চাঁপাইনবাবগঞ্জে আধাকিলো পাকা রাস্তা না থাকায় অচল ১০ কোটি টাকার ব্রিজ

আপলোড সময় : ০৭-০৮-২০২৫ ০৯:৪২:০৯ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৭-০৮-২০২৫ ০৯:৪২:০৯ অপরাহ্ন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে জাহিদ হাসান মাহমুদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাগলা নদীর ওপর প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি আধুনিক ব্রিজ উদ্বোধনের পর মানুষের কোনো কাজে আসছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
তারা বলছেন, পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়কের মাত্র আধা কিলোমিটার রাস্তা এখনও কাঁচা। ফলে বর্ষকালে এই সড়কটি এতোটা বেহাল হয়ে পড়ে যে, সংলগ্ন এলাকার মানুষ চার কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে।  জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পুখুরিয়া ঘাটে অবস্থিত সেতুটির সংযোগ সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য কানসাট ও শ্যামপুর, দুর্লভপুর মনাকষা এবং বিনোদপুর ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। 
স্থানীয়রা জানান, সেতুটির একপাশের সংযোগ সড়ক আগে থেকেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ-কানসাট মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হলেও অপর পাশের আধা কিলোমিটার সড়ক কাঁচা। বৃষ্টি শুরু হলেই রাস্তায় কাদা জমে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
মালবোঝাই ভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল কোনোটিই নির্বিঘ্নে চলতে পারে না। প্রায়ই মানুষ পড়ে গিয়ে হাত-পা ভাঙছে, কেউবা কাদার নিচে গড়িয়ে পড়ে আহত হচ্ছেন। বিশেষ করে সবচেয়ে বিপাকে পড়ছে স্কুলগামী শিশু ও অফিসগামীরা। একটু বৃষ্টি হলেই শিক্ষার্থীরা আর ঘর থেকে বের হতে পারে না। আর অফিসগামীদের বাধ্য হয়ে ঘুরে যেতে হয়।
তারা জানান, ব্রিজ উদ্বোধনের এক বছর পার হতে চললেও মাত্র অর্ধ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক কাঁচা হওয়ায় ভোগান্তি না কমে উল্টো বেড়েছে। অপচয় হচ্ছে টাকা ও সময়ের।
শ্যামপুর গ্রামের রবিউল আওয়াল জানান, এতো টাকা ব্যয়ে ব্রিজ হলো, কিন্তু আমরা তো সেটি ব্যবহারই করতে পারছি না। তাহলে এই উন্নয়ন কাদের জন্য? কানসাট ব্রিজ আর শিবগঞ্জ বেলি ব্রিজে সবসময় জ্যাম থাকে। বিকল্প পথ হিসেবে এই ব্রিজ নির্মাণে আমরা আশাবাদী ছিলাম।
কিন্তু এখনও আগের কষ্টই পিছু ছাড়েনি। হাজারবিঘি শ্যামপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, রিকশা, ভ্যান ও মোটরসাইকেল ছাড়া এ রাস্তায় কিছুই চলে না। তারপরও মানুষের সহায়তায় তিনটি স্থানে পার করিয়ে নিতে হয়। আর ভুল করে বিপরীত দিক থেকে কেউ ঢুকে পড়লে তাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্যের সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
সরকারি চাকরিজীবী রেজাউল করিম জানান, মাত্র আধা কিলো রাস্তার জন্য হাজারবিঘি, আজগুবি, শ্যামপুর, কানসাট, পূর্বশ্যামপুর, দুর্লভপুর, মনাকষা ও বিনোদপুর ইউনিয়নের মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আবার আমের মৌসুমে কানসাট ঘুরে আসতে গিয়ে অন্তত তিন ঘণ্টা জ্যামে বসে থাকতে হয়। অপরদিকে মনাকষা-শিবগঞ্জ রাস্তা দিয়ে ঘুরে আসতে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সরু বেইলি ব্রিজের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়।
পুকুরিয়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী হালিমা খাতুন বলেন, যেদিন সোজা এ রাস্তা দিয়ে আসার চেষ্টা করি সেদিন কোনো না কোনোভাবে পোশাক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাড়ি ফিরে যেতে হয়। কলেজ আর যাওয়া হয় না। আর কানসাট বা শিবগঞ্জ ঘুরে কলেজে যেতে দেরি হয়ে যায়। ফেনী থেকে কাজের শেষে বাড়ি ফেরা শ্রমিক আজাহার উদ্দিন বলেন, পুকুরিয়াতে বাস থেকে নামতে পারলেও কাঁচা রাস্তার জন্য ব্যাগ, বাক্স মাথায় নিয়ে তিন কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি যেতে হচ্ছে। তার প্রশ্ন, যদি হেঁটেই বাড়ি যেতে হয়, তবে এতো টাকা খরচ করে ব্রিজের কি দরকার? এ ব্যাপারে শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রকল্প অনুমোদনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহার আলী বলেন, শ্যামপুর অংশের হাজারবিঘি গ্রামকে নিয়ে কানসাটের সঙ্গে সংযুক্ত রাস্তাটি পাকা হলেও শ্যামপুর থেকে ব্রিজ পর্যন্ত অর্ধ কিলোমিটার রাস্তাটি কার্পেটিং করা সম্ভব হয়নি। ব্রিজের সঙ্গে সংযোগ সড়ক পাকা করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net