ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫ , ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
দক্ষ জনবল না থাকায় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ডিবি প্রযুক্তি বিকল হওয়ার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে : বিমান বাহিনী প্রধান বাচ্চাদের কষ্ট দেখে ঘরে থাকতে পারিনি রক্ত দিতে এসেছি বার্ন ইনস্টিটিউটের সামনে গলা কাটছে ফার্মেসি সিন্ডিকেট বিধ্বস্ত ভবনে ছুটির পোড়া চিঠি দেখে কাঁদছেন অভিভাবকরা উত্তরায় মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৩১ জন জনবসতিপূর্ণ শহরে বিমান প্রশিক্ষণ কেন, প্রশ্ন গয়েশ্বরের একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান হতে পারবেন না: আলী রীয়াজ মাইলস্টোনে অনভিপ্রেত ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু : আইএসপিআর গাড়ির অভাবে কমে গেছে পুলিশি টহল সচিবালয় এলাকায় রণক্ষেত্র এককালীন পাবে ৩০ লাখ, মাসিক ভাতা ২০ হাজার টাকা- মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা ২৪ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষাও স্থগিত ধর্ষণের প্রতিবেদন না দেয়ায় এসপিকে তলব কক্সবাজারে মা-মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ২ পঞ্চগড়ে ২৮ ভুয়া মামলা নিষ্পত্তি, মুক্তি পেলেন ৩ হাজার আসামি বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সন্তানকে স্কুল থেকে আনতে গিয়ে প্রাণ হারালো মা বয়লার পরিদর্শকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ডেমরায় জনগণের বাধায় বন্ধ করা হলো ট্রাফিক পুলিশ বক্সের নির্মাণ কাজ

ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোলট্রি খামারিরা দিশেহারা

  • আপলোড সময় : ২৩-০৫-২০২৫ ১২:১৩:২৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-০৫-২০২৫ ১২:১৩:২৫ পূর্বাহ্ন
ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোলট্রি খামারিরা দিশেহারা
ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোলট্রি খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কারণ বেশি দামে মুরগির বাচ্চা ও খাবার কিনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিরা খামার  চালাতে লোকসান গুনছে। ভোক্তার পাতে সস্তায় ডিম-মুরগি পৌঁছে দিয়ে এখন তারা নিজেরাই সংকটে পড়েছে। মূলত মুরগির খাবারের বেশি দাম এবং ডিম সংরক্ষণের সুযোগের অভাবে খামারিদের লোকসান বাড়ছে। আর হিমাগারে ডিম রাখায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় আরো বেড়েছে খামারিদের বিপদ। অথচ প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্যমূল্য না পেলে ডিমের উৎপাদন ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। বেকার হবে লাখো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। সেজন্য এখনই সরকারের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং পোলট্রি খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে দেশে ছোট-বড় প্রায় এক লাখ পোলট্রি খামার রয়েছে। তার মধ্যে ১০ শতাংশ বড় খামারি। সরাসরি ২৫ লাখসহ পরোক্ষভাবে ওই শিল্পে শ্রম দিচ্ছেন ৬০ লাখের বেশি মানুষ। আর দেশে দৈনিক চার থেকে সাড়ে চার কোটি পিস ডিম উৎপাদন হয়। তাছাড়া বছরে ১১ লাখ টন মাংস উৎপাদন হচ্ছে। শুধু ডিম-মাংস উৎপাদন নয়; বাচ্চা, খাদ্য, ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি মিলে ওই খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। কিন্তু দুই বছর ব্যবধানে খাদ্য, ওষুধ, বাচ্চা, পোলট্রি উপকরণসহ আনুষঙ্গিক সবকিছুর দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিপরীতে ডিম-মাংসের দাম কমেছে।
