ঢাকা , শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ , ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ধর্ষণ-গণপিটুনিতে হত্যা বেড়েছে জুনে, কমছে না অজ্ঞাত লাশের সংখ্যা-এমএসএফ খুনের পর লাশের ওপর লাফায় ঘাতকরা দেশজুড়ে রোমহর্ষক-বীভৎস হত্যাকাণ্ডে বাড়ছে উদ্বেগ সভ্যতার ইতিহাস আর সৌন্দর্যে মোড়া বিশ্বের সেরা ৭ দুর্গ ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র অর্থ দেবে ন্যাটো: ট্রাম্প ভুল স্বীকার করে ক্ষতিপূরণ দিলে আলোচনায় বসবে ইরান পাকিস্তানে ৯ বাসযাত্রীকে অপহরণের পর গুলি করে হত্যা নতুন মোড় নিলো দিয়েগো জোতার মৃত্যু নেইমারের গোলে ফেরোভিয়ারিয়ার বিপক্ষে জয় পেলো সান্তোস শ্রীলঙ্কার জালে বাংলাদেশের গোল বন্যা তোমার অবশ্যই সেই রেকর্ডের দিকে যাওয়া উচিত ছিল : লারা রুটের ব্যাটে ভর করে লড়ছে ইংল্যান্ড ৫ বলে ৫ উইকেট নিয়ে ইতিহাসে নাম লেখালেন ক্যাম্ফার বড় হার দিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করলো টাইগাররা শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে গায়ানার সাথে জয় পেলো রংপুর ১১৫ প্রতীকের তালিকা আইন মন্ত্রণালয়ে নেই শাপলা বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ, কমেছে জিপিএ-৫ বিবিসির প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা হাসিনাপুত্র জয়ের তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক : প্রধান উপদেষ্টা

পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে বিলীনের মুখে পাবনার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট

  • আপলোড সময় : ১০-০৭-২০২৫ ১১:৫৭:৪৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-০৭-২০২৫ ১১:৫৭:৪৪ পূর্বাহ্ন
পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে বিলীনের মুখে পাবনার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট
পাবনা প্রতিনিধি পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নসহ কয়েকটি এলাকায় পদ্মা নদীতে দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙন। নদীগর্ভে বিলীনের মুখে পড়েছে উপজেলার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট। কিন্তু ভাঙনরোধ ও ঘাট রক্ষায় দেখা যায়নি তেমন উদ্যোগ। দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি সংশ্লিষ্টদের। কয়েকদিন ধরে এ ভাঙন অব্যাহত থাকলেও চলমান অতিবৃষ্টিতে উজানের পানির চাপ বাড়ায় বাড়ছে উদ্বেগ। তীব্র হচ্ছে ভাঙন পরিস্থিতি। এতে আতঙ্কে দিন কাটছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের। নদীপাড়ের বাসিন্দারা বলছেন, নদীভাঙন ঠেকাতে ও ঘাট রক্ষায় শুষ্ক মৌসুম বা বছরের অন্যান্য সময় নেওয়া হয় না তেমন উদ্যোগ। ফলে নিগৃহীতই রয়ে গেছে ফেরিঘাট। বছরজুড়েই পদ্মা নদীতে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলেও সে বিষয়ে টুকটাক পদক্ষেপের বাইরে নেওয়া হয় না ব্যবস্থা। ফলে যখন তখন দেখা দেয় ভাঙন। এছাড়া পশ্চিম পাশে বড় বড় ব্লক দিয়ে নদীর তীর রক্ষা করা হলেও পূর্বপাশের তীর রক্ষায় নেওয়া হয়নি তেমন উদ্যোগ। ফলে কয়েক বছর ধরেই অব্যাহত রয়েছে ভাঙন। তবে এবারের ভাঙন বেশি হওয়ায় আতঙ্কিত ঘাট কর্তৃপক্ষ ও নদীপাড়ের বাসিন্দারা। তারা বলছেন, এ ভাঙন অব্যাহত থাকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নদীগর্ভে যাবে তাদের বসতভিটা। হারাতে হবে মাথা গোজার শেষ ঠাঁইটুকুও। তাই ভাঙনরোধে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি তাদের। নদীপাড়ের বাসিন্দা আফরোজা বেগম বলেন, শুনি অমুক জায়গায় ব্লক বানাই রাখছে, বস্তা ভরে রাখছে। কিন্তু ফেলে না। এভাবেই প্রতিবছর পার করে। অন্যান্য বছর যাহোক, এবার ভাঙন