ঢাকা , শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫ , ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে অর্থনীতি স্থবির হবে না-অর্থ উপদেষ্টা কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের ভিড় ঘরমুখো মানুষের ঢল শেরপুরে পাটচাষি সমাবেশ অনুষ্ঠিত বিরলে মতিউর রহমানের মডেল কৃষি বাড়ি দেখতে আসছেন অনেকে কলারোয়ায় তিন ‘স’ মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা কুড়িগ্রামে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে জীবন্ত গরু-ছাগল সিরাজগঞ্জে সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার নেত্রকোনা সীমান্ত দিয়ে ৩২ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ ঈদ উৎসবে জমজমাট ওয়ালটন ফ্রিজের বিক্রি ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৬০৫২১ জন ক্রিমিয়া রেলসেতুতে ১১০০ কেজি বিস্ফোরক দিয়ে হামলা যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান ইরানের সুদানে গৃহযুদ্ধের কারণে দেশ ছেড়েছেন ৪০ লাখ মানুষ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ৩৬ জনের মৃত্যু মার্কিন অভিনেতা জোনাথন জসকে গুলি করে হত্যা রোমান্টিক সময় কাটাচ্ছেন তাহসান-রোজা দম্পতি কাঁধে কাঁধ মেলালেন শাকিব-নিশো চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেলো তাণ্ডব ‘অপারেশন সিঁদুর’ কল্যাণ জয় পেয়েছে বেঙ্গালুরুর!
* নতুন করে এসেছে ১ লাখ ১৮ হাজার

আরাকান আর্মির নির্যাতন ফের রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা

  • আপলোড সময় : ১৯-০৫-২০২৫ ১২:২২:২৮ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-০৫-২০২৫ ১২:২২:২৮ পূর্বাহ্ন
আরাকান আর্মির নির্যাতন ফের রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা
রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির দখলে যাওয়ার পর থেকে মংডু শহরে কোনো কাজকর্ম করতে পারছি না। চিকিৎসা নেই। সবসময় আরাকান আর্মির সদস্যরা বাড়িতে হানা দেয়। বিভিন্ন অজুহাতে মারধর করে। তাই মংডু শহরে থাকতে না পেরে এক সপ্তাহ আগে পরিবারসহ বাংলাদেশে চলে এসেছি। আমার মতো অসংখ্য রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য রাখাইনের বিভিন্ন সীমান্তে অবস্থান করছে। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন মিয়ানমারের মংডু শহরে আরাকান আর্মির নির্যাতনের শিকার হয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা করিম উল্লাহ। তিনি কক্সবাজারের বালুখালি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন।
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আবারও রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা করছেন রোহিঙ্গারা। গত দেড় বছরে নতুন করে আরও এক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। অনুপ্রবেশ করতে সীমান্তে আরও অনেকে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটলে বা ঠেকানো না গেলে রোহিঙ্গা সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। এতে তারা নানামুখী চাপে পড়বেন। এমনিতেই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।
১০ দিন আগে রাখাইনের মংডু প্রামপ্রো এলাকা থেকে পালিয়ে পালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন রহিম উল্লাহ। তিনি বলেন, ?মংডু শহরে কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হলে আরাকান আর্মিকে টাকা দিতে হয়। আগে ইয়াঙ্গুন শহর থেকে মালামাল আসতো। এখন তাও বন্ধ। রাখাইনে খাদ্য সংকট। আরাকান আর্মির নির্যাতন দিন দিন বাড়ছে। মংডু প্রামপ্রো এলাকার শত শত রোহিঙ্গা বাড়িঘর ছেড়ে অনেকেই পাহাড়ে, নাইক্ষ্যংছড়ি, ঘুমধুম ও উখিয়া সীমান্তের ওপারে অবস্থান করছেন। রাখাইনে থাকতে না পেরে বাংলাদেশে চলে আসার জন্য তারা অপেক্ষা করছেন। তিনি আরও বলেন, আরাকান আর্মির নির্যাতনে কোনো যুবক গ্রামে থাকতে পারে না। যাদেরকে ধরে নিয়ে যায় তারা আর ফিরে আসে না। আরাকান আর্মি আমাদের নিয়ে খেলছে। তারা খুন করতেও বিন্দুমাত্র চিন্তা করে না।
পালিয়ে আসা হোসনে আরা বলেন, ?আমার এক সন্তানকে আরাকান আর্মি গুলি করে হত্যা করেছে। আমি কোনোরকম বাকি সন্তানদের নিয়ে টেকনাফের জাদিমুড়া ক্যাম্পে চলে এসেছি।
রোহিঙ্গাদের চাপ বাড়তে থাকায় শঙ্কা প্রকাশ করেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা চাপ যদি বাড়তে থাকে, তাহলে স্থানীয়দের জন্য আরও নানান সমস্যা সৃষ্টি হবে। অনেক রোহিঙ্গা এখন ডাকাতি, অপহরণ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ছে। ক্যাম্পের পাশে থাকা স্থানীয়দের বাড়িতে হামলা-ডাকাতি হচ্ছে।
পালংখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটলে আমরাও মনে হয় থাকতে পারবো না। কারণ হলো উখিয়া ও টেকনাফে যেসব পাহাড় ছিল, তার শত শত একর জায়গায় ক্যাম্প গড়ে উঠেছে। সেখানে রোহিঙ্গারা বসবাস করছে। নতুন করে থাকার জন্য ক্যাম্পে আর জায়গা নেই। রাখাইন সংঘাতের কারণে গত ১৩-১৪ মাসে নতুন করে এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, আগে থেকে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের চাপ সহ্য করে আমরা বসবাস করছি। আবারও যদি নতুন করে রোহিঙ্গা ঢল নামে, তাহলে আমরা কোথায় যাবো? সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা দরকার।
নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয় কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মিজানুর রহমান বলেন, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এই পর্যন্ত এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করেছেন। তারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে রয়েছেন। তবে পালিয়ে আসা নতুন এসব রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোসহ সীমান্ত এলাকায় কোস্ট গার্ড ও বিজিবির সদস্যরা সতর্ক পাহারায় রয়েছেন বলে জানান টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন।
এ বিষয়ে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. সিরাজ আমিন বলেন, আগের তুলনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের কার্যক্রমগুলো দেখভাল করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়। নতুন রোহিঙ্গারা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে থাকছেন বলেও জানান তিনি।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স