ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫ , ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
পরিবর্তন আসছে সরকারি কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনায় সবাইকে ছাতার নিচে আনতে ভিত গড়ছে ঐকমত্য কমিশন জুনে ৩২৪টি রাজনৈতিক মিথ্যা তথ্য শনাক্ত : সিজিএস অন্তর্বর্তী সরকারের বিদায়ের সময় এসেছে-দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য গাজীপুরে আসন বাড়ছে কমছে বাগেরহাটে : ইসি ৩৯টি সংসদীয় আসনে আসছে পরিবর্তন : ইসি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে ১৫ সদস্যের কমিটি শান্তি মিশনে মানের দিক থেকে শীর্ষস্থানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী-মার্কিন রাষ্ট্রদূত রাশিয়ায় ভূমিকম্পের পর আঘাত হেনেছে সুনামি কুড়িগ্রামের উলিপুরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যায় ৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড জুলাইয়ের আহত-নিহতদের তালিকায় অসঙ্গতি পাওয়া গেছে-মুক্তিযোদ্ধা উপদেষ্টা সবুজায়ন স্বপ্নে খরা ডেঙ্গুতে আরও ২ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৮৬ সড়কে আলু ফেলে নওগাঁর কৃষকদের মানববন্ধন রাজধানীতে মাসে ২০টিরও বেশি হত্যা ও ৫টি ডাকাতি হচ্ছে রিয়াদের বাসা থেকে আড়াই কোটির চেক-এফডিআর নথি উদ্ধার এনসিপির সমাবেশে হামলায় আরেক মামলা আসামি সাড়ে ৫ হাজার তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে হচ্ছে কমিটি : ধর্ম উপদেষ্টা ভয়াবহতার মূলে এডিস মশার অস্বাভাবিক প্রজনন

গ্যাস সঙ্কটে ত্রাহি অবস্থায় দেশের শিল্প উৎপাদন

  • আপলোড সময় : ০৭-০৪-২০২৫ ১১:০০:১৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-০৪-২০২৫ ১২:৩২:২৯ পূর্বাহ্ন
গ্যাস সঙ্কটে ত্রাহি অবস্থায় দেশের শিল্প উৎপাদন
গ্যাস সঙ্কটে ত্রাহি অবস্থায় দেশের শিল্প উৎপাদন। মূলত জ্বালানি সঙ্কটে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে দেশে প্রকট আকার ধারণ করেছে জ্বালানি গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের ঘাটতি। যার প্রভাবে অনেক শিল্পকারখানায় উৎপাদন ইতিমধ্যে বন্ধ বা স্থগিত রয়েছে। আর চাহিদামতো চাপে গ্যাস না পেয়ে চালু থাকা কারখানাগুলোও ভুগছে সমস্যায়। বর্তমানে দেশে দৈনিক ৪১০ থেকে ৪২০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ওই চাহিদা মোতাবেক গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। যদিও ৩৫০-৩৬০ কোটি গ্যাস সরবরাহ করা গেলে পরিস্থিতি মোটামুটি সামলে নেয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে দৈনিক কমবেশি ২৭০ কোটি ঘনফুট বিতরণ করা হচ্ছে। শিল্প খাত এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, স্থানীয় গ্যাসের উৎপাদন ক্রমে কমে যাওয়ায় গত দুই বছর ধরে তুলনামূলকভাবে আমদানি করা এলএনজি বেশি সরবরাহ করা হলেও শিল্পে জ্বালানি সংকট দূর হচ্ছে না। আর দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে দৈনিক ২০০ কোটি ঘনফুটের বেশি গ্যাস উৎপাদন সম্ভব নয়। কক্সবাজারে থাকা ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকেও প্রায় অসম্ভব দৈনিক ১০৮ কোটি ঘনফুটের বেশি এলএনজি সরবরাহ করা। তাছাড়া উৎপাদক ও সরবরাহকারীদের বিল বকেয়া থাকায় সক্ষমতার ওই ৩০৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিদ্যমান অবস্থায় শিগগির আর্থিক সংকট দূর হলেও কঠিন হবে আগামী দুই বছরেও গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সমন্বয় করা। কারণ আরেকটি স্থল বা ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণ কিংবা স্থানীয় নতুন গ্যাস কূপ থেকে উৎপাদন করে গ্রাহক পর্যায়ে নেয়া সময়সাপেক্ষ।
