পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ে উৎপাদিত সুপারি জেলার চাহিদা মিটিয়ে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। এবার ফলন হয়েছে বাম্পার এবং দাম গতবছরের তুলনায় দিগুণ। তাই এখন পঞ্চগড়ের সুপারি যেনো সোনার হরিণ। এখানকার সুপারি মানে ভালো হওয়ায় জেলার গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় এর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। তাই এখান থেকে শত শত কাউন সুপারি চলে যাচ্ছে বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। পঞ্চগড়ে সুপারি বিক্রি হয় পন অথবা কাউন হিসেবে। ৮০ পিস সুপারিকে এক পোন আবার ১৬ পোন সুপারি এক কাউন ধরা হয়। পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনির হাট বাজারে দেখা যায়, এক পোন সুপারি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পাইকারি বাজারে। যা প্রতি পিস সুপারির দাম ৯ থেকে ১০ টাকা। প্রতি মৌসুমে এই জেলায় প্রায় শতকোটি টাকার সুপারি বেচাকেনা হয়।
এই এলাকায় বছরজুড়েই সুপারির ব্যবসা চলমান থাকলেও মূলত বছরের চৈত্র , বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ এবং আষাঢ়-এই চার মাস সুপারির ভরা মৌসুম। এ সময় জেলার সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের হাট বাজারে সুপারির বেচাকেনা হয়। বাঙালি ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে পান-সুপারি বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে প্রাথমিক অতিথি আপ্যায়নের অনুষঙ্গ হিসেবে থাকে পান-সুপারি। বাড়িতে মেহমান এলে কাঁসার তৈরি পানের বাটায় পান, সুপারি, তামাক জর্দা, চুন সাজিয়ে দেয়া হয় মেহমানের সামনে। পান খেতে খেতে চলে খোশগল্প। পান রশিকদের জন্য রাজশাহীর পান আর পঞ্চগড়ের সুপারির কদর রয়েছে আলাদাভাবে।
পঞ্চগড়ের মানুষের আদি ঐতিহ্য সুপারির বাগান। অনেক সুপারি বাগান মালিক আবার সুপারির গাছে পান চাষ করেন। সুপারি বাগানে আলাদা করে পরিচর্যা করতে হয় না। মাঝখানে মড়ক লেগে শত শত সুপারি বাগান ধ্বংস হলেও পঞ্চগড় জেলায় সর্বত্র এখনও সুপারির বাগান চোখে পড়ে। বাগান না হলেও সুপারির গাছ আছে। লাভজনক হওয়ায় অনেকে সুপারির বাগান করছে। এ বিষয়ে কয়েকজন বড় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর সুপারির দাম দ্বিগুণ, যারা বাণিজ্যিকভাবে সুপারির বাগান করেছেন তাদের বাগানে বাম্পার ফলন হওয়ায় বাগান মালিকরা বেশ দাম পাচ্ছেন। আর পুরো মৌসুমে এই উপজেলায় প্রায় শতকোটি টাকার সুপারি বেচাকেনা হয়ে থাকে। তবে পরিবহনসহ লেবার ও শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর তাদের লাভ অনেকটা কম হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
