
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরের সেঁওতি বাগানে উদ্বোধন করা হয়েছে ‘টাচিং সোলস ইন্টারন্যাশনাল (টিএসআই) রিসার্চ সেন্টার’। সমাজে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে গবেষণার মাধ্যমে নীতি-পরিকল্পনায় অবদান রাখতে এই রিসার্চ সেন্টারটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, এই যে আমরা মৌসুমী সবজি ও ফল খাই এটা মৌসুমী কেন হলো? আমাদের রোগ-বালাই মৌসুমী আবহাওয়ার সাথে সম্পৃক্ত। এক মৌসুম পরিবর্তনে আমাদের সর্দি, কাশি ও জ্বরসহ নানান রোগ হয়। এর জন্য বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফলে এসব রোগ-বালাই থেকে মুক্ত থাকা যায়। আল্লাহ প্রকৃতিতে মৃত্যু ছাড়া সব রোগের ঔষধ দিয়ে রেখেছেন, আমাদের তা গবেষণা করে বের করতে হবে। আমি আশা করি এবং দোয়া করি এই রিসার্চ সেন্টারটি পৃথিবীতে একটি অনন্য ও বৈচিত্র্যময় স্থান দখল করতে পারবে। এই রিসার্চ সেন্টারসহ আরও নতুন উদ্ভাবনী কাজে যেন নতুন প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হয়। আমাদের নীতিনির্ধারণে যদি স্থানীয় বাস্তবতা ও ডেটার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না হয়, তাহলে সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী পিছিয়ে পড়বে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টিএসআই-এর সভাপতি, ভেষজ বিজ্ঞানী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ টিপু সুলতান, আর. পিএইচ (জ.চয)। তিনি বলেন, আমরা চাই গবেষণার ফলাফল কেবল রিপোর্টে সীমাবদ্ধ না থেকে সমাজে বাস্তব পরিবর্তন আনুক। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো গবেষণাকে মাঠপর্যায়ের মানুষের জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত করা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টিএসআই-এর নির্বাহী পরিচালক মেহরাজ আক্তার মোমেন এবং রিসার্চ সেন্টারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু দার্দা সাহান। তারা গবেষণার অগ্রগতির বিষয়ে তুলে ধরেন, বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন, গ্রামীণ অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তনের অর্থনৈতিক প্রভাব এবং তরুণদের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণ নিয়ে রিসার্চ সেন্টারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান।
টিএসআই রিসার্চ সেন্টার একটি অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। এখানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের অংশগ্রহণে আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে গবেষণা পরিচালিত হবে। ইতোমধ্যে একাধিক গবেষণা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : বিক্রমপুর অঞ্চলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক অবদান, কোভিড-পরবর্তী অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ, সবুজ অর্থনীতি এবং গ্রামীণ কৃষিনির্ভর টেকসই জীবনব্যবস্থা, এই গবেষণাগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও বিশ্লেষণ ভবিষ্যতের নীতিনির্ধারণে সহায়ক হবে বলেই আশা করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রশাসন, শিক্ষাবিদ, গবেষক, তরুণ উদ্যোক্তা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল টিএসআই-এর গবেষণা ও সমাজ উন্নয়ন টিম। গবেষণা যখন সমাজের কথা বলে, তখন তা কেবল কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থাকে না বরং হয়ে ওঠে বদলের হাতিয়ার। টিএসআই রিসার্চ সেন্টার তার যাত্রা শুরু করেছে সেই বদলের স্বপ্ন নিয়েই।