সূত্র জানায়, দেশে অনেক বছর ধরেই গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম ধীর, মন্থর গতিতে চলছে। ফলে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দৈনিক ৪১০ কোটি ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে ৩০০ কোটি ঘনফুট গ্যাসও সরবরাহ করা যাচ্ছে না। গ্যাস সরবরাহে এই প্রকট ঘাটতির মধ্যে অবৈধ সংযোগ ও সরবরাহ বোঝার ওপর শাকের আঁটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় দেশীয় সার, গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, নিট, ইস্পাত এবং সিমেন্ট কারখানায় সার্বিক সক্ষমতার প্রায় অর্ধেকে নেমেছে উৎপাদন। কারখানা তৈরি করেও আমদানি নির্ভর হয়ে আছে সারের জোগান। ছোট এবং মাঝারি শিল্পও ধুঁকছে একই সমস্যায়। ব্যবসার আকার আপাতত ছোট করতে বাধ্য হয়েছেন বা হচ্ছেন অনেক বৃহৎ শিল্পমালিক ও উদ্যোক্তারা। এমনকি এখন কিছু ছোট-বড়-মাঝারি শিল্প উৎপাদন জ্বালানি সংকটে বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও সাভার এলাকায় চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস না পাওয়ায় শিল্প-কারখানাগুলোর উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। গ্যাসের চাপ কম থাকায় ওসব এলাকার থেমে থেমে চলছে শিল্পকারখানা। গ্যাসচালিত ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনের নিজস্ব ব্যবস্থা থাকলেও গ্যাসের সংকটে শিল্পকারখানাগুলো সেগুলোও চালাতে পারছে না। ফলে একদিকে সুযোগ নষ্ট এবং অন্যদিকে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে শিল্পোদ্যোক্তারা।
এদিকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেশের শিল্পখাতে আরো বিপর্যয় নেমে আসার শঙ্কা বাড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে শিল্পে আরো ১৫২ শতাংশ পর্যন্ত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সমপ্রতি গণশুনানি করেছে। বর্তমানে শিল্পকারখানার গ্রাহকদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩০ টাকা এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে (শিল্পে ব্যবহৃত নিজস্ব বিদ্যুৎ) ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা দিতে হয়। নতুন শিল্পের জন্য তা বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। শুনানিতে পেট্রোবাংলা জানায়, প্রতি ঘনমিটার এলএনজির বর্তমান আমদানিমূল্য ৬৫ টাকা ৭০ পয়সা পড়ছে। ভ্যাট-ট্যাক্স ও অন্যান্য চার্জ যোগ করলে তা ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা দাঁড়ায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী এলএনজি আমদানি করলে চলতি অর্থবছরে পেট্রোবাংলার ঘাটতি হবে প্রায় ১৬ হাজার ১৬১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। যদিও পেট্রোবাংলার প্রস্তাবনাকে অযৌক্তিক দাবি করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি না করতে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসির কাছে দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে সমপ্রতি বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) আয়োজিত ‘দেশের শিল্প খাতে জ্বালানিসংকট সমাধানের পথ’ শীর্ষক সেমিনারে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন জানান, জ্বালানিসংকটে সিরামিক কারখানায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে। পোশাক খাতে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ উৎপাদন কমেছে। স্টিল কারখানায় উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। গ্যাসের বিকল্প হিসেবে ডিজেল ব্যবহার এবং শ্রমিকদের বাড়তি কাজের জন্য খরচ বেড়ে গেছে। পল্লী বিদ্যুতের অধীন ক্ষুদ্র শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষুদ্র শিল্প বন্ধের পথে। অথচ গত দুই বছরে শিল্প খাতে জ্বালানির চাহিদা বাড়েনি।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স