
যশোর থেকে শেখ দিনু আহমেদ
যশোর সদর উপজেলার ডুমদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র উন্নয়ন খাতের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা হরিলুট হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় স্কুলের কিছু ভাঙ্গাচুরা জানালা-দরজা মেরামত করে সিংহভাগ টাকা লুটপাট করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে জানা গেছে, ক্ষুদ্র মেরামত খাতে বরাদ্দ হয় ২ লাখ টাকা। সেখানে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার কাজ করে বাকি অর্থ প্রধান শিক্ষকসহ ম্যানেজিং কমিটি ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষকসহ এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ডুমদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুক‚লে ক্ষুদ্র উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। এ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সামান্য ভাঙ্গাচুরা প্রাচীর প্লাষ্টার, চুন টানা, পুরাতন ইটসহ ছোটখাটো কিছু মেরামত কাজ করে ভুয়া বিল ভাউচার দাখিল করে যশোর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ২ লাখ টাকার চেক নিয়ে টাকা উত্তোলন করে ভাগাভাগি করে নেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সাধারণ শিক্ষক এ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে স্কুলের সাধারণ শিক্ষকসহ এলাকাবাসীর মাঝে জানাজানি হলে এ নিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকার বিশ্বস্ত একাধিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যর ভিত্তিতে গত ৮জুন সরেজমিন ঐ বিদ্যালয়ে যেয়ে দেখা গেছে, কিছু ভাঙ্গাচুরা জানালা দরজা মেরামত ও সামান্য কিছু রং করণের কাজ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন ও সাবেক সভাপতি কাজল পরস্পর যোগসাজশে এই বরাদ্দকৃত অর্থ লুটপাট করেছেন বলে সূত্রগুলো দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়গুলি অস্বীকার করেন। ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি কাজল জানান, ক্ষুদ্র উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২ লাখ টাকা আসে। সামান্য কিছু মেরামত কাজ করার পর যে টাকা বেঁচে ছিলো সেই টাকা সব আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে দিয়ে এসেছি। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক ভ‚য়া বিল ভাউচার বানিয়ে ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মুন্সি সোহেল রানার যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই স্কুলের বিরুদ্ধে কিছু অনিয়ম পেয়েছি। প্রতিবেদন প্রস্তুত করছি। খুব তাড়াতাড়ি এ প্রতিবেদন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা হবে। শুধু ক্ষুদ্র উন্নয়ন প্রকল্পের টাকাই নয়, এর আগে যশোর সদরের ২৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সিøপ ফান্ডের টাকা হরিলুট হয়েছে। আর এখন ক্ষুদ্র উন্নয়ন প্রকল্পের নামে সদরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে এভাবে চলছে লুটপাট। অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, প্রায় সব স্কুলের চিত্রই একই রকম। সামান্য কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করে পুরো প্রকল্পের টাকাই হরিলুট করা হচ্ছে। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত হলে প্রাথমিক শিক্ষা সেক্টরে কি পরিমাণ দুর্নীতি হচ্ছে, তার প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে আসবে বলে সচেতন মহল অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এব্যাপারে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাহবুবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়টি শুনলাম, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।