কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরের রামগতির জামিয়া ইসলামিয়া কলাকোপা মাদ্রাসার মোহতামিম আক্তার হোসেনকে দিনভর অবরুদ্ধ করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে মাদ্রাসার কমিটি বিলুপ্তসহ নিয়ম বহির্ভূত নতুন কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার সকালে কমলনগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ ইলিয়াছ। ওই সময় উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ সভাপতি কমলনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা মাওলানা হুমায়ুন কবির, পরিচালনা কমিটির সদস্য মো রিয়াজ। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রামগতির চরবাদাম ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মিয়া মোহাম্মদ ইউছুপ তার দলীয় লোকজন নিয়ে মাদ্রাসার মোহতামিককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক কমিটি বাতিলের কপিতে স্বাক্ষর করিয়ে নেন।
সংবাদ সম্মেলনে জামিয়া ইসলামি কলাকোপা মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওলানাল মিয়া মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, শুরু থেকে এক’শ বছরের পুরনো এ মাদ্রাসার সুনাম ছিলো। এ মাদ্রাসার ৭একর সম্পত্তি রয়েছে। মাদ্রাসার সম্পত্তি ও সীমানা নির্ধারণে কোন উদ্যোগ কেউ নেয়নি। ২০১৬ সালে তখনকার মোহতামিম মাওলানা আবদুল হান্নানে অবরুদ্ধ করে সকল সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করে এ কুচক্রী মহল। তখন এরা আওয়ামী দোসরদের একটি অংশকে হাতে নিয়ে মাদ্রাসার কমিটি পরিচালনা করে। ওই সময় ছাত্রদের বিভিন্ন আন্দোলনে এরা সুকৌশলে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আরেক দূর্নীতিবাজ কারামতিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলামা হারুনুর রশিদকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সভাপতি করে। বিভিন্ন অনিয় দুর্নীতির অভিযোগে হারুনের বিরুদ্ধে এক বছর আগে একাধিক পত্রিকায় নিউজও হয়েছে। এক বছর আগে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে এদের কবল থেকে মাদ্রাসকে পুনরুদ্ধার করে আমাকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিচালনা কমিটির সকল সদস্যদের নিয়ে মাদ্রাসা সীমানা নির্ধারণসহ বেদখল হওয়া সকল সম্পত্তি উদ্ধার কাজে হাত দেই। এতে আবারও তারা চক্রান্ত শুরু করে। হঠাৎ গত (কাল) বৃহস্পতিবার চর বাদাম ইউনিয়ন বিএনপি’র আহবায়ক মিয়া মো. ইউছুপ ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপির লোকজন এনে পেশিশক্তি ব্যবহার করে মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা আক্তার হোসেনকে দিনভর অবরুদ্ধ করে জোরপূর্বক মাদ্রাসার কমিটি বিলুপ্তির জন্য স্বাক্ষর নেয়। এবং পূর্বের কারামতিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ দুর্নীতিবাজ হারুনুর রশিদকে সভাপতি করার জন্য কমিটির কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার মোহতামিম মওলানা আখতার হোছাইন বলেন, বিএনপি নেতা মিয়া মোহাম্মদ ইউছুপ তার লোকজন নিয়ে হঠাৎ মাদ্রাসা এসে আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধমকি দেয়। এক পর্যায়ে আমি তাদের ভয়ে টয়লেটে গিয়ে আশ্রয় নেই। পরে তারা আমাকে ওখান থেকে ধরে এনে কমিটি বিলুপ্তির কাগজে স্বাক্ষর নেয়।
এ বিষয়ে কারামতিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা হারুনুর রশিদ বলেন বৃহস্পতিবার দুপুরে লোক দুইজন এসে আমাকে নিয়ে যায়। পরে মিয়া মোহাম্মদ ইউছুপ আমাকে মাদ্রাসা পরিচালনার কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেয়। এর বাহিরে আমি কিছু জানিনা।
এদিকে অভিযুক্ত চরবাদাম ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মিয়া মোহাম্মদ ইউছুপ বলেন, বর্তমান মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও মোহতামিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরাসহ এলাকার লোকজন একত্রিত হয়ে কমিটি বাতিল করে কারামতিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা হারুনুর রশিদকে দায়িত্ব দেয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
