
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৭ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ বেলা ১১টার পর থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। মাঝখানে কিছুক্ষণ বিরতি দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে নিজেদের জবানবন্দি তুলে ধরেন দুজন সাক্ষী। এর মধ্যে একজন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী রিনা মুরমু ও আরেকজন এনটিভির রংপুর করেসপন্ডেন্ট একেএম মঈনুল হক। জবানবন্দিতে গত বছরের ১৬ জুলাই আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের আগে ও পরের ঘটনা বর্ণনা করেন তারা। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাদের জেরা করেন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। সাংবাদিক মঈনুল হককে জেরার সময় আমির হোসেন বলেন, আবু সাঈদ হত্যার ভিডিও ফুটেজটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বানানো হয়েছে। জবাবে এটি সত্য নয় বলে জানান সাক্ষী। এ মামলায় এখন পর্যন্ত পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন পাঁচজন। এর আগে, গত সোমবার এ মামলায় দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ওই দিন সাক্ষী দেন পঙ্গু হওয়া শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও চোখ হারানো দিনমজুর পারভীন। তারা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিজেদের করুণ অবস্থার জন্য শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছেন। গত রোববার মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ। তাকে জেরা করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশ করার শর্তে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। প্রসঙ্গত, গত ১০ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এই মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন ৩ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত। পাশাপাশি আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়।