সূত্র জানায়, বয়লার মুরগি একটি এক কেজি ওজন করতে ১৬৫-১৭০ টাকা খরচ হলেও পাইকারিতে ১৫০-১৬০ টাকায় খামারিদের বিক্রি করতে হচ্ছে। আর এভাবে লোকসান দিয়ে খামারিরা কতদিন টিকতে পারবে। বর্তমানে মুরগি উৎপাদনের ১০ শতাংশ দেশের ১০ বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান থেকে আসে। বাকি ৯০ শতাংশের জোগান দেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। ক্ষুদ্র খামারিরা লোকসান গুনলেও করপোরেট খামারিরা মুনাফা করছে। কারণ বড় বড় কোম্পানি ডিম-মুরগির পাশাপাশি বাচ্চা, খাদ্য, ওষুধসহ সব রকম পোলট্রি উপকরণ উৎপাদন করে। তাতে তাদের ডিম ও মুরগি উৎপাদনে খরচ কম হয়। বিপরীতে ক্ষুদ্র খামারিরা করপোরেট প্রতিষ্ঠান থেকেই বাচ্চা, খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনে। আবার সংরক্ষণ ও বাজার ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণ না থাকায় ছোট খামারিরা কুলিয়ে উঠতে পারছে না। তাছাড়া বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান অফিস খুলে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের নামে ডিলারের মতো বাচ্চা, খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করছে। বাচ্চাগুলো মুরগি হয়ে উঠলে কোম্পানিগুলো বাজারদরে কিনে নিচ্ছে। তাতে লাভের বড় অংশ কোম্পানি ও ডিলারের পকেটে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র খামারিরা শুধু গ্রোয়িং চার্জ বা বাচ্চা বড় করার মজুরি পাচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, গত বছর উৎপাদন খরচ বিবেচনায় খামারি পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা নির্ধারণ করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। পরে মূল্য সমন্বয়ের কথা থাকলেও তা হয়নি। স্বাভাবিক সময়ে দিনে গড়ে ডিমের চাহিদা পাঁচ কোটি। রোজায় তা এক-তৃতীয়াংশ কমে যায়। বিগত রমজানের ২১ দিনে খামারিদের ১৫৯ থেকে ২০৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। বছরে তিন থেকে চারবার ডিম-মুরগির দর পতন হচ্ছে। তাতে অনেকে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসছে। খামারিদের সুরক্ষায় স্বল্প সুদে ঋণ নিশ্চিত করা জরুরি। সরকারিভাবে ডিম-মুরগির সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ, কোল্ডস্টোরেজে ডিম সংরক্ষণের বাধা দূর করা প্রয়োজন। তাছাড়া দর পতনের সময় প্রান্তিক খামারিদের ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতে ৮ থেকে ১৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এক বছর পর্যন্ত ডিম সংরক্ষণ করা হয়। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশেও এমন হিমাগার তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে। তা বাস্তবায়ন হলে সারাবছর একই দামে ভোক্তাকে ডিম খাওয়ানো সম্ভব হবে এবং খামারিরাও লাভবান হবে।
এদিকে দুই বছর ব্যবধানে খাদ্য, ওষুধ, বাচ্চা, পোলট্রি উপকরণসহ আনুষঙ্গিক সবকিছুর দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিপরীতে ডিম-মাংসের দাম কমেছে। ক্ষুদ্র খামারিদের এখন ২০২২ সালে ১৫-২০ টাকার লেয়ার বাচ্চা ৭০-৭৫ টাকা এবং ২০-২৫ টাকার ব্রয়লার বাচ্চা ৬৫-৭০ টাকা লাগছে। দ্বিগুণ বেড়ে সোনালি জাতের বাচ্চা ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ২৫ টাকা কেজির বেডিফিট হয়েছে ৩৫-৪০; ১৫ টাকা কেজির ভুট্টা ৩৫ টাকা, সয়াবিন ৩০ থেকে ৬০ টাকা, মিটবোন মিল ৩৫ থেকে ৭০ টাকা হয়েছে। আর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর গত বছর উৎপাদন খরচ বিবেচনায় খামারি পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা নির্ধারণ করে। পরে মূল্য সমন্বয়ের কথা থাকলেও তা হয়নি। স্বাভাবিক সময়ে দিনে গড়ে ডিমের চাহিদা পাঁচ কোটি। রোজায় তা এক-তৃতীয়াংশ কমে যায়।
অন্যদিকে এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, ফিডেই খামারিদের ব্যয় হচ্ছে ৭০ শতাংশ। তাই খাদ্য উৎপাদন খরচ কমাতে উদ্যোগ নেয়া হবে। পোলট্রি খাতের পণ্য আমদানি পণ্যে বেশি ট্যাক্স নেয়া হচ্ছে। এটি কীভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স