কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুক হামলার জবাব দিতে দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার নিজ বাসভবনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহানসহ তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন মোদি। প্রতিবেদন মতে, বৈঠকে মোদি স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌসেনারা ‘যখন খুশি, যেখানে খুশি’ পহেলগামে হামলার বদলা নিতে পারে। কোথায়-কীভাবে হামলা চালানো হবে, কীভাবে পরিকল্পনা করা হবে- সেই সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো বাহিনীর হাত-পা বেঁধে রাখা হবে না। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে মোদি তিন বাহিনীর ওপরই পূর্ণ আস্থা রাখছেন বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
সূত্র উদ্ধৃত করে পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, ভারতীয় বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং এবং ভারতীয় নৌসেনার প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশকুমার ত্রিপাঠীর সামনেই মোদি বলেছেন, আমাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে, কীভাবে হবে সেই পদক্ষেপ নেয়া হবে। টার্গেট কী হবে এবং কখন-কোথায় অ্যাকশন নেয়া হবে, তা নির্ধারণ করার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে (সশস্ত্র বাহিনীর)। সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির বার্তায় ২৬ জনকে হত্যাকারীদের (কাশ্মীরে) বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে ‘সবুজ সংকেত’ দেয়া হয়েছে। এদিকে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে ভারতীয় যুদ্ধবিমান পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ। সে সময় অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে টহলরত ছিল ভারতীয় বিমানগুলো। গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিটিভি নিউজের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত কোনো প্রমাণ না দিয়েই হামলাকারীদের সীমান্তের বাইরে যোগসূত্রের ইঙ্গিত দিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব দৃঢ়ভাবে কোনো সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে। হামলার পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। ২২ এপ্রিল পহেলগাম হামলাকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে চির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটোর মধ্যে উত্তেজনা তীব্রতর হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, পাকিস্তান তার বাহিনীকে শক্তিশালী করেছে এবং ভারতের যেকোনো অনুপ্রবেশের জন্য প্রস্তুত। নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে পিটিভি নিউজ জানিয়েছে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) চারটি রাফায়েল যুদ্ধবিমানকে অধিকৃত কাশ্মীরে ‘টহল’ দিতে দেখা গেছে। এরপর পিএএফের বিমানগুলো তাৎক্ষণিকভাবে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো দেখতে পায়। পিএএফের কঠোর পদক্ষেপের ফলে, ভারতীয় রাফায়েল জেটগুলো আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আরও জানান, পিএএফ জেটগুলো তাদের টহল দেয়ার সময় দ্রুত ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলোকে সনাক্ত করে, যার ফলে রাফায়েল জেটগুলো বিভ্রান্তি এবং তাড়াহুড়ো করে পিছু হটে। এদিকে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বুধবার সকালে বলেছেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা প্রতিবেদন’ ইঙ্গিত দেয় ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা করছে। এরপরই এমন ঘটনা ঘটল। এদিকে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তান আগে হামলা করবে না তবে ভারত আক্রমণ চালালে কঠোর জবাব দেবে। এর আগে আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের (এজেকে) দুটি পৃথক এলাকায় নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী দুটি ভারতীয় কোয়াডকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করেছে বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

মুখোমুখি পাক-ভারত
সামরিক অভিযানের সবুজ সংকেত মোদির
- আপলোড সময় : ০১-০৫-২০২৫ ১১:৫৩:৫৩ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০১-০৫-২০২৫ ১১:৫৩:৫৩ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