও এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেসের পরিচালক স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, নিবন্ধন কর কমাতে এনবিআরসহ অন্যান্য সংস্থা বৈঠক করেছে। কোনটা আগে কমবে, কোনটা পরে কমানো হবে, এটা নিয়ে আলোচনা চলছে। এখন যদি সবাই সবার জায়গা ধরে রাখে, তাহলে কোনোটাই হবে না। ধরেন, গাজীপুরে একটা জমি বিক্রিতে যদি প্রতি কাঠার কর হয় ৮ লাখ টাকা। হয়তো জমিটি বিক্রি হচ্ছে ২০ লাখ টাকা। ২০ লাখ টাকায় যদি কাউকে আট লাখ টাকা দিতে বলেন, সে জীবনে কোনোদিনই আগ্রহী হবেন না। এখানে মাত্র ২ শতাংশ কর হলেই যথেষ্ট। এনবিআরের হাতে আছে কর ও ভ্যাট। এনবিআরের কর আছে ৭ শতাংশ। এর সঙ্গে স্ট্যাম্প চার্জ, সিটি করপোরেশনের খরচসহ অনেক খরচ আছে। সম্প্রতি কর কমানোর ইঙ্গিত দিয়ে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, আমরা ব্যাপকহারে কর কমাতে চাই। ধীরে ধীরে এটা ন্যূনতম করতে চাই, সমস্যা হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কী করবে জানি না। আমাদের কাজ আমরা করবো। কর কমানো হলে এখনকার মিথ্যা তথ্যে জমি কেনার সংস্কৃতি বন্ধ হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য