ঢাকা , বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫ , ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
বিশ্বকাপজয়ী আলমাদাকে দলে ভেড়াচ্ছে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ ভুটানের সাথে জয় পেলো বাংলাদেশ ৪৩ বছর বয়সে ‘দ্য হান্ড্রেডে’ অভিষেক হতে যাচ্ছে অ্যান্ডারসনের শাস্তির সম্মুখীন হলেন স্টোকসরা বড় সাকিবের প্রত্যাশা; ছোট সাকিবও হবে অলরাউন্ডার ঢাকায় পৌঁছালো পাকিস্তান দল টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ে বড় লাফ দিলো রিশাদ বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় মোট ১৪ এনবিআর কর্মকর্তা বরখাস্ত শতকোটি টাকা ব্যয়ে হচ্ছে গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর জুলাইয়ের চেতনায় একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব শেয়ারবাজারে ইসিতে ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার নথি জমা দিয়েও বাছাইয়ে ফেল এনসিপি যৌক্তিক শুল্ক প্রত্যাশা বাংলাদেশের ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার-খাদ্য উপদেষ্টা ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট চুক্তি রিভিউ হবে-অর্থ উপদেষ্টা এ বছরের শেষ নাগাদ তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে চূড়ান্ত সুখবর-পরিবেশ উপদেষ্টা পঞ্চদশ সংশোধনীতে হাসিনা ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার চেষ্টা করেছিলেন : বদিউল আলম মজুমদার নিবন্ধন চাওয়া ১৪৪ দলই প্রাথমিক বাছাইয়ে অনুত্তীর্ণ ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৩৭৫ বাক্সবন্দি মেশিন এখন চায়ের টেবিল

বৃষ্টিতে রাস্তায় চলাচলে জনদুর্ভোগ চরমে

  • আপলোড সময় : ১৫-০৭-২০২৫ ০৪:২৫:২৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-০৭-২০২৫ ০৪:২৫:২৫ অপরাহ্ন
বৃষ্টিতে রাস্তায় চলাচলে জনদুর্ভোগ চরমে
সকালটা ছিল রোদঝলমলে। কিন্তু দুপুরের আগেই ঢাকার আকাশ ছেয়ে যায় ঘন মেঘে। থেমে থেমে শুরু হয় বৃষ্টি। গরমের তীব্রতা কমলেও রাজধানীবাসীর জন্য দেখা দিয়েছে নতুন দুর্ভোগ-জলজট, যানজট আর কর্মদিবসে অচলাবস্থা। দেশজুড়ে চলমান মৌসুমি বায়ুর ফলে গত কয়েকদিন ধরে টানা মাঝারি থেকে হালকা ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির ফলে রাজধানীতে বেড়েছে যানজট ও নাগরিক ভোগান্তি। গতকাল সোমবার সকাল ৯টার পর থেকেই বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি ও মাঝারি বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেননি। কেউ কেউ আবার পুরোদিনের কাজই করতে পারেননি। বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালকসহ খেটে খাওয়া মানুষরা। ধানমন্ডি, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মালিবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় পানি জমতে শুরু করেছে। নগরবাসীর আশঙ্কা, এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে অল্প সময়ের মধ্যেই এসব এলাকার অনেক জায়গা পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে। সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্নস্থানে ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে গতকাল সোমবার সকাল থেকে অফিস, স্কুল ও কলেজসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে যাত্রাপথে পড়েছেন ভোগান্তিতে। গণপরিবহন চালকরাও বলছেন, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে যাত্রাবাড়ী অংশসহ রাজধানীর নানা পয়েন্টের সড়কের বেহাল অবস্থা সাথে রয়েছে জলাবদ্ধতা। এদিন ধানমন্ডির হকার্স মার্কেট, নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজারসহ পুরান ঢাকার বংশাল এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ী, নারিন্দা, দয়াগঞ্জ, টিকাটুলি, স্বামীবাগ ও গেন্ডারিয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা, বৃষ্টি এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. মামুন বলেন, এ এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে আছে। পানি চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। মানুষের চলা-ফেরায় ভোগান্তি সৃষ্টি হয়। ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়। এর স্থায়ী কোনো সমাধান হচ্ছে না। পুরান ঢাকার বংশাল এলাকার বাসিন্দা তৌফিক হাসান বলেন, জলাবদ্ধতা আর যানজট নগরজীবন অতিষ্ঠ লাগছে। রাজধানীর কোনো জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হলেও বংশালে জলাবদ্ধতা হবেই। কয়েক বছর ধরে জলাবদ্ধতায় আমরা নাকানিচুবানি খাচ্ছি। তবুও সিটি করপোরেশন থেকে এ জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন রিকশাচালকরা। রাস্তায় যাত্রী নেই, ভাড়া মেলে না, আয়ের পথ বন্ধ। মালিবাগ এলাকায় দোকানের ছাউনির নিচে রিকশা ফেলে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েকজন চালক। তাদের একজন হামিদ। তিনি বলেন, লোকজন বের হয় না, তাই ভাড়া পাই না। রিকশার চাকা না ঘুরলে খাওয়াও জোটে না। কয়েকদিন ধরে যা বৃষ্টি হচ্ছে, এতে না খেয়ে থাকতে হবে মনে হয়। বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল চালকরাও। একজন যাত্রী জানান, মোহাম্মদপুর থেকে মতিঝিল যাওয়ার জন্য রাইড বুক করেছিলেন। কিন্তু যানজটে আটকে শাহবাগেই নামতে হয়েছে। চালক জানান, সোমবার থেকে বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করছি। সকাল থেকে কোনো ভাড়া পাচ্ছি না। এখন শরীর খারাপ লাগছে। ধানমন্ডির ঝিগাতলার বাসিন্দা নিলয় জানান, সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি আর কখনো টানা বৃষ্টি হচ্ছে। ভিজতে ভিজতে অফিসে যেতে হয়েছে। ঠান্ডা-জ্বর হওয়ার ভয় রয়েছে। নতুন রাস্তায় যেভাবে পানি জমে, তাতে এভাবে বৃষ্টি চললে কোমর পর্যন্ত পানি উঠবে। রিকশাচালক হামিদ বলেন, বৃষ্টিতে মানুষ কম বের হয়, তাই ভাড়াও কমে যায়। রিকশা চালাতে না পারলে খাবারও জুটবে না। কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে, আর এমন চললে খুব বিপদে পড়ব। মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, সকাল থেকে যানবাহন পেতে খুব কষ্ট হয়েছে। এর মধ্যেই আবার রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট। মোহাম্মদপুর থেকে মতিঝিল যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে যাত্রা করা এক যাত্রী জানান, বৃষ্টির কারণে এত যানজট ছিল যে শাহবাগেই থেমে যেতে হয়েছে। সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেল চালক জানান, রোববার থেকে বৃষ্টিতে ভিজে রাইড করছি। আজও ভাড়া পাচ্ছি না, আর শরীরটাও খারাপ হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতি বছর এই সময় এমন সমস্যায় পড়ি। একটু বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট নদীর মতো হয়ে যায়। বাসা থেকে বের হওয়া যায় না। সিটি করপোরেশন শুধু আশ্বাস দেয়, কাজের কাজ কিছুই করে না। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপের কারণে এই বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির জানান, এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ু চাপের তারতম্য দেখা দিয়েছে। ফলে বৃষ্টিপাত কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। গরমের পর স্বস্তির বৃষ্টি হলেও রাজধানীর যাতায়াত ব্যবস্থা, সড়ক নালার দুরবস্থা, আর খেটে খাওয়া মানুষের কষ্ট সব মিলিয়ে এই বর্ষা আবারও নগরের ব্যর্থ ব্যবস্থাপনার চিত্র চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স