অন্যরকম। এই ভাঙন না ঠেকালে আমাদের গ্রাম ভাঙবে। ভাঙবে ফেরিঘাটও। তাহেরসহ স্থানীয় কয়েকজন বলেন, প্রতিবছরই টুকটাক ভাঙে। কিন্তু এবারের ভাঙনের গতি ভালো না। নদীতে পানি বাড়ার কারণে ভাঙন বেশি। এভাবে চললে আমাদের বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়বে। অথচ কেউই পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাহলে এগুলো দেখবে কে? তারা বলেন, সারাটা বছর নদীর বিভিন্ন জায়গায় শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হয়। সেটির ভাগ নেওয়ার লোক আছে। কিন্তু এর জন্য এখন নদীভাঙন হচ্ছে, সেটি দেখার লোক নেই। এদিকে বিআইডব্লিউটিএর অধীনে থাকা ঘাট এলাকা দেখভালের সম্পূর্ণ দায়িত্ব বন্দর কর্তৃপক্ষের। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সম্ভব হচ্ছে না সেটিও। ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, নদী বন্দর বা ঘাটের আওতাধীন জমির সীমানা নির্ধারণ করে বিআইডব্লিউটিএকে মালিকানা দেখিয়ে ২০২৩ সালে রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে একটি অধ্যাদেশ বা গেজেট জারি করা হয়। এতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশিত ঘাট এলাকা বিআইডব্লিউটিএকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি এ পর্যন্তও বুঝিয়ে দেয়নি জেলা বা উপজেলা প্রশাসন। উল্টো পূর্বের ন্যায় ইজারা দিয়ে যাচ্ছে তারা। কিন্তু ঘাট বুঝে না পাওয়ায় ঘাট রক্ষণাবেক্ষণে তেমন ভূমিকা রাখতে পারছেন না বিআইডব্লিউটিএ বা ঘাট কর্তৃপক্ষ। ফলে এ বছরের ভাঙন রোধেও তাদের পক্ষ থেকে নেওয়া সম্ভব হয়নি তেমন পদক্ষেপ। বিআইডব্লিউটিএর নাজিরগঞ্জ ঘাট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, এবার ভাঙন বেশি। এভাবে ভাঙতে থাকলে নদীগর্ভে ঘাট বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে। সেরকম পরিস্থিতি হলে ঘাট এখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে। কিন্তু এ অবস্থাতেও আমাদের তেমন কিছুই করার নেই। কারণ চিঠি দেওয়া বা বার বার যোগাযোগ করা হলেও স্থানীয় প্রশাসন গেজেট অনুযায়ী ঘাট ও এর আওতাধীন জমি আমাদের বুঝিয়ে দেয়নি। আপত্তি জানানো সত্ত্বেও উল্টো তারা ইজারা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, এর আগে এসিল্যান্ড ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সীমানা নির্ধারণে একটি কমিটি করা হয়। গেজেট অনুযায়ী সে সীমানা নির্ধারণ করে গত মে মাসে ইউএনওকে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। কিন্তু দু’মাসেও সে রিপোর্ট ডিসি সাহেবের কাছে যায়নি। এভাবেই সবকিছু ঝুলে আছে। আমরা আমাদের ঘাট ও সংশ্লিষ্ট এলাকা দেখভাল করতে পারছি না। এদিকে এই যে ভাঙন শুরু হয়েছে সে ব্যাপারে তারা কোনো পদক্ষেপও নিচ্ছেন না। সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, একেবারেই যদি ঘাট তাদের দখলে না থাকে, তাহলে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন কীভাবে। ২০২৩ সালে গেজেট হলেও সংশ্লিষ্ট কমিটি আমাকে রিপোর্ট দিয়েছে সম্প্রতি। স্থানীয় কিছু জটিলতা রয়েছে। সেগুলো নিষ্পত্তি করে রিপোর্ট ফরোয়ার্ড বা অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদীভাঙন রোধের ব্যাপারে তিনি বলেন, তারা যেমনটি বলছেন ভাঙনের ক্ষেত্রে ততোটাও সংকট সৃষ্টি হয়নি। এরইমধ্যে ওই এলাকায় ভাঙনরোধে কিছু কিছু কাজ হয়েছে। যে জায়গাগুলোতে হয়নি বা আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলো আমরা নোট করেছি। সেগুলো নিয়ে দাপ্তরিক কাজ চলছে। এছাড়া প্রতিমুহূর্ত এগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেওয়া আছে। তেমন প্রয়োজন হলেই কাজ শুরু হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য