
ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা
- আপলোড সময় : ১৬-০৪-২০২৫ ০৩:২৯:৪১ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৬-০৪-২০২৫ ০৩:২৯:৪১ অপরাহ্ন


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী মাসের মাঝামাঝি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে। তবে তফসিল কবে ঘোষণা করা হবে, আর কবে নির্বাচন হবে, তার উল্লেখ পথনকশায় নেই। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই রোডম্যাপ প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন মনে করে, ডাকসু প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীদেরও ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ আছে। সে কারণেই বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুচারুভাবে আয়োজনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ এবং অগ্রগতিসংবলিত পথনকশা প্রকাশ করা হলো। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ডাকসু নিয়ে অংশীজনদের আলোচনা শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। একই মাসে ডাকসু সংশোধিত গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করে তা ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছে পাঠানো হয়। এর আগে এ বিষয়ে ছয়টি সভা করা হয়। এই গঠনতন্ত্র এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে অনুমোদন হওয়ার অপেক্ষায় আছে।
রোডম্যাপে উল্লেখ করা হয়, গত জানুয়ারি মাসে ‘ডাকসু ইলেকশন কোড অব কনডাক্ট রিভিউ কমিটি’ করা হয়। তারা সাতটি সভা করে। এটিও চূড়ান্ত হওয়ার পর এখন তা সিন্ডিকেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
রোডম্যাপ অনুযায়ী, মে মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। একই সঙ্গে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্য রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। একই মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোটার তালিকা প্রস্তুত করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। তবে কবে এই তফসিল ঘোষণা করা হবে, সে ব্যাপারে রোডম্যাপে কিছু বলা হয়নি।
সাত বছর পর ফের আলোচনায় ডাকসু নির্বাচন : দীর্ঘ ৭ বছর পর আবারো আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। এরআগে গত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন এ সিদ্ধান্তে ঐক্যে পৌঁছেছে। তবে ছাত্রদলসহ কয়েকটি সংগঠন বলেছিল, ডাকসু নির্বাচন করার মত পরিবেশ এখনও হয়নি। দীর্ঘ ২৮ বছর অচল থাকার পর ২০১৯ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে সচল হয় ডাকসু। এরপর আর নির্বাচন হয়নি। শিক্ষার্থীরা দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই দাবি উঠেছে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ডাকসু নির্বাচনটা দ্রুততম সময়ে হওয়া দরকার। প্রাথমিকভাবে আমাদের ইচ্ছা আমরা ফেব্রুয়ারির মধ্যে যদি করে ফেলতে পারি সেটা শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনের জন্য ভালো হবে। গঠনতন্ত্র নিয়ে বেশ কিছু আপত্তি জানাচ্ছে ছাত্র সংগঠনগুলো। এমনকি এখনও নির্বাচন করার মতো পরিবেশ নেই বলে আপত্তি তুলেছিল কিছু ছাত্র সংগঠন।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাগীব নাঈম বলেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার কোনো উদ্যোগ এখনও পর্যন্ত আমরা দেখতে পাচ্ছি না। গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার উদ্যোগ এবং ছাত্র সংসদের নীতিমালার সংস্কার। এই দুইটা কাজ যদি দুই মাসের মধ্যে হয় বা তিন মাসের মধ্যে হয় তাহলে চতুর্থ মাসেই ডাকসু নির্বাচন হতে পারে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত সময় নিশ্চিত করেই তারপর ডাকসু নির্বাচন বা বাংলাদেশে অন্য কোনো ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলে সেটি কল্যাণকর হবে এবং এটি কার্যকর হবে। কিন্তু আপনি যদি অনেক দ্রুত বা তাড়াহুড়ো করে ডাকসু করেন তাহলে ডাকসুর যে প্রতিফলন, যেটি ২০১৯ সালে ব্যার্থ হয়েছে সেটি আবারও ব্যর্থ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকছে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, মিনিমাম ২ মাসের একটা প্রস্তুতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও প্রয়োজন আছে বা ছাত্রদেরও প্রয়োজন আছে। সেক্ষেত্রে আমরা এটাকে ফেব্রুয়ারি মার্চেই উপযুক্ত বলে মনে করছি। ছাত্রদের বৈধ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