পরিকল্পিত অস্থিরতা শিক্ষা প্রশাসনে

আপলোড সময় : ১৫-০৮-২০২৫ ০১:২৫:০৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৫-০৮-২০২৫ ০১:২৫:০৭ অপরাহ্ন
* প্রশাসনে এখনো বহাল জুলাইবিরোধী ১৮ কর্মকর্তা
* এনসিটিবি ও শিক্ষা বোর্ডেও বদলি আতঙ্ক
* শিক্ষায় শিশির ঠেকাও আন্দোলন

শিক্ষা সচিব সিদ্দিক জুবায়েরকে আকস্মিক অপসারণের পর শিক্ষা প্রশাসনে তীব্র অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ অস্থিরতার মূলে রয়েছে একজন পরিচালককে ঘিরে চলমান বিরোধ। তিনি ‘জুলাইবিরোধী’ সেস্নাগান দেওয়া কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় শিক্ষা প্রশাসনের প্রভাবশালী একটি অংশ তার বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন। এই অস্থিরতা ও কোন্দলের প্রভাব পড়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডে। কর্মকর্তারা আছেন বদলি আতঙ্কে। ফলে শিক্ষায় প্রশাসনিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
শিক্ষা প্রশাসনের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, শিক্ষা প্রশাসনে বর্তমানে পাঁচটি গ্রুপ সক্রিয়। এর মধ্যে দুটি গ্রুপ বিএনপিপন্থি (সোহেল, শিশির), জামায়াত ও পতিত আওয়ামী লীগপন্থি একটি করে এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সুপারিশে আসা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালকের নেতৃত্বে এনসিপিপন্থি আরেকটি গ্রুপ। শিক্ষা সচিব অপসারিত হওয়ার পর গ্রুপগুলোর দ্বন্দ্ব তীব্র হয়েছে। মাউশির সর্বশেষ সমন্বয় সভায় আওয়ামী লীগের পক্ষে সেস্নাগান দেওয়া কর্মকর্তাদের পক্ষ নিয়ে তিনজন পরিচালক, কয়েকজন উপপরিচালক একজন পরিচালকের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। এর পরপরই দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। বিএনপিপন্থি একটি গ্রুপকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাউশির একজন পরিচালক, যিনি শিক্ষা ক্যাডার সমিতির (দখল করা) শীর্ষ নেতৃত্বে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের আলোচিত এপিএস মন্থন রঞ্জন বাড়ৈপন্থিদের আশ্রয়—প্রশ্রয় দেওয়ার জোরালো অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, জুলাইবিরোধী সেস্নাগানধারীদের রক্ষা করতে আটঘাট বেঁধে নেমেছেন—এমন আলোচনাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের ৪ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষে, জুলাই আন্দোলনবিরোধী একটি মিছিল বের করেন শিক্ষা ক্যাডারের কিছু কর্মকর্তা। ‘চলছে লড়াই চলবে, শেখ হাসিনা লড়বে’ এবং ‘শিক্ষামন্ত্রীর বাসায় হামলা কেন, খুনি খালেদা জবাব দে’—এমন নানা সেস্নাগান দেওয়া হয় সেই মিছিল থেকে। ক্যাডার কর্মকর্তা হয়েও নজিরবিহীন এই মিছিলে অংশ নেওয়ায় অর্ধশতাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার প্রক্রিয়া শুরু করেছে মাউশির মনিটরিং অ্যান্ড ইভল্যুয়েশন উইং। অভিযোগ নিষ্পত্তি সেলের (অনিক) কর্মকর্তা হিসেবে কাজটি করছেন এই উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক কাজী আবু কাইয়ুম শিশির। তিনি দুই দফায় মাউশির সাবেক ডিজি ও কয়েকজন পরিচালকসহ ৪২ জন ক্যাডার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ) ১৭ জনকে শোকজ করে, যারা ওই মিছিলে নেতৃত্ব দেন। যদিও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে শোকজের ফাইল গায়েব করার অভিযোগ ওঠে ডিআইএ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এরপর স¤প্রতি আবু কাইয়ুম শিশির মনিটরিং উইংয়ে পরিচালক হয়ে