ঢাকা , শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫ , ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
পিএসজিকে হারিয়ে চমক দেখালো বোতাফাগো মেসির গোলে প্রথম জয় পেলো মায়ামি এবার সান্তোস ছাড়ছেন নেইমার! হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন এমবাপে উইন্ডিজের বিপক্ষে অজি দল থেকে বাদ পড়লেন লাবুশেন তিন উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে যা বললেন বিসিবি সভাপতি অভিষেকে নাঈমের ফাইফার গলে চতুর্থ দিন শেষে বড় লিডের পথে টাইগাররা দুর্নীতির আখড়া বিআরটিএ সুন্দরবনে দস্যুতা আতঙ্কে বনজীবীরা চাঁদপুরে আবাসিক গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ শ্বশুরকে হত্যার দায়ে পুত্রবধূর যাবজ্জীবন ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়নি -আইন মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ ও বায়ুদূষণ মোকাবিলায় ৬৪ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে-আলী রীয়াজ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে আলোচনা চলছে-সালাহ উদ্দিন ‘ডিএসসিসির প্রকৌশলী ১৫০০ কোটি টাকার মালিক’ ভারতকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দেয়া বন্ধের আহ্বান নির্বাচন নিয়ে সরকারের অফিসিয়াল নির্দেশনা পায়নি সেনাবাহিনী ইরানে ইসরাইলি হামলা জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন পুতিন-শি’র নিন্দা
নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে এনসিপি কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের নেতারা

আশা-নিরাশার দোলাচলে এনসিপি

  • আপলোড সময় : ২০-০৬-২০২৫ ০৩:২২:৫৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২০-০৬-২০২৫ ০৩:২২:৫৬ অপরাহ্ন
আশা-নিরাশার দোলাচলে এনসিপি
* অডিওকল ফাঁসকে কেন্দ্র করে ডা. তাজনূভাকে ঘিরে অপপ্রচার, এনসিপির প্রতিবাদ
* এনসিপির কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ

জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতি শুরুতে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল সীমাহীন। দিন যত গড়াচ্ছে মানুষের সেই প্রত্যাশায় ক্রমেই ভাটা পড়ছে। বিশেষ করে দল গঠনের পর থেকেই এনসিপির অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা, নেতাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা, নারী কেলেঙ্কারী ও কোনো কোনো নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগসহ নানা কারণে ইমেজ সংকটে পড়েছে দলটি। একইসঙ্গে তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের ও দিন দিন আস্থা কমে আসছে। ফলে জনগনের মাঝে এখন আশা-নিরাশার দোলাচলে এনসিপি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যতটা প্রত্যাশা নিয়ে গঠন করা হয়েছে তরুণদের এ দল, ততটাই হতাশা উপহার দিয়েছে তারা। মূলত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় জড়িয়ে যাওয়ায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ উঠেছে এবং অন্য একটি ঘটনায় দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিএনপির সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। বিস্তারিত বিবরণে, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ উঠেছে, যেখানে তার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যাতে তার বিরুদ্ধে এক কেন্দ্রীয় নেত্রীর সাথে আপত্তিকর কথোপকথনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনায় দলের পক্ষ থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। একই সাথে, দলের এক নেত্রী এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন এবং এ ঘটনায় জড়িতদের নাম প্রকাশের কথাও বলেছেন। অন্যদিকে এরইমধ্যে রাজধানীর রূপনগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এনসিপি ও বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে, যেখানে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং এ ঘটনায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে।
