
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোতাকাব্বির আহমেদকে প্রশাসক নিয়োগের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আয়নুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলাটি পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী সপ্তাহে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে, গত সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক আদেশে (স্মারক নম্বর ২৬.০০.০০০০.১৫৭.৩৩.০১৫.৯০ (অংশ-৩)-৭২) আটাবের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে উপসচিব মোতাকাব্বির আহমেদকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করেন বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য। রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করে জানতে চান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উক্ত আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না।
আদালত আরো বলেন, মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রিট আবেদনের বিষয়বস্তু ব্যাহত করতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিরত থাকতে হবে। রিট আবেদনে বলা হয়, আটাব একটি নিবন্ধিত পেশাজীবী সংগঠন এবং সংবিধিবদ্ধ পদ্ধতিতে পরিচালিত নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদকে কোনো বিচারিক তদন্ত বা সংগঠনের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া ছাড়া সরিয়ে দেওয়া নিয়ম বহির্ভূত ও আইনের পরিপন্থী।
এদিকে, সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করায় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘সঠিক সময়ে নেওয়া একটি বিচক্ষণ পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে স্বাগত জানিয়েছে আটাবের সাধারণ সদস্যরা। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় এই সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও পরে একটি আনন্দ র্যালির আয়োজন করে আটাবের সাধারণ সদস্যরা। র্যালিটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল মোড় ঘুরে আবার বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আটাব সভাপতি আরিফ ও মহাসচিব আসফিয়ার জান্নাত সালেহ দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভোট, আর্থিক জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সংগঠনটিকে ‘ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে’ পরিচালনা করে আসছিলেন। তারা স্বৈরাচারি সরকারের ক্ষমতাবানদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করে সাধারণ ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ট্রাভেল ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম রতনসহ শতাধিক ট্রাভেল এজেন্সির মালিক। তাদের সবার একটাই দাবি-অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর ট্রাভেল শিল্পকে জিম্মি করে আর্থিক দুর্নীতিতে লিপ্ত না হতে পারে।