আসার পর দুই ধাপে মাউশি অধিদপ্তর ও বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মরত আরও ৩৫ জনকে চিহ্নিত করে তাদের ব্যক্তিগত শুনানি করেন এবং ভিডিও ও তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। শুধু তাই নয়, শিক্ষার বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ধরতে প্রকল্প ধরে ধরে তদন্ত করছেন, প্রকল্পগুলোর ব্যাংক হিসাব তলব করেছেন। বিগত সময়ে কেনাকাটাসহ সব ধরনের তথ্য যাচাই শুরু করার পরপরই তার বিরুদ্ধে সবাই একাট্টা হয়ে যায়। তার কার্যক্রম থামিয়ে দিতে একজোট হয়েছেন মাউশির সাতজন পরিচালক, বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালকসহ বিভিন্ন স্তরের কিছু কর্মকর্তা। ‘শিশির ঠেকাও’ কর্মসূচির নেতৃত্বে দিচ্ছেন বিসিএস শিক্ষা সমিতির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। এই নেতার বিরুদ্ধে কর্মচারী নেতা (আওয়ামী লীগপন্থি) অহিদুর রহমান অহিদের মাধ্যমে কর্মচারী বদলি বাণিজ্য, আঞ্চলিক অফিসগুলো থেকে এমপিওর মাসোয়ারা, স্কুল শিক্ষক বদলিতে ব্যাপক ঘুষ—বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। সব আঞ্চলিক অফিসে তার লোক বসাতে প্রশাসন শাখা ও মহাপরিচালককে চাপ দিচ্ছেন এমন অভিযোগও রয়েছে। তার দপ্তরের বাইরেও শিক্ষা খাতের সব সেক্টরে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন এবং সেই কাজে তিনি আওয়ামী লীগপন্থিদের সঙ্গী করেছেন। তার এসব কর্তৃত্ববাদী সিদ্ধান্তকে পেছন থেকে সমর্থন দিচ্ছেন সাবেক দুই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সুবিধাভোগী একজন পরিচালক, যিনি সাবেক ওই দুই মন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশ সফরে করেছেন একাধিকবার। মাউশির পঞ্চম তলায় বসা এই পরিচালক তার অধীনে থাকা বিভিন্ন প্রকল্পে ‘শিশির ঠেকাও’ কর্মসূচির জন্য আর্থিক ফান্ড গঠন করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। জানতে চাইলে দুজন পরিচালক বলেন, আমরা ‘শিশির ঠেকাও’ কর্মসূচিতে কোনোভাবে যুক্ত নই। সমন্বয় সভায় শিশির যেসব কার্যক্রম করছেন, তা তিনি করতে পারেন কি না, এগুলো আলোচনা হয়েছে। সবার মতামত ছিল—শিশির যা করবেন, তা যেন মহাপরিচালককে জানিয়ে করেন। আমরাও সেই আলোচনায় অংশ নিয়েছি। আর কর্মচারী নেতা অহিদুর রহমান অহিদ কর্মচারী বদলিতে জড়িত থাকার সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে মনিটরিং অ্যান্ড ইভল্যুয়েশন উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক কাজী আবু কাইয়ুম শিশির বলেন, শিক্ষা প্রশাসনে বহাল আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ও সেস্নাগানধারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে তিনি নিজের মতাদর্শের লোকদের দ্বারা তোপের মুখে পড়েছেন। অনেকেই তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির কাছে আবেদন করেছেন। তবে মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান বলেন, মনিটরিং উইংয়ের পরিচালক আগে যিনি আসতেন, তিনি অভিযোগ নিষ্পত্তি সেলের কর্মকর্তা হতেন। স¤প্রতি তিনি যোগদান করার পর তার কিছু কর্মকাণ্ড নিয়ে সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। তাকে নিয়ে কোনো গ্রুপিং হচ্ছে—এমন তথ্য আমার জানা নেই। তাকে হুমকি দেওয়ার বিষয়েও তিনি অবগত নন বলে জানান।