এই দুটি ঘটনা এনসিপি দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে এবং দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। এরআগে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে এনসিপি। পরে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন দলটির নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ চেক প্রতারণার মামলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বান্দরবান জেলার প্রধান সমন্বয়কারী শহিদুর রহমান সোহেলকে ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যুগ্ম জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নুরু মিয়া এ সাজা দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, হারুনুর রশীদ নামে একজন বাদী হয়ে শহীদুর রহমান সোহেলের বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। আদালত অভিযুক্ত সোহেলের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করার পরও তিনি আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত অবমাননার দায়ে বিচারক তাকে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেন। সেই সঙ্গে চেকের সমপরিমাণ অর্থ প্রদানের নির্দেশ দেন। তবে এ বিষয়ে এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী শহিদুর রহমান সোহেল বলেন, ১১ বছর ধরে আমি একটি দোকান পরিচালনা করেছি। দোকান মালিকের সাথে আমার কথা হয়েছে সেটি সমাধানের পথে রয়েছে। মূলত ৫ আগস্টের পর আমি বিভিন্ন সংস্কার নিয়ে কথা বলায় প্রতিপক্ষ আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এগুলো করাচ্ছে। এটি আদালতে চলমান একটি প্রক্রিয়া আমি হাজির হতে না পারায় এ রায় দেয়া হয়েছে। আমি আইনি ভাবে এটি সমাধান করবো।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিরপুর অফিস যেন এক টর্চার সেল। ব্যবসায়ীকে ধরে এনে নির্যাতন করে ব্লাঙ্ক চেক ও স্টাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদমান সানজিদ ও রিফাতুল হক শাওনের বিরুদ্ধে। তার সঙ্গে আছেন শাহ আলী থানার সদস্যসচিব পারভেজসহ আট থেকে দশ জন।
ভিডিও ফুটেজ এবং বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশ সদস্যই এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ছোট ভাই পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়ান মিরপুরজুড়ে। তারা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে তোলা একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ ও বিভিন্ন দপ্তরে কর্মকর্তাদের দেখিয়ে প্রভাব বিস্তার করেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে মিরপুরে অবস্থিত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে গেলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে জানান, নাহিদ ইসলামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি দেখিয়ে তার ছোট ভাই দাবি করে বদলিসহ বিভিন্ন বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করেন তারা। ভুক্তভোগী একজন ব্যবসায়ী বলেন, আমাকে ধরে এনে ইচ্ছামতো মারছে, থাপ্পড় মারছে। তবে ভয় দেখানোর চেষ্টা শুধু বিভিন্ন দপ্তরে নয়; তাদের ত্রাসের রাজত্ব থেকে বাদ পড়ছে মিরপুরের বিভিন্ন বসতবাড়িও। কয়েকদিন আগে হামলার পাশাপাশি তারা লুটপাট চালায় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। যার বিচার চাওয়া তো দূরে থাক সে ঘটনা মনে করতেই ভয়ে আঁতকে ওঠেন ভুক্তভোগীরা। তারা বলেন, আমরা মেন্টালি অভিযোগ জানানোর পর্যায়ে নাই। আমাদের বাচ্চারা শেষ হয়ে যাবে। বাচ্চাগুলা এখনো ট্রমার কারণে ঘুমাতে পারে না। ওরা জাস্ট জানতে পারলেই আমাদের বাসার সামনে সব নিয়ে হাজির হবে। আপনারা তো দুজনের নাম দিয়েছেন। অসংখ্য লোক রয়েছে এদের সঙ্গে। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, এদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কিছুই জানেন না তিনি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি করেন নাহিদ। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। ফোনও রিসিভ করেননি মুখপাত্র উমামা ফাতিমা। দেননি ফোনে পাঠানো মেসেজের জবাবও। তাহলে নাহিদ ইসলামের সঙ্গে তোলা ছবি পুঁজি করেই কি মিরপুরে ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তুলেছেন সাদমান-শাওনরা। জানতে চাইলে তারা দাবি করেন, কারো পরিচয়ে তারা প্রভাব বিস্তার করেননি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অপরাধে হামলা ও ধরে এনে পিটিয়েছেন। তারা আওয়ামী লীগের কিছু নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য পাচার করে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিওকল ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র যুগ্ম-আহ্বায়ক ডা. তাজনূভা জাবীনকে ঘিরে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কুরুচিপূর্ণ, যৌন হয়রানিমূলক ও ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এনসিপি জানায়, এ ঘটনাকে বিচ্ছিন্নভাবে না দেখে পরিকল্পিত অপচেষ্টা হিসেবে দেখা উচিত। দলটির মতে, নারী নেতৃত্বকে হেয় করা এবং রাজনৈতিক পরিসরে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করতেই এই ধরণের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এদিকে, এনসিপির জ্যেষ্ঠ মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন ‘চাঁদাবাজ’ নেতাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসে সমালোচনায় বিদ্ধ হন। নিজ দল থেকে শোকজও করা হয় তাকে। এর আগে মোংলা সমুদ্রবন্দর ইস্যুতে জড়িয়ে সমালোচিত হন তিনি। আত্মপ্রকাশের পর এনসিপির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীর। তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক নিয়োগ ও এনসিটিবির বই ছাপার কাজে ‘কমিশন বাণিজ্য’ ও ‘হস্তক্ষেপ’ করার বড় অভিযোগ রয়েছে। তানভীরের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে দলের ভেতরে ও বাইরে বেশ আলোচনা চলছিল। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতিও দেওয়া হয়। তাকে এখনো স্থায়ী বহিষ্কার না করায় নানা মহলে এনসিপিকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনসিপির শৃঙ্খলা কমিটি তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। এরই মধ্যে গত বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে তাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। রেল ভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের (ডিজি) একান্ত সচিবের কক্ষে তদবির করার অভিযোগ ওঠে এনসিপির সংগঠক (হবিগঞ্জ) নাহিদ উদ্দিন তারেকের বিরুদ্ধে। এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। ভিডিওতে তারেকের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সিনথিয়া জাহিন আয়েশাকেও দেখা গেছে। স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবি, বর্তমান ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তারা সরাসরি এনসিপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না হলেও এনসিপি সমর্থিত হিসেবে পরিচিত। তাদের এসব অভিযোগও এনসিপিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এ তিনজনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। গত ৪ মে বকেয়া বেতনের দাবিতে জনকণ্ঠ কার্যালয়ে আন্দোলনরত একদল সাংবাদিকের ওপর হামলা করা হয়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ ওঠে এনসিপির সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশিরের বিরুদ্ধে। পরে এ ঘটনায় চিঠি দিয়ে তার কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে তার দল এনসিপি। এর আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করে তোপের মুখে পড়েছিলেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এমনকি এ নিয়ে নিজ দলেও ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন তিনি। সেই পোস্টেই এনসিপির দুই শীর্ষ নেতা সারজিস এবং হাসনাত প্রকাশ্যে দ্বিমত পোষণ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। পরে সমালোচনার মুখে অবশ্য পোস্টটি মুছে দেন নাসির।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, মানুষ এনসিপির প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কারণ, তারা প্রতিটি দলের সঙ্গে অনৈক্য সৃষ্টি করেছে। যাকে যখন দরকার কাছে টেনেছে, কাজ শেষে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। সবাইকে মাইনাস করে গণঅভ্যুত্থানের একক শক্তি হিসেবে নিজেদের আবির্ভূত করেছে। বিভিন্ন নেতাকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র এবং কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছে। আমাদের দল ভাঙার ষড়যন্ত্রের সঙ্গেও তারা জড়িত। তবে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা বড় ধরনের বিতর্কে জড়িয়েছেন, এ সংখ্যাটা খুব কম। কিছুটা ঘটেছে তা স্বীকার করেই বলছি, দেশপ্রেমিক এবং আগ্রাসনবিরোধী শক্তি হিসেবে এনসিপিকে বিতর্কিত করার জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠী বারবার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া যেসব ঘটনা ঘটছে, এনসিপি ব্যবস্থা নিচ্ছে, নিরুৎসাহিত করছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ হান্নান মাসউদ। দলীয় শৃঙ্খলা ও বিতর্ক তৈরি না করতে কঠোর হচ্ছে আমাদের দল।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. স ম আলী রেজা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা ছিল, সেহেতু তাদের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন শক্তি হিসেবে অনেকে বিবেচনা করেছে এনসিপিকে। কিন্তু যে প্রত্যাশা নিয়ে তড়িঘড়ি করে দুই মাস আগে দলটা গঠিত হয়েছিল, সে রকম দ্রুতই দলটা সম্পর্কে নানা আলোচনা, সমালোচনা, বিতর্ক, দুর্নীতির খবর চাউর হয়েছে। এর সবকিছু যেমন সত্য নয়, সবকিছু উড়িয়েও দেওয়া যাবে না। ফলে এ দল সম্পর্কে মানুষের আবেদনও কমে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে মানুষের মনে জায়গা তৈরি করে নেওয়া তাদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স