ঢাকা , সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫ , ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
লাল চাঁদ হত্যার বিচারে বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি- মির্জা ফখরুল শ্যামলীতে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই খুলে নিয়ে গেলো জামা-জুতাও অদৃশ্য শত্রু ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে- তারেক রহমান দেশজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ডাকসুর প্যানেল নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর লুকোচুরি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জামায়াত আমিরের উদ্বেগ চোখে অশ্রু-কণ্ঠে একরাশ হতাশা সরকারের নানা পদক্ষেপেও বিদেশী বিনিয়োগে ধস কিটের অভাবে পরীক্ষা ছাড়া লক্ষণ দেখেই চলছে চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসা সায়মা ওয়াজেদের ছুটি জবাবদিহিতার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ- প্রেস সচিব অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে সায়মা ওয়াজেদ, দাবি পলিসি ওয়াচের প্রতিবেদনে চারদিনের সফরে ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছায়া তদন্ত করছে র‌্যাব চাঁদাবাজি নয় ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে খুন হন লাল চাঁদ-পুলিশ খুনিদের পায়ে লুটিয়ে পড়েও বাঁচাতে পারেনি লাল চাঁদ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় কুপিয়ে জখম করা খতিব, থানায় মামলা পুরান ঢাকার এই হত্যাকাণ্ড জাহিলিয়াতের যুগের বর্বরতাকে হার মানিয়েছে-কাজী মামুনূর রশিদ মিটফোর্ডের ঘটনায় কিছু রাজনৈতিক দল ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে- রিজভী ফেনীর তিন নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ এক নম্বর হতে হবে-ত্রাণ উপদেষ্টা

পিআর-ই হলো ‘মাদার অব অল রিফর্ম’- চরমোনাই পীর

  • আপলোড সময় : ১৩-০৭-২০২৫ ০৬:৪২:০৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৩-০৭-২০২৫ ০৬:৪২:০৩ অপরাহ্ন
পিআর-ই হলো ‘মাদার অব অল রিফর্ম’- চরমোনাই পীর
পিআর-ই হলো ‘মাদার অব অল রিফর্ম’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, আমাদের অতীতের আত্মত্যাগ বিফলে গেছে ভুল নীতি এবং অসুস্থ রাজনীতির কারণে। জুলাই অভ্যুত্থানকেও আমরা অতীতের মতো ব্যর্থ হতে দিতে পারি না। আবু সাঈদ ও মুগ্ধরা আমাদের স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছে। আহতরা এখনো ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। তাই প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার এখনই করতে হবে। পতিত স্বৈরতন্ত্রের সাথে জড়িতদের বিচার করতে হবে। এ সময় তিনি পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে ‘মাদার অব অল রিফর্ম’ হিসেবে উল্লেখ করেন। গতকাল শনিবার ‘অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার, গণহত্যার বিচার এবং জাতীয় নির্বাচনের পদ্ধতি’ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, আরেকটা কথা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করার কোনো বিকল্প নেই। গত ২৮ জুলাইয়ের জনসমুদ্র পিআর পদ্ধতির পক্ষে গণপ্রত্যাশার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। পিআরকে ‘মাদার অব অল রিফর্ম’ আখ্যা দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় জুলাইয়ের চেতনা, আকাক্সক্ষা ও স্বপ্ন রক্ষায় পিআর-ই হলো একমাত্র সমাধান। পিআর-ই হলো ‘মাদার অব অল রিফর্ম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির জুলাই আকাক্সক্ষার ধারাবাহিকতা রক্ষায় আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে যে আকাক্সক্ষা তৈরি হয়েছে তা নিশ্চিত ও টেকসই করার একমাত্র রক্ষাকবচ হলো পিআর পদ্ধতির