
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ১ জুলাই
- আপলোড সময় : ২৫-০৬-২০২৫ ০৪:১৭:৪৩ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৫-০৬-২০২৫ ০৪:১৭:৪৩ অপরাহ্ন


বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১ জুলাই দিন নির্ধারণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। এদিকে, শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র থেকে (স্টেড ডিফেন্স) আইনজীবী নিয়োগের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম, প্রসিকিউটর আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। এদিন শুনানিতে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম ট্রাইব্যুনালকে জানান, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালকে হাজির হতে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। তারপরও তারা ট্রাইব্যুনালে হাজির হননি। প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, এ পর্যায়ে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শুরু করা যেতে পারে। প্রসিকিউশনের বক্তব্য শুনে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি আগামী ১ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। এদিন এই মামলার কারাগারে থাকা অন্য আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ২৪ জুনের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে গত ১৭ জুন ( বাংলা ও ইংরেজি) দুটি পত্রিকায় এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চিফ প্রসিকিউটরের দাখিল করা ফরমাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) আমলে নিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে যে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি সত্ত্বেও অভিযুক্ত দুজন পলাতক রয়েছেন বা গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য আত্মগোপন করেছেন। তাই তাদের ২৪ জুন এই ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ সম্পন্ন হবে। এর আগে দুই জনকে হাজির হতে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য গত ১৬ জুন নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সে অনুযায়ী এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলায় অভিযুক্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। সেদিন ট্র্যাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এর আগে ১ জুন শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে ১ হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যার দায় শেখ হাসিনার। তার নির্দেশ, উসকানি ও প্ররোচনায় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। শেখ হাসিনার নির্দেশে আন্দোলন দমনে মরণঘাতি অস্ত্র ব্যবহার করার প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন। শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