রাস্তায় যানজট, জলজট ও ভোগান্তিতে এলাবাসী

তুরাগের রাস্তাঘাটের বেহালদশা

আপলোড সময় : ০৪-০৮-২০২৫ ০১:৩৮:৩৬ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৪-০৮-২০২৫ ০১:৩৮:৩৬ অপরাহ্ন
তুরাগ প্রতিনিধি রাজধানীর তুরাগে রাস্তাঘাটের বেহালদশা ও খানাখন্দে ভরা। সড়কের অধিকাংশ রাস্তাঘাট ভাঙাচূড়া এবং বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো সড়ক যানচলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যার ফলে রাস্তায় যানজট, জলজট ও নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে তুরাগবাসি। সরেজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর সর্ব উত্তরের থানার নাম তুরাগ। এটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি’র) ৫২, ৫৩, ৫৪ ও ৫১ নং (অংশিক) ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। দিনকে দিন এই সব এলাকায় যেমনি ভাবে মানুষের বসবাস বাড়ছে। ঠিক তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পরিবহনের সংখ্যাও। তুরাগ থানা এলাকাটি জনবহুল এলাকায় পরিণত হচ্ছে। এখানে লাখ লাখ মানুষের বসবাস। এই অঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে একটি পুলিশ ফাঁড়ি (বাউনিয়া) ও একটি প্রশাসনিক তুরাগ থানা ভবন। ইতিপূর্বে ফাঁড়িটি ছিল ধউর এলাকায়। তখন নাম ছিল ধউর পুলিশ ফাঁড়ি। এটি এখন অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। এক সময় এই এলাকাটি হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন ছিল। তৎকালীন এ অঞ্চলটি ঢাকা-০৫ ও ১১ আসনের অধিনে ছিল। বর্তমানে এটি ঢাকা-১৮ আসনের নির্বাচনী এলাকা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গতকাল রোববার তুরাগের চন্ডাল ভোগ, ডিয়াবাড়ি, নলভোগ, বাউনিয়া, বাদালদি, উলুদাহ ও তাফালিয়া এলাকা সরেজমিন ঘুরে এবং স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে। তুরাগ এলাকার ভুক্তভোগী বাসিন্দাররা জানান, তুরাগ থানা এলাকাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘনবসতিপূর্ণ ও জনবহুল এলাকা। এখানে কয়েক লাখ মানুষের বসবাস। বর্তমানে তুরাগের ডিয়াবাড়ি, তারারটেক, নলভোগ, চন্ডাল ভোগ, রানাভোলা, ফুলবাড়িয়া, নয়ানগর, ধরঙ্গারটেক, বামনারটেক, শুক্র ভাঙা, পাকুরিয়া, দলিপাড়া, খানটেক, বাউনিয়া, বাদালদিসহ তুরাগের ছোট বড় ৩৩টি গ্রামের মধ্যে অধিকাংশ এলাকার রাস্তাঘাট ভাঙাচূড়া ও খানাখন্দে ভরা। এসব রাস্তায় রিক্সা, অটোরিকশা, সিএনজি, টমটম, নছিমন, করিমন, লেগুনা দিয়ে চলাচল করাটা অত্যন্ত বিপদজনক। অনেক সময় যানবাহন উল্টে গিয়ে যাত্রীদের হাত-পা ভেঙে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বলতে গেলে রাস্তা ঘাটের বালাই নেই, হ-য-ব-র-ল অবস্থা। মূষলধারে বৃষ্টি হলে নিচু এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে অনেক বস্তি-বসতবাড়িতে পানিতে একাকার হয়ে যায়। ফলে ওই সব এলাকার সাধারণ মানুষের দুঃখ কষ্টের সীমা থাকে না। কোনো কোনা সময় মানুষকে অনেকটাই বাধ্য হয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। জানা গেছে, গত দু’দিনের বৃষ্টিতে রাজধানীর তুরাগের রাস্তাঘাটগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে এলাকার অলিগলি কাঁদাপানিতে পরিণত হয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলাফেরা করছেন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় লোকজন ও বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তুরাগের ৫২ ও ৫৩নং ওয়ার্ডের রাস্তাগুলোর সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় এলাকার রাস্তাঘাটে চলাচল করাই দায় হয়ে পড়েছে। অনেক এলাকায় ভিতরের শাখা রাস্তা গুলো ভাঙ্গাচূড়া ও সরু রাস্তা আছে। এসব রাস্তায় চলতে আমাদের যে কষ্ট হয় এটা কাকে বলব? যারা আগে ক্ষমতায় ছিল, যারা ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিল, তারা এলাকার রাস্তাঘাট সঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে কোনো ভূমিকাই রাখেননি। শুধু মাত্র জোড়াতালি দিয়ে রাতারাতি লোক দেখানো কাজ শেষ করেছে। তুরাগের অনেক রাস্তাগুলোতে সংস্কার কাজ করা হলেও অজানা কারণে অসংখ্য রাস্তার সংস্কার কাজ দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। অনেক রাস্তার উন্নয়ন কিংবা মেরামত এবং সংস্কারের টেন্ডার ও হয়ে আছে। এসব থেকে তুরাগবাসি অনেকটাই বঞ্চিত রয়ে গেছে। অনেক এলাকায় রাস্তা আছে ড্রেন নেই, কোথাও কোথাও ড্রেন আছে তো রাস্তা নেই। আবার অনেক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা-ড্রেন কিছুই নাই। ভাঙা রাস্তা, জলাবদ্ধতা এবং কাঁদাপানি আমাদের নিত্য দিনের সমস্যা। অপরদিকে তুরাগের বেরিবাঁধ আব্দুল্লাহপুর টু মিরপুর আশুলিয়া সড়কে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকা সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ধউর বেরিবাঁধ হয়ে আব্দুল্লাহপুর প্রবেশের আগেই হোয়াইট প্যালেস হোটেলের সামনের সড়কটি বেশ ভাঙ্গাচূড়া। আব্দুল্লাহপুর মাছের বাজার ও তাসিন পাম্পের গ্যাসের দীর্ঘ লাইনের যানজট প্রায় নিত্যদিনের। রাস্তাঘাটে খানাখন্দের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা, নষ্ট হচ্ছে যানবাহন, যাত্রীসহ সাধারণ মানুষের মূল্যবান জিনিসপত্র। এটি ঢাকাগামী পরিবহন চলাচলের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থল উত্তরার আব্দুল্লাহপুর। রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে রাস্তায় তীব্র যানজট লেগেই থাকে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওই সড়কে পকেটমার ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়েছে। এবিষয়ে আব্দুল্লাহপুর ট্রাফিক পুলিশের টিআই মো. ইউনুস সাংবাদিকদের জানান, সড়ক ও জনপদ বিভাগের লোকজনকে ইতোমধ্যে একাধিকবার জানানো হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে তারা এখনও পর্যন্ত কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এছাড়া আমরা বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করেছি। এটি তাদের কাজ, আশা করি তারাই ব্যবস্থা নিবেন। এবিষয়ে বক্তব্য নিতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি’র) ৫৩, ৫৪, ৫২ ও ৫১ নং স্থানীয় একাধিক ওয়ার্ড কাউন্সিলের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে তুরাগে দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু ও সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নিতে বর্তমান সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোরদাবি জানিয়েছেন তুরাগের সর্বস্তরের জনগণ।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net