নির্বাচন। সংস্কারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় পরবর্তী সরকারকে বাধ্য করার জন্য পিআরই একমাত্র উপায়। এর বাইরে নৈতিক বাধ্যবাধকতা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। আমরা দেখতে পাচ্ছি জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না। আবার জুলাই সনদের আইনি মর্যাদা নিয়েও মতানৈক্য রয়েছে। ফলে এখন চাপে পড়ে সংস্কারে রাজি হলেও পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার সংস্কার বহাল রাখবে কি না সেই অনিশ্চয়তা এখনই দেখা দিয়েছে।
মুফতি রেজাউল করীম বলেন, ২০০৮ সালে ৪৯% ভোট পাওয়া সত্ত্বেও সংসদে দুই তৃতীয়াংশ আসন লাভ করে সংবিধান কাটা-ছেঁড়া করার একক কর্তৃত্ব পাওয়ার নজির আমাদের দেশে আছে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় আগামী নির্বাচনেও একই পরিস্থিতির সম্ভাবনা আছে। তাই যদি হয় তাহলে সংস্কারের সকল চেষ্টা ভেস্তে যেতে পারে। তখন একক দলের সিদ্ধান্তে ‘আইনসম্মত’ভাবেই আমাদের সংস্কার চিন্তার মৃত্যু ঘটবে। অধিকাংশ মানুষের মতামত উপেক্ষা করে সংস্কার চিন্তাকে হত্যার সুযোগ তৈরি করে দেয়ার মতো ‘আইনি বৈধতা’ এনে দিতে পারে বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির পিআরকেই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অন্যতম উপায় আখ্যায়িত করে বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয়তায় সামান্য পরিবর্তনের ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমূল বদলে যায়। বাংলাদের নির্বাচন থেকেই দৃষ্টান্ত দেখা যাক। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ৪০% ভোট পেয়ে আসন পেয়েছে মাত্র ২১%। আবার ২০০৮ সালে ৪৯% ভোট পেয়ে আসন পেয়েছে ৭৭%। অর্থাৎ মাত্র ৯% ভোট বেশি পাওয়ায় আসন বেড়েছে ৫৬%, মানে ৬ গুণের বেশি। চরমোনাই পীর বলেন, বিএনপির ক্ষেত্রেও একই চিত্র। ২০০১ এ ৪৭% ভোট পেয়ে আসন পেয়েছে ৬৮% আর ২০০৮ সালে ৩৩% ভোট পেয়ে আসন পেয়েছে ১০%। ১৪% ভোট হ্রাস পাওয়ায় তার আসন হ্রাস পেয়েছে ৫৪%। ভোটের সামান্য ব্যবধানে আসনের এমন বড় উত্থান-পতনের কারণে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভারসাম্যহীন হয়। অল্পতেই কোনো দল বিপর্যস্ত হয় আবার কোনো দল সীমাহীন ক্ষমতা পেয়ে যায়। বিদ্যমান নির্বাচনীব্যবস্থা এভাবেই রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করে তোলে। এই দুই নির্বাচনে যদি পিআর পদ্ধতি থাকতো তাহলে চিন্তা করে দেখেন, দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন হতো? সম্ভবত ২০২৪-এ আমাদের এতো রক্ত দেওয়ার মতো অবস্থাই তৈরি হতো না।
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মাদ গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ডক্টর আহমাদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচি মাওলানা ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিল, জনতা পার্টি বাংলাদেশের গোলাম সারোয়ার মিলন, ফেডারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ড. এ. আরমান, নাগরিক কোয়ালিশনের ফাহিম মাসরুর। আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এ কে এম ইউসুফ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহাম্মদ শহীদুল হক, ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ড. ফয়জুল হক, ড. শেখ মো. ইউসুফ, মো. আরিফুল ইসলাম অপু, হাবিবুর রহমান রিজু, অ্যাডভোকেট শিশির মনির প্রমুখ। 
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহকারী মহাসচিব কে এম আতিকুর রহমান, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন সেক্রেটারি জেনারেল কে এম বিল্লাল হোসেন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান মুজাহিদ প্রমুখ।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স