৫ আগস্টের পর ১৪তম বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা ও বিএনপিপন্থি কাইয়ুম শিশিরকে ডিআইএ পরিচালক করে সিঙ্গেল অর্ডার হয়। কিন্তু অপসারিত শিক্ষা সচিব সিদ্দিক জুবায়েরের রোষানলে পড়লে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টা আসার পর তার সুপারিশে গত দুই মাস আগে মনিটরিং উইংয়ের পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন শিশির। এরপর থেকেই শিক্ষা প্রশাসনে শৃঙ্খলা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য গঠিত অভিযোগ নিষ্পত্তি সেলের কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন প্রকল্প ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। বিশেষ করে শিক্ষাভবনে জুলাইবিরোধী সেস্নাগানধারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির উদ্যোগ নেওয়ার পরই বিএনপিপন্থি একটি অংশ এবং জামায়াত ও আওয়ামী লীগপন্থি কর্মকর্তারা একজোট হয়ে তার বিরুদ্ধে মাঠে নামেন। সর্বশেষ ২২ জুলাই মাউশির সমন্বয় সভায় প্রায় সব কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন এবং মহাপরিচালককে তার সব কার্যক্রম বন্ধ করতে চাপ দেন। একপর্যায়ে সাতজনের সমন্বয়ে একটি পর্যালোচনা টিম গঠন করে শিশিরের নেওয়া উদ্যোগ আইনসিদ্ধ হচ্ছে কি না, তা যাচাই করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই টিমের প্রধান করা হয় এক পরিচালককে, যার বিরুদ্ধে জুলাইবিরোধী মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, নওফেলের সঙ্গে বিদেশ ভ্রমণের জন্য শোকজ করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান বলেন, তিনি (শিশির) যে কার্যক্রমগুলো করছেন, তা বিধিসম্মত হচ্ছে কি না, তার আইনগত দিক দেখার জন্য এই টিম গঠন করা হয়েছে। এটাকে তদন্ত কমিটি বলা যাবে না বা ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই।
জানা গেছে, গত বছর ৪ আগস্ট হাসিনা সরকারের পক্ষে জুলাইবিরোধী সেস্নাগান দেওয়া ১৮ কর্মকর্তা এখনো শিক্ষা প্রশাসন ও বিভিন্ন প্রকল্পে বহাল রয়েছেন। মনিটরিং উইংয়ে দুই দফা শুনানি, অভিযুক্তদের বক্তব্য এবং সেদিনের মিছিলের ভিডিও পর্যালোচনা করা হয়েছে। পরে মাউশির সিসিটিভি ফুটেজ মুছে ফেলা হলেও সেটি উদ্ধার করে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের পর দেখা যায়, মিছিলে অংশগ্রহণের তথ্য—প্রমাণ মিলেছে—এমন কর্মকর্তার সংখ্যা ৩৫ জনের বেশি। তাদের মধ্যে এই ১৮ জন এখনো অধিদফতর ও বিভিন্ন প্রকল্পে বহাল রয়েছেন। তাদের দ্রুত সরিয়ে দিতে স¤প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তাদের তালিকা এবং মিছিলে তাদের ভূমিকার বিস্তারিত বিবরণসহ একটি সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন—প্রশিক্ষণ শাখার আবুল হোসেন কায়েস, ইউনূফ রহমান, মোশারফ হোসাইন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার গবেষণা কর্মকর্তা সুমন বিশ্বাস, রিয়াদ আরাফাত, সেসিপের কাওসার আহমেদ, ১০টি স্কুল স্থাপন প্রকল্পের হাফিজুর রহমান সিকদার, স্ট্রেংদেনিং রিডিং প্রকল্পের আব্দুল করিম সরদার ও মাহাবুবা ইয়াসমিন, এসইডিপির প্রকল্পের আমিনুল ইসলাম, লেইস প্রকল্পের উপপরিচালক নাসির উদ্দিন, আজিজুল হক, দিবস চাকমা, লেইস প্রকল্পের মেহেদী হাসান, অর্থ ও ক্রয় বিভাগের বাজেট শাখার সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং সরকারি মাধ্যমিক স্কুল উন্নয়ন প্রকল্পের মাহফুজ আল মাহমুদ। অন্যদের বিভিন্ন কলেজে বদলি করা হলেও আপাতত তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার সুপারিশ করবে সংশ্লিষ্ট উইং। তবে এ ব্যাপারে কাইয়ুম শিশির বলেন, ফরাসি বিপ্লবের পর বিপ্লববিরোধীদের অপরাধের ধরন অনুযায়ী শাস্তি হয়েছিল, এমনকি অনেকের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসিও হয়। অথচ বাংলাদেশে একটি বিপ্লব হলো ক্যাডার কর্মকর্তা হয়ে তারা বিপ্লববিরোধী সেস্নাগান দিল, তাদের শাস্তি তো দূরের কথা, একটি শোকজ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। অপসারিত সচিব (সিদ্দিক জুবায়ের) তাদের আগলে রেখেছিলেন। দ্রুত এসব কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করার জন্য তালিকা পাঠিয়েছি। তারাসহ স্লোগানধারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিপ্লববিরোধী মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার সুপারিশ করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সেস্নাগানধারী ১১ জন কর্মকর্তাকে মাউশি ও বিভিন্ন প্রকল্প থেকে সরিয়ে দিতে ফাইল উঠেছে। শিক্ষা উপদেষ্টার দফতরে শেষ মুহূর্তে যাচাই—বাছাই চলছে। আগামী সপ্তাহে ১০—১২ জনের বদলি অর্ডার হতে পারে, এমন তথ্য জানিয়েছে সূত্র।
শিক্ষা সচিব অপসারণের পর বদলি আতঙ্ক বিরাজ করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং শিক্ষাবোর্ডগুলোতে। এরই মধ্যে পাঠ্যপুস্তক শাখা বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমানকে গোপালগঞ্জ বদলি করা হয়েছে। বদলির তালিকায় আছেন শিক্ষা সচিবের ক্যাশিয়ার খ্যাত সদস্য অধ্যাপক ড. রিয়াদ চৌধুরীসহ তার উইংয়ের আরও তিনজন কর্মকর্তা। পলাতক সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের সুপারিশে আসা চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরীকে সরানো হতে পারে। বিগত সরকারের সময় তিনি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে লিয়েনে ছিলেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ করা এই রবিউল চৌধুরী আওয়ামী লীগের সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের ভাই রব্বানী জব্বারকে ১ কোটির বেশি বইয়ের কাজ দেওয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন নীরবে। এরই মধ্যে প্রাথমিকে প্রথম—তৃতীয় শ্রেণিতে সাতটি লটের কাজ দেওয়া হয়েছে। রব্বানী জব্বারসহ আওয়ামী লীগপন্থি কিছু প্রেস মালিককে নিয়ে তার দপ্তর ও একাধিক জায়গায় গোপন বৈঠক করেছেন, এমন অভিযোগ উঠেছে। এরপরই চেয়ারম্যান ও সদস্য রিয়াদ চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানায় ছাত্রদল। জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, রব্বানী জব্বারের সঙ্গে সমিতির সভাপতি হিসেবে আমার কাছে আসতেন। তাকে নিয়ে আলাদা গোপন কোনো বৈঠক করিনি।
এদিকে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে কয়েকজন কর্মকর্তা আছেন বদলি আতঙ্কে। বিশেষ করে বিগত আওয়ামী লীগের সময় সাবেক মহাপরিচালকের সঙ্গে কাজ করা এক কর্মকর্তা সচিবের হাত ধরে বোর্ডে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন নিয়ে এসেছেন। তার বিষয়ে খেঁাজখবর নিচ্ছে মন্ত্রণালয়। আতঙ্কে আছেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের (ইইডি) একজন উপপরিচালক, যিনি বিগত সরকারের সময় শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোতে (ব্যানবেইজ) গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি তাকে দিয়ে মূলত ওই দফতরের দুর্নীতি করাতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ৫ আগস্টের পর মুন্সীগঞ্জের এক কলেজে বদলি করা হলেও তিন মাসের মধ্যে আরও ভালো পোস্টিং নিয়ে শিক্ষার সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দফতর ইইডিতে আসেন তিনি। এখন নিজেকে ছাত্রদলের সাবেক কর্মী দাবি করেছেন।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net