
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া দাবানল এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া দাবানলে এরই মধ্যে ১৬ হাজার হেক্টর বনভূমি ও গ্রাম পুড়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার কর্মকর্তারা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে না এলেও,এর তীব্রতা কিছুটা কমেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। প্রায় আট দশকের মধ্যে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় দাবানলটিতে একজন নিহত হয়েছেন। ডজনখানেক বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। অড অঞ্চলের বনাঞ্চলের ওপর ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের একজন আবার অগ্নিনির্বাপক কর্মী। ড্রোন থেকে তোলা ফুটেজে দেখা গেছে, আগুন প্যারিস শহরের আয়তনের চেয়ে দেড় গুণ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ার পর,সেখানে বিস্তীর্ণ পোড়া জমি পড়ে আছে। স্পেনের সীমানা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে, ভূমধ্যসাগরের কাছাকাছি এই দাবানলটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েক মাসের খরার ফলে এলাকায় শুষ্ক উদ্ভিদ থাকায় এবং প্রবল বাতাসে এটি এমনভাবে বিস্তার লাভ করেছে। দেশটির পরিবেশমন্ত্রী অ্যাগনেস প্যানিয়ে-রুনাশে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফ্রান্স ইনফো রেডিওকে জানান, আগুন এখন আগের তুলনায় ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘রাতটা যেহেতু কিছুটা ঠান্ডা ছিল,তাই আগুন এখন ধীরে ধীরে ছড়াচ্ছে। তবে এটি ১৯৪৯ সালের পর ফ্রান্সে দেখা সবচেয়ে গুরুতর দাবানল’। তিনি আরও বলেন, ‘এই দাবানল জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। এই অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি খরার পরিণতি।’ অগ্নিনির্বাপণ অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদের একজন, ক্রিস্তোফ ম্যাগনি বিএফএম টিভিকে বলেন, তিনি আশা করছেন দিনের শেষ নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যেতে পারে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগুনের উৎস কী, তা খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের আরও গরম ও শুষ্ক গ্রীষ্মকাল অঞ্চলটিকে দাবানলের উচ্চঝুঁকিতে ফেলছে। ফ্রান্সের আবহাওয়া অফিস সতর্ক করেছে, শুক্রবার থেকে দক্ষিণ ফ্রান্সের অন্যান্য অংশে নতুন তাপপ্রবাহ শুরু হতে যাচ্ছে এবং এটি কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে।